বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ফরচুন বরিশাল দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়কের দিকে বঙ্গবন্ধু কাপেও সবার চোখ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সর্বশেষ প্রেসিডেন্টস ওয়ানডে কাপের তিন দলের আসরে ফাইনালের আগেই ছিটকে গিয়েছিল তামিমের দল। আর বঙ্গবন্ধু কাপে নিজের দল নিয়ে সন্তুষ্ট নন তামিম। গতকাল মিরপুরে আনুষ্ঠানিক অনুশীলনে এসে তেমনটাই জানিয়েছেন বরিশাল দলের অধিনায়ক। ড্রাফট থেকে ক্রিকেটার বাছাইয়ে দলের ভুল ছিল তা জানিয়েছেন সরাসরিই। তবে ক্রিকেট বলে কথা। তাই ভালো কিছুর আশাও করছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমরা ড্রাফটে কিছু ভুল করেছি, এটাতে কোনো সন্দেহ নাই।
আমরা অবশ্যই ড্রাফটে কিছু ভুল করেছি দেখেই এই কথাটা উঠছে। এটাও বুঝতে হবে। ক্রিকেট ইজ অ্যান আনসারটেইন গেইম। আমার দলে এমন কিছু প্লেয়ার আছে যাদের আমরা হয়তো কেউ কাউন্ট করছি না। কিন্তু তাদের সবারই দারুণ টুর্নামেন্ট কাটতে পারে। যেকোনো কিছু হতে পারে।’
বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হওয়ার পর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ হয়নি তামিমের। কারণ, করোনা মহামারির কারণে একের পর এক সিরিজ স্থগিত হয়েছে। সবশেষ ঘরোয়া আসর প্রেসিডেন্টস কাপে ফাইনালের আগে ছিটকে পড়ে তার দল। আগেও যে কবার অধিনায়কত্বের সুযোগ এসেছিল সেখানে খুব একটা সফলতা নেই। যে কারণে নেতৃত্ব তার জন্য চাপ হতে পারে এমনটাই আলোচনা-সমালোচনা। যদিও তামিম এমন কথা মানতে নারাজ। তার অভিযোগ, চাপ নিয়ে যত আলোচনা সবই সংবাদমাধ্যম বা মিডিয়ার সৃষ্টি। তামিম বলেন, ‘ অধিনায়কত্বের প্রেশার এটা আসলে আপনাদের বানানো। আমি এখনো কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলি নাই। আমি যেদিন অধিনায়কত্ব পেয়েছি ওই দিন বলেছি যে ক্যাপ্টেন্সি আপনারা জাজ করবেন ছয় মাস বা এক বছর পর। ওইটা পৃথিবীর যত বড় অথবা ছোট লিডার হোক। দুই ম্যাচ তিন ম্যাচ পর আপনারা শুরু করেন কী ক্যাপ্টেন্সি প্রেশার। একটা বাচ্চার হাঁটতে কিন্তু নয় মাস সময় লাগবে। একদিনে সে না হাঁঁটলে তো আপনি বলতে পারেন না। খেলায় আমার অধিনায়কত্ব কতটা প্রভাব ফেলছে সেটা অন্তত বিশ ম্যাচ পর জাজ করবেন। দুই তিন ম্যাচ পর সেটা করতে পারেন না।’
ব্যাট হাতে তামিমের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও হতাশাজনক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমার নিজের পারফরম্যান্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারি । অধিনায়কত্বের ব্যাপারটা বাদ দেন। আমি যদি ব্যাটসম্যান হিসেবে রান করতে পারি তাদের অবশ্যই সেটা অনুপ্রেরণা দিবে। হয়তো বা আমার টুর্নামেন্টে আলাদা আলাদা রোল প্লে করতে হবে। কারণ, আমি যেটা বললাম আপনার যদি রিসোর্স থাকে ওই রকম তাহলে আপনি অনেক রকম প্ল্যান করতে পারেন। যদি রিসোর্সটা কম থাকে তাহলে আপনার ওই রকমভাবে খেলতে হবে।’
তামিম বলেন, ‘দেখেন চেষ্টা তো থাকবে অবশ্যই ভালো খেলার। ব্যক্তিগতভাবে, দলগতভাবেও। আমরা লাকি ছিলাম যে প্রসিডেন্টস কাপ খেলতে পেরেছি। এখানে হয়তো আরও বিশ ত্রিশজন ক্রিকেটার এই বছর প্রথম কম্পিটিটিভ ক্রিকেট খেলবে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। আমি আশা করবো যে টুর্নামেন্টটা ভালো হবে। কে জিতবে হারবে এটা পরের বিষয়।’
এই টুর্নামেন্টের আগে তামিমের প্রস্তুতিটা অবশ্য দারুণ হয়েছে। সদ্য পাকিস্তান সুপার লীগে লাহোর কালান্দারসের হয়ে খেলেছেন ফাইনালসহ তিন ম্যাচ। এ নিয়ে তামিম বলেন, ‘দুটি ভিন্ন জায়গা, আলাদা খেলা। ভালো দলগুলোর সঙ্গে তিনটা ম্যাচ খেলতে পারছি। আমাদের এখানে তো খেলা হচ্ছে না। এই জিনিসটা হেল্প করবে যে আমি খেলার মধ্যেই আছি। হ্যাঁ, অবশ্যই তিনটা ম্যাচেই আমি যেভাবে শুরু করেছিলাম খুব ইতিবাচক ছিল। আমি যে প্ল্যান করে ব্যাটিং করছিলাম, সফল ছিলাম, কিন্তু অল্প সময়ের জন্য। এটাই একটা নেগেটিভ পয়েন্ট যে আমার ওই স্টার্টের পর পঞ্চাশ-ষাট রান করা উচিত ছিল অন্তত। যেটা আমি পারিনি।’
পিএসএলের প্রথম এলিমিনেটরে পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে ১০ বলে ১৮ রান করেন তামিম। দ্বিতীয় এলিমিনেটরে ২০ বলে করেন ৩০ রান। আর ফাইনালে ৩৮ বলে ৩৫ রান করে খেই হারান তামিম। হার শেষে শিরোপা খোয়ায় তার দল।