মাত্র ৬১ বছর বয়সে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছেন বাদল রায়। সাবেক এই কিংবদন্তির মরদেহ আজ সকাল ১০টায় তার প্রিয় ক্লাব মোহামেডানে আনা হবে। এরপর সোনালী অতীত ক্লাব ঘুরে নেয়া হবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে বাদল রায়ের কফিন ঢুকানো হবে না বলে জানিয়েছেন ফজলুর রহমান বাবুল। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সকলের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হবে।
১৯৭৭ সালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে বাদল রায়ের ঢাকার মাঠে যাত্রা শুরু। ক্যারিয়ারের শেষটাও এখানেই। ক্যারিয়ারে আবাহনী, ব্রাদার্সের মতো বড় ক্লাবগুলো দলে টানতে তাকে অনেক লোভনীয় প্রস্তাব দিলেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন অবলীলায়। আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ বাদল রায়ের স্মরণে বলেন, ‘বাদল আমার খুবই কাছের একজন মানুষ ছিল।
ওকে অনেকবার আবাহনীতে নেয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারিনি। মোহামেডানের প্রতি ওর ভালোবাসা ছিল অনেক।’ ১৯৮১ ও ১৯৮৬ সালে মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন বাদল রায়। ১৯৮৬-তে তিন বছরের বিরতিতে মোহামেডানের লীগ জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন দলটির নাম্বার টেন ফুটবলার। ১৯৮২ সালে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর ২৭ গোলের পেছনেও বড় অবদান ছিল বাদলের। নিজে গোল করার মতো অবস্থানে থেকেও আবাহনীর কাজী সালাউদ্দিনের ২৪ গোলের রেকর্ড ভাঙার জন্য সালাম মুর্শেদীকে দিয়ে গোল করিয়েছেন বাদল। অসুস্থ শরীরকে নিয়েও ভঙ্গুর মোহামেডানকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। ক্যাসিনো কাণ্ডের পর বাদল রায়ের প্রচেষ্টায় এক প্রকার ঘুরেও দাঁড়িয়েছিল ক্লাবটি। এমন এক সংগঠকেকে হারিয়ে কাঁদছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। বাদল রায়ের মরদেহ আজ সকালে ক্লাবে আনার কথা জানিয়েছেন ক্লাবটির স্থায়ী সদস্য ফজলুর রহমান বাবুল। তিনি বলেন, এই ক্লাবে বাদল রায়ের অনেক অবদান আছে। আমার বিশ্বাস ক্লাবের দায়িত্বশীলরা তার অবদানের প্রতিদান দেবেন। বাদল রায়ের এই মৃত্যুর পেছনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন দায়ী উল্লেখ করে বাবুল বলেন, ‘২০১৬ সালে বাফুফে সভাপতি হিসেবে সালাউদ্দিনের জয়ের পেছনে বাদল রায়ের অবদান অনেক। অথচ সভাপতি হওয়ার পর বাদল রায়ের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পদ কেড়ে নেন সালাউদ্দিন। সবশেষ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে ফুটবলকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছিলেন বাদল। কিন্তু তাকে জোর করে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। তারপরেও নির্বাচনী ভেন্যুতে উপস্থিত না থেকেও বাদল ৪০ ভোট পান। হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় নির্বাচন হলে বাদলই হতো বাফুফে’র সভাপতি।’