× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেটে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের তাণ্ডব

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২৮ নভেম্বর ২০২০, শনিবার

সিলেটের শাহপরাণ উপশহরের চোলাই মদের আড়তদার কানাই বশাক। বাগান ছেড়ে আবাসিক এলাকায় তিনি গড়ে তুলেছিলেন মাদকের হাট। এ নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত ছিলেন এলাকার মানুষ। রাত হলেই মাদকসেবীদের মাতলামি সহ নানা কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ছিলেন এলাকার মানুষ। নানা অভিযোগ ওঠায় গত বৃহস্পতিবার বিকালে কানাই বশাকের আস্তানায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ২৫৫ লিটার চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার করা হয় কানাই বশাককে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে কানাই বশাকের স্ত্রী সুগারানী বশাক, মেয়ে শ্যামলী
বশাক সহ সহযোগীরা। র‌্যাবের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা শাহপরান উপশহরের বাসিন্দা ও সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিমের বাসায় হামলা চালিয়েছে।
সশস্ত্র অবস্থায় রাতের আঁধারে হামলা চালিয়ে তারা সাংবাদিকের বাসা তছনছ করা ছাড়াও লুট করেছে। এ সময় তারা সাংবাদিকের স্ত্রী ও সন্তানদেরও মারধর করে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে গতকাল এলাকায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিম গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন- বেশ কিছুদিন ধরে শাহপরান উপশহর এলাকায় নানা ধরনের মাদক কেনা-বেচা বেড়ে গেছে। এ কাজে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে মাদকের ডিলার স্থানীয় সাবেক মহিলা মেম্বার সুগা, তার মেয়ে শ্যামলী, সাক্ষ্যাৎ ও রুনিসহ ২০-২২ জন। মহিলা মেম্বারের স্বামী কানাই বশাক প্রকাশ্যে মাদক বিকিকিনি করতো। এলাকায় অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি বসবাস করেন। রয়েছে উলামায়ে কেরাম, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, রাজনীতিবিদ সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বাগানী সুগা রানী বশাক ও তার স্বামী ওই আবাসিক এলাকায় বাসা নির্মাণ করে বাগানের আদলেই মাদক বিক্রি কাজ চালাচ্ছিল। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা কয়েকদিন আগে পাড়ার মসজিদে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে এলাকার গণমান্য মুরুব্বিদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদক বিক্রেতাদের নাম উল্লেখ করে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিম সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এবং মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকে ওই এলাকায় পুলিশি টহল বেড়ে যায় এবং মাদক বিক্রেতারা তাদের অবৈধ ব্যবসা চালাতে না পারায় ডালিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এর আগে বৈঠকের পর তার বাসায় এসে তাকে প্রকাশ্যে হুমকিও দিয়ে যায়। ডালিম জানান- বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের একটি দল ওই মাদক হাটের নিয়ন্ত্রক কানাই বশাককে চোলাই মদ সহ ধরে নিয়ে যায়। এই আটকের ঘটনা এবং সাংবাদিক ডালিমের মাদক বিরোধী সোচ্চার অবস্থানের জের ধরে সাবেক মহিলা মেম্বার সুগা রানী বশাক ও তার মেয়ে শ্যামলীর নেতৃত্বে স্থানীয় মাদক কারবারিরা রাতে বাসায় হামলা চালায়। হামলার পরপরই সাংবাদিক ডালিমের স্ত্রী ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে তিনি দ্রুত পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বিকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে অবগত করেন। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে যাওয়ার আগে ডাালিমের বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় তার বাসার বসার ঘরের টেবিলের ড্রয়ারে থাকা ৩৩ হাজার টাকা নিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এছাড়াও ভাঙচুরের ফলে প্রায় দেড়-দুই লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ডালিম। এদিকে হামলার ঘটনায় গতকাল সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিম বাদী হয়ে সিলেটের শাহপরান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় সাক্ষ্যাৎ তাঁতী, শাকিল মিয়া, শাওন তাঁতী, রীনা বেগম ওরফে রুনী তাঁতী, সুগা রানী তাঁতী, লাইলী ওরফে শ্যামলী তাঁতী, কালা ময়না সহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। রাতে পুলিশ অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এদিকে- গতকাল বিকালে মামলার আসামি সুগা রানী, তার মেয়ে শ্যামলী তাঁতী সহ কয়েক জন এসে ফের হামলার প্রস্তুতি নেয়। তারা দলবল নিয়ে সাংবাদিক ডালিমের বাসার সামনে অবস্থান নিলে স্থানীয়রা জড়ো হন। খবর পেয়ে যায় পুলিশও। পরে তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। সিলেটের শাহপরান থানার ওসি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী জানিয়েছেন- ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার মাদক বিক্রেতা কানাই বশাককে র‌্যাব মদ সহ আটক করে তাদের কাছে দিয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর