বনভূমি দখলদারদের উচ্ছেদে ৩০শে জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত নোটিশ পাঠাতে বলেছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে আগামী ২০শে ডিসেম্বরের মধ্যে সংরক্ষিত বনভূমি দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত করে কমিটিতে পাঠাতে বলা হয়েছে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, মো. রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও শাহীন চাকলাদার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে বনভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকরা চিঠি দিয়েছেন। আগামী ৩০শে জানুয়ারির মধ্যে এই চিঠি দেয়া হবে। এই নোটিশের সাতদিনের মধ্যে দখলদার সরে না গেলে উচ্ছেদ করা হবে। কমিটি বিভাগীয় কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য জমি উদ্ধার। এই যে সংরক্ষিত বন দখল করে রেখেছে এটা গেজেটভুক্ত। এখানে দখলদার আদালতে গিয়েও কিছু করতে পারবে না। বিভিন্ন ক্যাটাগরির বনের জমি দখল হয়ে আছে। আগে সংরক্ষিত বনের জমি উদ্ধারে মন্ত্রণালয়কে হাত দিতে বলা হয়েছে। এটা শুরু হলে অন্য দখলদাররা সতর্ক হয়ে যাবে। বৈঠকে বন বিভাগের সব জমির রেকর্ড ডিজিটালাইজড করার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া লাল তালিকাভুক্ত বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী ও উদ্ভিদ রক্ষায় যেসব গবেষণা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পরবর্তী ফলাফল কমিটিকে অবহিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির আগের বৈঠকে বনের জমি দখল করে রাখা ৯০ হাজার জনের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয় কমিটিকে জানিয়েছে, ওই তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। দ্রুতই তালিকা দেয়া সম্ভব হবে।
আরো বলা হয়েছে, সিএস রেকর্ড মূলে রেকর্ডভুক্ত বনভূমি পরবর্তীতে এসএ/আরএস/বিএস জরিপে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বনভূমি (সংরক্ষিত বনভূমি ছাড়া অন্যান্য যেমন রক্ষিত, অর্পিত বনভূমি) জেলা প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বন্দোবস্ত দিয়েছে। এ ছাড়া বনভূমির মধ্য দিয়ে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ বিশেষ করে সড়ক নির্মাণের ফলে এর দু’পাশে বনভূমি জবরদখলের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় জনগণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনভূমি দখল করে কৃষি কাজ, স্থায়ী স্থাপনা, বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, স্কুল, প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। অনেক জবরদখল করা বনভূমিতে শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।