× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রকৃত এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা দিতে কাজ করছে সরকার

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৪ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার

করোনাভাইরাসের মহামারিতে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানোর জন্য প্রকৃত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) প্রণোদনার ঋণ দিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘করোনাকালীন বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ পরিস্থিতি’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
ডিআরইউ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসের হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ ও ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বক্তব্য রাখেন। ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু।
বক্তারা বলেন, করোনার কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা যে সমস্যায় পড়েছেন, তা দূর করা না গেলে অর্থনীতির শক্তি হারাবে। অন্যান্য খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানোর জন্য সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, এর মধ্যে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ঋণ পেয়েছেন। অনেকেই পান নাই।
যেটা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। গঠনমূলক সমালোচনা ঠিক আছে। কিন্তু এটা নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে, যা ঠিক না। করোনার কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা যে সমস্যায় পড়েছেন, সে বিষয়ে সরকার অবগত। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ইতিমধ্যেই ৫ হাজার কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে। প্রকৃত এসএমই উদ্যোক্তাদের না পাওয়ায় মূলত ঋণ বিতরণে সমস্যা হচ্ছে। সরকার এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বেসরকারি খাতে এসএমই উদ্যোক্তাদের নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মূল লক্ষ্য হলো- প্রকৃত এসএমই উদ্যোক্তারা যেন প্রণোদনার ঋণ পায়।
ফ্রিল্যান্সারদের বিষয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ফ্রিল্যান্সাররা নিবন্ধন করতে পারলে তাদের কাজের সুযোগ বাড়বে। বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সারদের নিবন্ধন বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক ইতিবাচকভাবে এগোলেও গড় জিডিপি অনুপাত কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে আসেনি। এমনকি বন্ড মার্কেটও কার্যকর নয়। অনেকেই বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কিন্তু গড় জিডিপি’র অনুপাত বাড়ছে না কেন? আমাদের কাছেও এর সঠিক উত্তর নেই। তবে করের আওতা বাড়ানো না গেলে এই সূচকটির উন্নতি করা যাবে না। এমনকি কর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা যে হয়রানির কথা বলেন তাও কমবে না।
ভারতের ভ্যাকসিন নিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট বাজারে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করলে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ইনস্টিটিউট যেদিন আন্তর্জাতিক বাজারজাতকরণ শুরু করবে সেদিন থেকেই বাংলাদেশ মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ পাবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সিরাম ইনস্টিটিউট ভারত সরকারকে যে দামে ভ্যাকসিন বিক্রি করবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন সম্পর্কে সুখবর পাওয়া যাবে। তারপর থেকেই বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পাওয়া শুরু হবে।
বাংলাদেশ বিশ্বে সবচেয়ে কম দামে ভ্যাকসিন পাবে দাবি করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মডার্না ও ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিনের দাম রাখছে ৪০ ডলার। সমপ্রতি চীনে বাজারজাত হওয়া আরেকটি ভ্যাকসিনের দাম রাখছে ৬০ ডলার। আর বাংলাদেশ একই কার্যকারিতার ভাকসিন পাবে মাত্র ৫ ডলারে।
বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচক তৈরির কাজ এ বছর স্থগিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২২ সালে যখন পরবর্তী র‌্যাংকিং প্রকাশ করবে তখন বাংলাদেশকে ডাবল ডিজিটে (একশ’র নিচে) নিয়ে আসার প্রধানমন্ত্রীর যে লক্ষ্য রয়েছে, সেটা আমরা পূরণ করবো।
সরকার জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি নিয়ে মিথ্যাচার করছে দাবি করে বিশেষ অতিথি আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির জন্য জিডিপি’র ৪০ শতাংশ বিনিয়োগ প্রয়োজন। মহামারির কারণে গত অর্থবছরে প্রায় তিন মাস অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ ছিল। তবু সরকার ৫.২০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে দাবি করছে। এই প্রবৃদ্ধি সরকারি মিথ্যাচার। বিবিএস রাতে যে তথ্য ঠিক করে পরের দিন সকালে তা মন্ত্রীর ফোনে পরিবর্তন হয়ে যায়। এভাবেই এতো বেশি প্রবৃদ্ধি। তবে ব্যাংকের সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনাকে সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা উল্লেখ করে এজন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ দেন।
এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, মহামারির ধাক্কায় ভারতের মতো দেশেও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চীনের অর্থনীতি পড়েছে চাপে। অথচ এই সংকটেও বাংলাদেশ ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। দেশের অর্থনীতি যে শক্তিশালী অবস্থানে আছে এটা তার প্রমাণ। সংকট মোকাবিলায় শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে না থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর