অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনে দুদকের দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় আদালতের এজলাসে না তোলে ফের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলার এজহারভুক্ত এক নম্বর আসামি ও কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে। সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আনা হয় তাকে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় এজলাসে না তুলেই তাকে ফের কারাগারে ফেরত পাঠানো হয় বলে জানান দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক। তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় এবং কারারুদ্ধ প্রদীপের জামিনের আবেদন না থাকায় তাকে প্রসিকিউশন থেকে এজলাসে হাজির করা হয়নি। আদালত নির্ধারিত পরবর্তী তারিখে শুনানি এবং তাকে হাজির করা হতে পারে। গত ২৩শে আগস্ট টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকি কারণ এর বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ওসি প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ এনেছে। আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়েছে চুমকির বিরুদ্ধে।
সেজন্য গত ১২ই সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয় প্রদীপকে। তখন থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেই আছেন তিনি। ওসি প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলেও দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং এজাহারে বলা হয়েছে। দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনাস্থল বিবেচনায় মামলাটি করা হয়েছে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ। মামলা নম্বর ১১। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত প্রদীপ ও তার স্ত্রীর সম্পদ ইতিমধ্যে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন বলেও জানান দুদকের আইনজীবীরা। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি কারণ সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন।