পারিবারিক বিরোধের জেরে চাঁপাই নবাবগঞ্জের আলাতুলিতে ১১ পরিবারের শিশু ও নারীসহ প্রায় ৫০ জনকে নিজ নিজ বাড়িতে সাড়ে ৩ মাস ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ সময়ের মধ্যে অবরুদ্ধ পরিবারের এক সদ্যজাত শিশু মৃত্যুবরণ করলেও নিজ এলাকার গোরস্থানে দাফন করতে দেয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে রাতের অন্ধকারে পার্শ্ববর্তী গোরস্তানে লাশ গোপনে দাফন করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল আলাতুলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোদালকাঠী এলাকার জেলেপাড়া গ্রামে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আলাতুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বারবার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগে জানা গেছে, সদর উপজেলার আলাতুলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলেপাড়া গ্রামের গাইন বংশের সঙ্গে ভাঁড় বংশের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জের ধরে সাড়ে ৩ মাস ধরে জেলেপাড়া গ্রামের, রফিকুল, সফিকুল, বাবু, জালাল উদ্দিন, সায়েদ, আরিফ, তরিকুল, মোস্তফা, এহেসান, আয়েস ও তাজিবুরসহ তার তাদের পরিবারের শিশু ও নারীসহ প্রায় ৫০ জনকে নিজ নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এলাকার প্রভাবশালী মারফত মেম্বার, আব্দুল বারী চৌকিদার ও পিয়ারুলের লোকজন। তাদের চলাচলের রাস্তায় বসানো হয়েছে পাহারা।
কেউ বাড়ি থেকে বের হলেই তাদের মারধর করা হচ্ছে। এদিকে সাড়ে ৩ মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। লুকিয়ে তারা নিত্যপণ্য সংগ্রহ করলেও অবরুদ্ধ পরিবারের উপার্জনশীলরা বেকার হয়ে বাড়ির মধ্যে একরকম বন্দি জীবন কাটাচ্ছে। এমন অবস্থায় গত অক্টোবর মাসে মেহেদীর সদ্যজাত শিশু সন্তান মারা গেলে তাকে স্থানীয় গোরস্তানে দাফন করতে না পেরে রাতের আঁধারে গোপনে পার্শ্ববর্তী গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে আব্দুল বারী চৌকিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এলাকার সালিশদারদের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এ ব্যাপারে আলাতুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অমানবিক দাবি করে বলেন, অবরুদ্ধ মানুষজনকে উদ্ধারের জন্য তিনি বারবার উদ্যোগ নিলেও প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রামে ভোটের রাজনীতি শুরু করায় বিষয়টির সুরাহা হচ্ছে না। তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি আবারো উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) কবির হোসেন জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। মানবিক কারণেই দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।