× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দু’জন দু’জনকে বললাম,‘তুমি কি এটা বিশ্বাস করছো’

এক্সক্লুসিভ

কাজল ঘোষ
১ ডিসেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার

এটা অদ্ভুত শোনাবে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা আমার যা মনে আছে বিচারকরা বেশির ভাগই নির্বাচিত। আমি যখন প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করি তখন প্রচুর সময় ব্যয় করতাম আদালত কক্ষে। কথা বলতাম বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষের সঙ্গে যারা দায়িত্বরত বিভিন্ন বিচারকদের কাছে আসতো। আমার কাজ ছিল তাদের আর্জি বিষয়ে কথা বলা, তাদের বিষয়গুলোর গুরুত্ব ও প্রেক্ষিত জানা। প্রচারণাও আসলে তেমনই। কিন্তু বিরোধী পক্ষ ছাড়া আমার এই কাজটি করা সম্ভব ছিল না। আমি এমনটি করতে পছন্দ করি।
কখনো কখনো কোনো একজন মা হয়তো তার প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সারতে ছুটে আসেন মুদি দোকানে এবং তিনি হয়তো তার সন্তানকে ট্রলিতে নিয়ে কেনাকাটা করছেন, এই সময়টাতেই আমি আমার নিজের ভেতরেই তার জীবন সম্পর্কে, তার সংগ্রাম সম্পর্কে এবং তার মেয়ের হ্যালোইন পোশাক সম্পর্কে আলোচনা করি।  এমন কথাবার্তার ফাঁকেই আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে বলি- ‘আমি আপনার সমর্থন পাবো- এমনটা আশা করি।’ অনেকেই বলেছে, এটা সত্যিই বিস্ময়কর- এর আগে সরাসরি এভাবে কেউ এ কথাটি বলেনি।

এখনো পর্যন্ত এটি আমার কাছে আপনা-আপনি আসেনি। আমি অনেক বেশি সুখি ছিলাম তাদের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু ভোটাররা চান নীতি কথার বাইরে ভিন্ন কিছু। তারা আমার সম্পর্কে জানতে চাইতো, আমি কি ছিলাম, আমার জীবন কেমন ছিল, যে ধরনের অভিজ্ঞতায় আজকের আমি। তারা বুঝতে চাইতো আমার মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে। কিন্তু আমি আমার নিজের সম্পর্কে বলতাম না। আমি আমার নিজের বিশ্বাস থেকেই কিছু করতে চাইতাম। আমার মেধা থেকে কিছু করতে চাইতাম। যদিও আমি তাদের প্রশ্ন থেকে অনুপ্রেরণা পেতাম এবং অনেক সময় তা ব্যবহারও করতাম। প্রথম ডেপুটি অ্যাটর্নি পদে লড়ার সময় নানান রকমের প্রার্থীরা ছিল এবং তাদের সঙ্গে লড়াই ছিল অনিবার্য। এই নির্বাচন এটিই বলে দেয় যদি আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি তাহলে বিজয়ী হবো পাঁচ সপ্তাহ পরে।

নির্বাচনের দিন আমি সকলের সঙ্গেই করমর্দন করি। আর তা চলে নির্বাচনের আগ থেকে একেবারে নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পর্যন্ত। আমার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু ক্রিসেটি একেবারে শেষ সময়ে প্রচারণায় সাহায্য করতে উড়ে আসে। এটা আমার কাছে ম্যারাথনের কোয়ার্টার মাইল স্প্রিন্টের একেবারে চূড়ান্ত অবস্থায় আসা যাকে তাই বলে। খুবই উত্তেজনা অনুভব করি তার এই যোগ দেয়ায়। আমার পরিবার, বন্ধুবর্গ এবং প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত সকলের উদ্দেশ্যে একটি নৈশভোজে যাই নির্বাচনের ফল যখন আসা শুরু হলো সেই সময়। আমার প্রচারণা ম্যানেজার জিম স্টার্নস নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে ভোট গণনা পর্যবেক্ষণ করছিল এবং ফোন করে জানাচ্ছিল ভোটের সংখ্যা। খাবার শেষে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের অ্যাসেম্বলি মেম্বার মার্ক লেনো, নির্বাচনী পরামর্শদাতা জিম রিভাল্ডো, বন্ধু ম্যাথিউ রথচাইল্ড মায়াকে সঙ্গে নিয়ে গণনা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব নেন। নির্বাচনী ফল আসছে আর পাস্তায় কামড় বসাবার মধ্যেই সর্বশেষ পরিস্থিতি টেবিল ক্লথের উপরে রাখা কাগজে ভোটের পরিসংখ্যানগুলো আপডেট করতে থাকে।

আধুনিক নির্বাচনী প্রচারণা নির্ভর করে বড় রকমের ডাটা, বিশ্লেষণ এবং মর্যাদাবান ভোটারের উপস্থিতির ওপর। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে আমি একজন বন্ধু, একটি কলম এবং এক বল স্পেগেটি পেয়েছিলাম যা ছিল কার্যকরী।
আমরা যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছি এমন সময় আমার বাহুতে হাত রেখে মায়া আমাকে আটকালো, নির্বাচনের নতুন একটি আপডেট এসেছে।  

‘ও মাই গড, ইউ ডিড ইট’। সে বলতে লাগলো। নির্বাচনে তুমি জিতেছ। আমি অঙ্ক কষতে লাগলাম সে যা বলেছে তা ঠিক কিনা। আমি মায়ার দিকে তাকালাম, মায়াও আমার দিকে তাকালো এবং দুজন দুজনকেই বললাম, ‘তুমি কি এটা বিশ্বাস করছো, আমরা জিতে গেছি।’

পাঁচ সপ্তাহ পর নিশ্চিত হওয়া গেল চূড়ান্তভাবে। ঐদিনটাতে বৃষ্টি হচ্ছিল তখন আমি একটি বাসস্টপে দাঁড়িয়ে ভোটারদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলাম আর বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছিলাম। ঐ রাতে আমার মনে হলো আমি চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়েছি।

আমরা একটি পার্টির আয়োজন করি প্রচারণার প্রধান কার্যালয়ে এবং আমি সেখানে বক্তব্য রাখি ‘আমরাই চ্যাম্পিয়ন’। পুরো কক্ষটি এই বক্তব্যে ফেটে পড়লো। বাইরে চিৎকার করছে প্রচারণায় থাকা বন্ধুরা, পরিবারের সদস্যরা, মেনটরস এবং স্বেচ্ছাসেবীরা। এ সময় আমি একটি সম্প্রদায়কে দেখতে পেলাম। যেখানে গরিব প্রতিবেশী থেকে ধনী সকলেই ছিল। পুলিশ সদস্যরা তাদের নিজেদের পোশাক পরিধান করা অবস্থায় লোকজনকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করছিল। প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে উল্লাসে যোগ দিয়েছিল যুব শ্রেণী। সব সময় আমি যেটাকে সত্য ভেবে এসেছি এটা যেন তারই প্রতিফলন। যখন এমন কিছু আমাদের সামনে আসে যেটা আমাদেরকে আলাদা করার পরিবর্তে একত্রিত করে দেয়।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর