ভোটে জালিয়াতির কোনো প্রমাণ পাননি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের ফল পাল্টে যেতে পারে এমন কোনো অনিয়মের প্রমাণ মেলেনি। উইলিয়াম বার হলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একেবারে ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের একজন। তার এমন মন্তব্যের মাধ্যমে ট্রাম্পের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ যেন উবে গেল। উইলিয়াম বার বলেছেন, এখন পর্যন্ত বড় মাত্রায় আমরা কোনো জালিয়াতি দেখতে পাইনি। যার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়া যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে থেকে তার সঙ্গে এমন সাংঘর্ষিক বক্তব্য দেয়ার জন্য উইলিয়াম বার’কে বিদায় করে দিতে পারেন ট্রাম্প- এমন আলোচনা শুরু হয়েছে। সিনেট ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেছেন, আমার মনে হয় উইলিয়াম বার’কে বরখাস্ত করতে পারেন ট্রাম্প। কারণ, ট্রাম্পের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগের বিরুদ্ধে এতো বড় কথা তার কোনো কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত বলেন নি।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, ৩রা নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেসব রাজ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হেরেছেন সেখানেই তিনি অথবা তার টিম ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। এর মধ্যে অনেক রাজ্যের বিচারক ওই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প পরাজয় মানতে নারাজ। তিনি অব্যাহতভাবে টুইট করে যাচ্ছেন। তাতে বলেছেন, আমরাই জিতেছি। এই নির্বাচন ছিল জালিয়াতির। নির্বাচনের ফলকে চুরি করা হয়েছে। তিনি এভাবে টুইট অব্যাহত রাখলেও ওইসব রাজ্যে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে সার্টিফাই করছেন কর্মকর্তারা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে জো বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। অন্যদিকে ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২ ভোট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হয়। পপুলার ভোটেও ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেন কমপক্ষে ৬২ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন।
এ অবস্থায় অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ওই বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। এরপরও বেশকিছু টুইট করেছেন ট্রাম্প। তাতেও তিনি ভোটে জালিয়াতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে কোনোই প্রমাণ উপস্থাপন করেন নি। ঢালাও জালিয়াতির অভিযোগের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। এমন সময় ট্রাম্পের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের অন্যতম উইলিয়াম বার বলেছেন, একটি ক্ষেত্রের উল্লেখ করা যেতে পারে। সিস্টেমেটিক জালিয়াতির কথা উঠতে পারে। সেটা হলো মেশিনে ভোট গণনার সময় তা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়ে থাকতে পারে। এর মধ্য দিয়ে তিনি এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে, ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে এবং সেই মেশিনকে হ্যাক করে ভোটগুলো বাইডেনের বাক্সে ফেলে দেয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তদন্ত করেছে। তাতে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অনিয়মের প্রমাণ মেলেনি। ওদিকে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা পরে বলেছেন, এখনো তারা তদন্ত শেষ করেন নি। সুনির্দিষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য সব অভিযোগ তারা তদন্ত করে দেখবে।
বিশ্বাসযোগ্য ভোট জালিয়াতির যেকোনো অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মার্কিন অ্যাটর্নিদের মামলা করার জন্য গত মাসে নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এই অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। তখনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সার্টিফায়েড কপি বের হয়নি। তিনি বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেছেন, তিনি একজন প্রসিকিউটরকে নিয়োগ দিয়েছেন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলারের বিষয়ে তদন্ত করতে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ইস্যুতে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন রবার্ট মুয়েলার।