কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় এ বছর আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় এবং শ্রমিক সংকট না থাকায় কৃষকেরা নির্বিঘেœ তাদের উৎপাদিত ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। ধানের বর্তমান বাজার দরও ভালো। খড়ও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এতে কৃষকরা বেশ খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এ উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ হাজার ৮১০ হেক্টর জমি। তন্মধ্যে আবাদ হয়েছে ১০ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমি। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
রোগ-বালাই ও পোকা-মাড়কের আক্রমণ কম হওয়ায় এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়া গেছে। বর্তমান বাজার দরও বেশ ভালো রয়েছে। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবেন। এতে করে কৃষকদের মধ্যে ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়াও বোরো মৌসুমে হাইব্রিড ধান চাষের জন্য উপজেলার চার হাজার কৃষককে বিনামূল্যে বীজধান ও ৩৫০ কৃষককে বিনামূল্যে সার ও বীজ সহায়তা করা হয়েছে। এতে করে এ উপজেলায় বোরো মৌসুমেও ব্যাপক আবাদ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, বর্তমান বাজারে আমন ধান (মোটা) বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি এক হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১শ’ টাকা দরে আর চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা দরে। অপরদিকে বিঘা প্রতি খড় বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দরে।
উপজেলার আাদিত্যপাশা গ্রামের রুসমত আলী জানান, এ বছর তিনি আমন ব্রি ধান-৮০ জাতের আবাদ করেছেন। এতে তিনি বিঘা প্রতি ফলন পেয়েছেন ২০ মণ। ধান ও খড়ের বাজার ভালো থাকায় তিনি লাভবান হওয়ার আশা করছেন। আলাউদ্দিন নামের একজন ধানচাষি বলেন, আমন মৌসুমে তিনি ব্রি ধান-৯৩ জাতের আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এতে করে আগামীতে ধান চাষে তার আগ্রহ বেড়েছেও বলে জানিয়েছেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হামিমুল হক সোহাগ বলেন, এবার আমন মৌসুমে নতুন নতুন জাত ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান ৮৫, ব্রি ধান-৯৩, ব্রি ধান-৯৪ ও সুগন্ধি ব্রি ধান-৯০ চাষ করে ফলন ভালো পাওয়ায় কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.সাইফুল হাসান আলামিন মানবজমিনকে বলেন, ধান চাষে কৃষকদের পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়েছে। রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় এ বছর আমনের বেশ ফলন হয়েছে। বাজার দরও ভালো থাকায় কৃষকেরা বেশ লাভবান হবেন। এতে করে ধান চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।