× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আল জাজিরার প্রতিবেদন / উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুরতার আরও ভয়াল বর্ণনা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) ডিসেম্বর ৪, ২০২০, শুক্রবার, ১২:৩২ অপরাহ্ন

সাইরাগুল সাউতবে চীনের সিনজিয়াংয়ের ‘পুনঃশিক্ষা ক্যাম্প’ বা রিএডুকেশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেয়েছেন দু’বছরেরও বেশি সময় আগে। তিনি দু’সন্তানের মা। কিন্তু তাকে এখনও তাড়িয়ে ফেরে তাদের ওপর চালানো ভয়াবহতা, অমানবিকতা আর সহিংসতা। এসবই তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন আটক অবস্থায়। সাইরাগুল সাউতবে বর্তমানে বসবাস করছেন সুইডেনে। তিনি একজন ডাক্তার এবং শিক্ষাবিদ। সম্প্রতি তিনি একটি বই প্রকাশ করেছেন। তাতে তিনি ওই বন্দিশিবিরের ভয়াবহতা, যা প্রত্যক্ষ করেছেন তা তুলে ধরেছেন।
এর মধ্যে রয়েছে প্রহার, যৌন নির্যাতন, জোর করে বন্ধ্যাকর। সম্প্রতি তিনি এসব নিয়ে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন আল জাজিরাকে। সিনজিয়াংয়ে মুসলিম সংখ্যালঘু ও অন্যান্য উইঘুরদের ওপর কিভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে তার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এসব সংখ্যালঘুকে জোরপূর্বক শূকরের মাংস খাওয়ানো হচ্ছে। এমনকি উইঘুরে শূকরের ফার্ম বিস্তৃত করেছে চীন। সাইরাগুল সাউতবে বলেন, প্রতি শুক্রবার আমাদেরকে শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ দিনটিকে বাছাই করে নিতো। কারণ, এ দিনটি সপ্তাহের অন্য দিনের চেয়ে বেশি পবিত্র মুসলিমদের কাছে। যদি কেউ এই মাংস খেতে অস্বীকৃতি জানাতো তাহলে তার ওপর নেমে আসতো নির্দয় নিষ্ঠুর শাস্তি। তিনি দাবি করেন, এসব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে উইঘুর মুসলিম বন্দিদের অবমাননা করতে এবং তাদেরকে হীন করার উদ্দেশ্যে। সাইরাগুল সাউতবে বলেন, যখন শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হতো তখনকার অনুভূতি প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। আমার মনে হতো আমি- আমি নই। আমি অন্য কেউ। আমার চারপাশে যারা থাকতেন বন্দি আমার মতো তাদেরও চোখমুখ কালো হয়ে যেতো। এমন পরিস্থিতি মেনে নেয়া ভীষণ কঠিন।
দীর্ঘ এক প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, সাইরাগুল সাউতবে এবং অন্যরা যে সাক্ষ্য দিয়েছেন চীনের ওইসব বন্দিশিবিরের তাতে বোঝা যায়, চীন সিনজিয়াংয়ে কি কঠোর দমনপীড়ন চালাচ্ছে সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসকে পাল্টে দিতে। বিশেষ করে এক্ষেত্রে তারা বেশি করে টার্গেট করেছে জাতিগত মুসলিমদের। তাদের ওপর ২০১৭ সাল থেকে ব্যাপক নজরদারি করা হচ্ছে। ক্যাম্পে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। তাদের যুক্তি হলো সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য এসব ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু আল জাজিরার কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে দেখা যায় উইঘুরে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করেছে চীন। তারা কৃষিকাজেও তাই ফুটিয়ে তুলছে। জার্মান নৃবিজ্ঞানী এবং উইঘুর প-িত আদ্রিয়ান জেনজ বলেছেন, বিভিন্ন প্রমাণ এবং রাষ্ট্র অনুমোদিত নিউজ আর্টিক্যালগুলোতে উইঘুর সম্প্রদায়ের মধ্যে আলোচনার কথা উঠে আসছে। তাতে ওই অঞ্চলে শূকরের ফার্ম অনুমোদন ও তা বিস্তৃত করার সক্রিয় চেষ্টা চলছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে সিনজিয়াংয়ের শীর্ষ প্রশাসক শোহরাত জাকির বলেছেন, স্বায়ত্তশাসিত ওই অঞ্চলটিকে শূকর পালনের প্রাণকেন্দ্র বানানো হবে। এটাকে উইঘুর সম্প্রদায় তাদের জীবনধারার বিপরীত বলে মনে করেন। মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে জেনজ কাশগর এলাকায় নতুন একটি শূকরের ফার্মের কথা উল্লেখ করেছেন। এতে বছরে ৪০ হাজার শূকর প্রডাকশন দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন ২৫ হাজার বর্গমিটার এলাকা। এমন এলাকা দখলে নিয়ে তার নাম দেয়া হয়েছে শুফু। এ বিষয়ে এ বছরের ২৩ শে এপ্রিল, প্রথম রোজার দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। বলা হয়েছে, এখানে শূকরের ফার্ম গড়ে তোলা হবে, মাংস রপ্তানি করার জন্য নয়। কাশগরে এর মাংস সরবরাহ দেয়ার জন্য। শহর এলাকা ও এর আশপাশের এলাকায় বসবাস করেন শতকরা ৯০ ভাগ উইঘুর।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর