মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫-এর সভায় করোনাকে অজুহাত করে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে শ্রমিক ছাঁটাই, কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি, মজুরি কর্তনসহ নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। গতকাল রাতে শহরের কোর্টরোডস্থ (মনুসেতু সংলগ্ন) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন বাবুর্চি উপ-কমিটির আহ্বায়ক প্রবীণ বাবুর্চি মো. আমিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন মিয়া, কোষাধ্যক্ষ তারেশ বিশ্বাস সুমন, বাবুর্চি শ্রমিকগণের পক্ষে মো. আহাদ আলী, মো. আজিম মিয়া, মো. মিলন মিয়া, আফরোজ জামান, মো. শাহিন মিয়া, মিজান মিয়া, শানুর মিয়া, হোটেল শ্রমিক নেতা সুহেল আহমেদ সুবলে প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন করোনাভাইরাসের কারণে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন হোটেল-রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকরা। গত মার্চ মাস থেকে প্রায় ৩ মাস হোটেল রেস্টুরেন্ট বন্ধ ছিল। এই ৩ মাস হোটেল মালিকরা শ্রমিকদের একটি টাকাও মজুরি প্রদান করেনি। এমন কি মার্চ মাসে হোটেল বন্ধ করার সময় কোনো কোনো মালিক শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা অনেকটা অনাহার-অর্ধাহারে জীবন কাটাতে বাধ্য হন।
প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের জন্য আর্থিক সহযোগিতার ঘোষণা দিলেও হোটেল শ্রমিকরা তালিকা প্রদান করেও কোনো সহায়তা পায়নি। শ্রমিকদের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে না কোনো মালিক তাদের খোঁজ নিয়েছেন, না তারা পেয়েছেন সরকারি কোনো সহায়তা। পরবর্তীতে হোটেল-রেস্টুরেন্ট খুললেও শতকরা ৩০-৪০ ভাগ শ্রমিককে এখনো মালিকরা কাজে নেননি। আবার যাদের কাজে নেয়া হয়েছে তাদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো হলেও ব্যবসা মন্দার অজুহাত তুলে মালিকরা করোনা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় কম মজুরি পরিশোধ করছেন। এরকম দুর্বিষহ অবস্থায় না মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি পরিশোধ করছেন, না সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের খোঁজ নিচ্ছে। তাই নিতান্ত বাধ্য হয়েই পেটের দায়ে শ্রমিকরা হোটেল-রেস্টুরেন্টে কাজ করছেন। সভায় বক্তারা দ্রব্যমূল্য লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির নিম্নআয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠী অনাহার-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ সরকার তার তথাকথিত উন্নয়নের সাফাই গেয়ে চলছে। সভা থেকে বিনাবেতনে বেআইনি শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নিম্নতম মূল মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা, হোটেল সেক্টরে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি কার্যকর, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্রসহ শ্রমআইন বাস্তবায়ন, চাল ডাল তেল পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা বাতিল, সর্বস্তরের রেশনিং চালু, গণতান্ত্রিক শ্রমআইন ও শ্রমবিধি প্রণয়নের দাবি