গাজীপুরের শ্রীপুরের কর্ণপুর গ্রামে জানের খালে বাঁধ দিয়ে মাটির ব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে আব্দুস সালাম নামের এক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এই খালে বাঁধ তৈরি করায় খালের পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে স্থানীয় কৃষকদের কৃষিচাষে প্রতিবন্ধকতাও তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্নপুর, পেলাইদ ও দড়িখোঁজেখানি গ্রাম কৃষি প্রধান এলাকা। আর এই এলাকার কৃষকের কৃষি উৎপাদনের অন্যতম সহায়তা কেন্দ্র এই জানের খাল। কৃষিজমিতে পানি সেচ, বীজতলা তৈরী সহ নানা ভাবে এই খালটি প্রতিবছর মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার এলাকা ঘুরে খালটি শীতলক্ষ্যায় সংযুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি এই খালের পেলাইদ- দড়িখোঁজেখানি বীরমুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন সড়কের কর্নপুর অংশে মাটি দিয়ে বাঁধ তৈরী করেছেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা।
আবদুস সালাম নামের এই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম নেমে গেলেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তার প্রধানত ব্যবসা মাটি বিক্রি।
স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গ্রামীণ সড়কে ড্রাম্প ট্রাক (ভারী যানবাহন) ব্যবহার করে নষ্ট করেছেন প্রতিনিয়ত। গোসিঙ্গা ইউনিয়নের বনের জমি থেকেও মাটি কেটে বিক্রি করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, তারা মূলত চার-পাঁচজন এই মাটির ব্যবসা পরিচালনা করেন। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা, আসন্ন কাউন্সিলে তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী। সরকারি খালে বাঁধ তৈরী করার বিষয়ে তিনি জানান, এই সড়কে কোন সেতু না থাকায় ভারী যানবাহন চালানো যায় না। তাই সড়কের মধ্যে বাঁধ তৈরী করে সড়ক নির্মান করেছেন। যা দিয়ে তিনি মাটি সরবরাহ করেন। তবে তিনি আলোচনা করে দেখবেন যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পানি প্রবাহ চলমান রাখতে সরকারী খালে পাইপ স্থাপন করবেন।
স্থানীয় কর্নপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই খালে বাঁধ তৈরী করায় কয়েকদিন ধরে খালের একটি অংশ পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। বোরো মৌসুমের বীজতলা তৈরী হতো এই খালের পানি দিয়ে। বাঁধের ফলে অনেকেই পানি পায়নি। এই বাঁধ থাকলে বোরো ধানের জমিতেও সেচ দেয়া নিয়েও আশংকা তৈরী হয়েছে।
এ বিষয়ে গোসিঙ্গা ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব জানান, সরকারি খালে বাঁধ দেয়ার যেমন সুযোগ নেই তেমনি পানির প্রবাহের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করারও সুযোগ নেই। এ বিষয়টি আমাদের এখন পর্যন্ত কেউ অবহিত করেনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলিম মোস্তারী বলেন, সরকারী খালে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই। বাঁধ অপসারণপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।