আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে প্রিমিয়ার লীগ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশন। মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে খেলোয়াড়দের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ১০ দলের মধ্যে ছয়টি দলই খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এই লীগে। তারা বার বার ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছে লীগ পিছিয়ে সামনের বছর নিতে। কিন্তু ফেডারেশন অনড়। দল সংখ্যা বাড়াতে চার দলের সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত প্রথম বিভাগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে নিয়ে ১লা ডিসেম্বর তারা শুরু করতে যাচ্ছে লীগ। আর তাতে খেলার সুযোগ হারাচ্ছে প্রায় একশ’ বাস্কেট বল খেলোয়াড়।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের শীর্ষ লীগ আয়োজনে সংক্রমণের ব্যাপক ঝুঁকি থেকে যায় বলেই ফেডারেশনকে লীগ না করার অনুরোধ জানিয়েছিল ছয় ক্লাব দ্য গ্রেগোরিয়াস, দ্য গ্রেগস, দ্য শাওন্স, ইগলস ক্লাব, ফ্লেইম বয়েজ, ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্লাবের না চাওয়াকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না ফেডারেশন।
তারা বাকি চারটি ক্লাব হরনেটস এসি, রেঞ্জার্স, ধূমকেতু ও বকশীবাজারের সঙ্গে
সদ্য প্রথম বিভাগ চ্যাম্পিয়ন যোশে ফাইট এবং রানার্সআপ ওল্ডডিওএইচএস ক্লাবকে জুড়ে দিয়ে নামকাওয়াস্তে প্রিমিয়ার লীগ আয়োজন করছে। ফেডারেশনের যুক্তি মুজিববর্ষ উদ্যাপনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নামে এই লীগ আয়োজন করবে তারা। তাই এ বছরই যে করে হোক খেলাটি আয়োজনের তড়িঘড়ি উদ্যোগ। ছয় ক্লাবকে বাইরে রাখা প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক একে সরকার বলেন, ‘আসলে প্রিমিয়ারে যারা খেলে সেসব ক্লাবের কাঠামো সেভাবে নেই বললেই চলে। কাউন্সিলরশিপ বাঁচিয়ে রাখতে কোনোমতে দল গড়ে তারা খেলে। আমরা করোনাকালে তাদের বলেছি আর্থিক সহায়তা দেবো লীগ খেললে। কিন্তু তারা এখন খেলতে চায় না। করোনা একটা অজুহাত। আসলে দল গড়ার সামর্থ্য নেই বলেই তারা খেলছে না।’ ক্লাব কর্তারা অবশ্য এই অভিযোগ মানছেন না। বরং তারা খেলোয়াড়দের ঝুঁকিটাকেই দেখছেন বড় করে। দ্য গ্রেগরিয়াস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সিকদার বলেন, ‘ফেডারেশন যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্লাবকে বাদ দিয়ে শীর্ষ লীগ আয়োজন করতে চায়, তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা তো খেলবো না বলিনি। বলেছি, কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে। মুজিববর্ষের মধ্যেই যদি করতে হয়, সেটা তো আগামী বছর মার্চেও করা যেত। আমরা প্রচুর টাকা খরচ করে দল গড়ি। অতীতে বিদেশ থেকে খেলোয়াড় এনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে খেলোয়াড়দেরও একটা উপার্জনের সুযোগ তৈরি
হয়। ফেডারেশন সেগুলো গুরুত্ব দিচ্ছে না।’ ফ্লেইম বয়েজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদও ফেডারেশনের আচরণে ক্ষুব্ধ। করোনাকালে লীগ আয়োজনের তীব্র সমালোচনা করেছেন বর্ষীয়ান এই সংগঠক। ‘আসলে যারা দীর্ঘদিন ফেডারেশনে বসে আছেন, তারা চায় না খেলাটা এগিয়ে যাক। এমনিতেই দেশে বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের অভাব আছে। এখন ছয়টি ক্লাবকে বাইরে রেখে তারা এই করোনার মধ্যে লীগ আয়োজন করছে। এতে যদি খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তারা আক্রান্ত হয়, তার দায়ভার কে নেবে?’ বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশন অবশ্য খেলতে অস্বীকৃতি জানানো ছয় ক্লাবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘করোনার মধ্যে আমরা কাউকে জোর করছি না। স্বাভাবিক সময় হলে তাদের প্রথম বিভাগে নামিয়ে দেয়া হতো। সেটা এবার করবো না। আর যারা খেলবে, তাদের সবার খেলার আগে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হবে।’