× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাউফলে আমনে পোকার আক্রমণ, দিশাহারা কৃষক

বাংলারজমিন

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
৬ ডিসেম্বর ২০২০, রবিবার

পটুয়াখালীর বাউফলে আমন ধানে শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় ধান পরিপক্ব হওয়ার আগেই আধা-পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা। এর ফলে তাদের মধ্যে এখন হতাশা দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলায় প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ গ্রামের ইউনুচ মৃধা, ধানদী গ্রামের আহেদ রাঢ়ী, আলতু রাঢ়ী, বড়ডালিমা গ্রামের জাহাঙ্গির মৃধা, তালতলী গ্রামের ছোবহান হাওলাদার, ভরিপাশা গ্রামের সেলিম গাজীসহ অনেক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া নদী পাড়ে কেবল মঠবাড়িয়া কিংবা ঘুচরকাঠিই নয়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলেও শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ করেছে।
ঘুচরাকাঠি গ্রামের বশার হাওলাদার জানান, ক্ষণিকাটা (শীষ কাটা) লেদা পোকার আক্রমণে তার চাষের স্থানীয় মাপের প্রায় তিন কানি জমির স্থানীয় জাতের মোতামোটা, ইরি-৫২, স্বাক্ষরখোড়া ধান বিনষ্ট হয়েছে। একই পোকার আক্রমণ স্থানীয় মাপের ২ কানি জমির ধান বিনষ্ট হওয়ার পথে মঠবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গির খানের।
ধানদী গ্রামের কৃষক রহিম মৃধা বলেন, ‘ধানের বাজার দর ভালো অইলে কি আর না অইলেওই বা কি। এবার প্রায় দেড় একর জমির ধানই বিনষ্ট হয়ে গেছে কেবল পোকার আক্রমণে।’ এদিকে পোকার আক্রমণে মোহাম্মদ আলী নামে একই গ্রামের অপর এক কৃষকের এক একর জমির ধানের শীষই বের হয়নি বলে জানান। তিনি বলেন ‘বাজারের ওষুধেও কোনো কাজ করে নেই।
এবার বৃষ্টিপাতের কারণে সঠিক সময়ে ধানক্ষেত শুকাতে পারেনি। স্যাঁতসেঁতে ভাব এখনো ক্ষেতে। দিনের বেলায় লেদা পোকা ধানের গোছার গোড়ায় লুকিয়ে থাকে আর রাতে শীষ কাটে। ধান খায় না। শীষ ও শীষের কানা কেটে ধান বিনষ্ট করছে। গত বছর আর চলতি মৌসুমের মতো ১৫-২০ বছরেও লেদা পোকার এমন মারাত্মক আক্রমণ হয়নি। ক্ষেতে এখন ঝরা ধান ছড়িয়ে আছে।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের অ্যানটোমলোজির প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, পরিমিত মাত্রায় বৃষ্টিপাত না হওয়া, তাপমাত্রা কিংবা গাছ থেকে গাছের দূরত্বের কারণে পাতার সংখ্যাা বেড়ে গিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ধানের শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ হতে পারে। শীষ যখন বের হয়ে আসে তখন শীষ কাটা এই লেদা পোকা আক্রমণ করে। এই মথগুলো এক একটি ২-৩শ’ ডিম দেয়। আর মাত্র একজোড়া মথই একটি ফসলের জমি ধ্বংস করতে যথেষ্ট। প্রাথমিক স্টেজে সচেতন থেকে কৃষদের উচিত এই মথগুলো মেরে ফেলা বা কন্টোলে নিয়ে আসা। কৃষি বিভাগেরও উচিত এই শীষ কাটা মথটিকে কৃষকদের চিনিয়ে দিয়ে সচেতন করা। রাতে এগুলো সক্রিয় থাকে। সহজে ও কম খরচে আলোর ফাঁদ, আক্রান্ত জমিতে গর্ত করে পাতা জমিয়ে রেখে সেখানে এগুলোকে আশ্রয় নিতে দিয়ে, পাকা শুরু হওয়ার আগে কেরসিনে ভিজিয়ে ধানের ওপর রশি টেনে দিয়ে ও আক্রান্ত ক্ষেতের অংশের চারপাশে ছাই ছিটিয়ে দিয়ে পোকাগুলো মেরে নিয়ন্ত্রণ করা। একই জমিতে বারবার একই ফসল ফলানো হলে, ফসল তুলে নিয়ে গাছের গোড়াগুলো পুড়িয়ে জৈব সার হিসেবে জমিতে মিশিয়ে দেয়া উচিত। কৃষি অফিসের উচিত কৃষকদের আবহাওয়ার সতর্কবার্তা দেয়া ও লিফলেট বিতরণের মতো কাজের মাধ্যমে কৃষকদের সতর্ক করা।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের লোকজন লিফলেট বিতরণসহ মাঠে কৃষকদের সচেতন করে নিয়মিত প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সার্বক্ষণিক ক্ষেতের অবস্থা জানানোর জন্য কৃষকদেরও অনুরোধ করা হয়েছে।’

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর