× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রুম থেকে বেরিয়ে একটি বাথরুমে ঢুকে কান্নায় ভেঙে পড়ি

এক্সক্লুসিভ

কাজল ঘোষ
২৪ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার

প্রায়ই শিশুদের নিয়ে এমন অভিযোগ আসে, যেসব ঘটনায় অভিযোগ গঠন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ, বিশেষ করে স্বেচ্ছায় এমন সাক্ষ্য ও প্রমাণের অভাবে। এই মামলাগুলো আমাকে খুব বেশি কষ্ট দিয়েছে। আমি কখনই ভুলবো না সেই শান্ত স্থির ছয় বছর বয়সী মেয়েটির কথা যাকে ষোল বছর বয়সী এক ভাই যৌন নির্যাতন করেছে। মিষ্টি ছোট শিশুকন্যাটির সঙ্গে বসে তার কাহিনী উদ্ধার করা ছিল আমার কাজ। এটাও জানা দরকার ছিল বিচারকের সামনে এই ঘটনা বলবে কিনা। তার সঙ্গে সম্পর্কের আস্থা গড়ে তোলার জন্য অনেক সময় ব্যয় করেছি, খেলনা নিয়ে খেলেছি, আবার গেমস খেলেছি। কিন্তু আমি যতই চেষ্টা করেছি, আমি জানতে পেরেছি, আমি শুধু এটাই জানতে পেরেছি যে, সে যে নিগ্রহের শিকার হয়েছে তা বিচারকের সামনে বলতে পারবে না। আমার মনে আছে, আমি ঐ রুম থেকে বেরিয়ে একটি বাথরুমে ঢুকে কান্নায় ভেঙে পড়েছি।
কারণ তার ভাইকে অভিযুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারিনি। তার সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া এই অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য আমার কাছে সন্দেহাতীত কোনো তথ্য ছিল না। সকল ধরনের বিচারিক ক্ষমতা থাকার পরও আমি নিশ্চিত ছিলাম এ বিষয়ে আমি একেবারে ক্ষমতাহীন। যৌন নিপীড়কদের শিকারে পরিণত হওয়া শিশুদের পক্ষ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমি বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লাম। বিচারকরাও অনেক সময় এ ধরনের সমস্যার দিকে ঝুঁকে পড়েন যে শিশুদের চেয়ে বড়দের কথা বেশি বিশ্বাস করেন। এমন ঘটনা অনেক বেশি ঘটে থাকে বিশেষত শিশুরা যখন যৌন নিগ্রহের শিকার হয়। আমার প্রায়ই একটি ঘটনার কথা মনে হয়, যেখানে একটি চৌদ্দ বছরের শিশু তার আশ্রয়স্থল ছেড়ে প্রতিবেশী একদল যুবকের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল। তারা তার বন্ধু এবং রক্ষক হওয়া সত্ত্বেও তাকে একটি ফাঁকা অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে গণধর্ষণ করে। আমি এটা বলতেই পারি যে, এই শিশু বয়সে সে শিক্ষা পেয়েছে যে প্রাপ্ত বয়স্কদের বিশ্বাস করতে নেই। তার মধ্যে সবসময় সংশয় এবং বিরোধপূর্ণ মনোভাব দেখা যেত। আমি অনুভব করি সেই অসহায় মেয়েটির বীভৎস কৈশোরকাল। যে শৈশব তাকে এ করুণ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। সে যখন চুইংগাম চিবাতে চিবাতে আদালতে প্রবেশ করলো তখন তাকে কীভাবে নেবেন বিচারকেরা সে বিষয়ে আমি একেবারেই ওয়াকিবহাল। পুরো প্রক্রিয়াটিই ছিল অবমাননাকর।

আমার উদ্বেগ ছিল যে, এই শিশুটিকে তারা ধারাবাহিক যৌন নির্যাতনের শিকার একটি অসহায় শিশু হিসেবে বিবেচনা করবে কিনা? নাকি তারা তাকে দেখবে যথার্থহীন অর্থে। কে এটা জানতো।
বিচারকরাও মানুষ। তাদের মধ্যে মানবিক অনুভূতি এবং প্রতিক্রিয়া আছে। তারা যেখানে থাকতো সেখানে তাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ করতে হতো যদি আমি অধিক সুবিচার নিশ্চিত করতে চাই।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি ‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর