× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শনাক্ত সাড়ে চার লাখ ছাড়ালো / মৃত্যু ঝুঁকিতেও হেঁয়ালিপনা

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্র্টার
২৫ নভেম্বর ২০২০, বুধবার

দেশে করোনা পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে যাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। বাড়ছে প্রাণহানির সংখ্যাও। বিভিন্ন গবেষণায় দেশে আক্রান্তের সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিশেষজ্ঞদের পূর্বের আশঙ্কাকে আরো জোরালো করে তুলেছে। সরকারি হিসাবে করোনা রোগী শনাক্ত সাড়ে ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষের নাম। শীতে সংক্রমণ বাড়বে এই আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই।
শীতের শুরুতেই এর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা ভাবছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব নির্দেশনা মানানো এবং মানার ক্ষেত্রে অনেকটা হেঁয়ালিপনা দেখা যাচ্ছে। সর্বত্র মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলেও বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক দেখা যায় না। পরিবহনে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিচ্ছে। অথচ দাঁড় করিয়ে যাত্রী না নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও পালন হচ্ছে না। রাইড শেয়ারিং চলছে আগের ধাঁচেই। সামাজিক দূরত্ব মানার বালাই নেই। বিভিন্ন বাজারে/মার্কেটের প্রবেশ মুখে ব্যানারে লেখা আছে-‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে’। কিন্তু মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তেমন দেখা যাচ্ছে না। হাত ধোয়ার ঝুঁকিও দিন দিন কমে আসছে।

২২শে নভেম্বর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ইদানীং আমরা দেখছি সংক্রমণের হার বাড়ছে, মৃত্যুর হারও একটু বাড়ছে। অর্থাৎ, আমরা একটু বেখেয়ালি হয়ে গেছি। আমরা মাস্ক সেভাবে পরছি না এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছি না। কিন্তু আমাদের মাস্ক পরতে হবে। সরকার ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ চালু করেছে। সবাই মিলে যদি এটা মানা হয়, তাহলে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে করোনা সংক্রান্ত জাতীয়  টেকনিক্যাল কমিটি যেসব পরামর্শ দিয়ে আসছে তারও অনেকটা বাস্তবায়নে ধীর গতি দেখা যাচ্ছে। কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় কমিটির তরফে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর ২৬২ দিনের মাথায় শনাক্ত সাড়ে ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ শনাক্ত হতে সময় লেগেছে ২৯ দিন। ২৬শে অক্টোবর ২৩৩ দিনের মাথায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৫১ জন। গত ২১শে সেপ্টেম্বর শনাক্তের ১৯৮ দিনের মাথায় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৬২১ জন। এই সংখ্যা থেকে ৪ লাখে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ৩৫ দিন। সংক্রমণ শুরুর ১৭২ দিনের (২৬শে আগস্ট) মাথায় এই সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২ হাজার ১৪৭ জন। সাড়ে ৩ লাখ হতে সময় লেগেছে ২৬ দিন। শনাক্তের ১৫৩ দিনের মাথায় ছিল এই সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ৫০২ জন। ৩ লাখ হতে সময় লেগেছে ১৯ দিন। ১৩৩ দিনের মাথায় (১৮ই জুলাই) শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২ লাখ দুই হাজার ৬৬ জন। এ সংখ্যা থেকে আড়াই লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ২০ দিন। দেড় লাখ থেকে দু’লাখ হতে সময় লেগেছে ১৬ দিন। ১১৭ দিনের মাথায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জন। শনাক্ত ১ লাখ থেকে দেড় লাখ হতে সময় লেগেছিল ১৪ দিন। ১০৩ দিনের মাথায় দেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন। প্রকোপ শুরুর পর প্রথম ৫০ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮৭ দিনের মাথায়। এরপর তা ১ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছে মাত্র ১৬ দিন। গত ৮ই মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আর প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যায় ১৮ই মার্চে।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ে নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৪৪৮ জনের মৃত্যু হলো। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরো ২ হাজার ২৩০ জন। এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ জন শনাক্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২৬৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭৭ জন সুস্থ হয়েছেন। এতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ২৬৫টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১৫ হাজার ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৬ লাখ ৮০ হাজার ১৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৫৫ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৪৯৩ জন নারী মারা গেছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, রাজশাহীতে ৩ জন এবং রংপুরে ১ জন রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৩১ জন এবং বাসায় ১ জন মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯০৪ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৮৭৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯২ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ১৪ জন। একদিনে আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৫৭ জন, ছাড়া পেয়েছেন ১৮৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৫ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৮২ জন। এখন আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৫৪৩ জন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর