× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনা ও ভ্যাকসিন

মত-মতান্তর

ড. মাহফুজ পারভেজ
১৩ ডিসেম্বর ২০২০, রবিবার

বৈশ্বিক মহামারি করোনার দীর্ঘ প্রকোপের মধ্যেই পৃথিবী প্রবেশ করেছে ভ্যাকসিনের যুগে। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তর পেরিয়ে মানবদেহে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। অচিরেই পর্যায়ক্রমে বিশ্ববাসী টিকার আওতায় চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভ্যাকসিনের সঙ্গে সঙ্গে চলবে রাজনীতি ও ব্যবসা। কোন দেশ আগে টিকাকরণ সম্পন্ন করতে পারবে, চলবে সে প্রতিযোগিতাও, যাতে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে রয়েছে পৃথিবীর ধনী দেশগুলো। উৎপাদক কোম্পানিগুলোও ভ্যাকসিন নিয়ে নানা লাভজনক খেলায় মেতে উঠবে। আসল ভ্যাকসিনের সঙ্গে সঙ্গে উদ্ভব হবে নকল ভ্যাকসিনেরও। বিশাল পৃথিবীর বিপুল জনসংখ্যার চাহিদা সামনে রেখেই আবর্তিত হবে ভ্যাকসিনের প্রসঙ্গ।

২০২০ সাল যেমনভাবে করোনা কবলিত হয়েছে, তেমনিভাবে ২০২১ সাল হবে ভ্যাকসিন কবলিত।
বলা যায়, করোনা আর ভ্যাকসিনের ইস্যুগুলো চলবে হাত ধরাধরি করে। কারণ, ভ্যাকসিন এলেই করোনা পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যাবে, এমন কথা কেউই বলছেন না। বরং করোনার নানা রকম গতি পরিবর্তন এবং রূপ বদলেরও আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। অর্থাৎ রোগ আর মানুষের লড়াইটি কিছুটা স্তিমিত হলেও চলতেই থাকবে।

সর্বশেষ একটি গবেষণা তথ্যে এমনই আভাস পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে, মানব জিনের মারপ্যাঁচেই করোনা সংক্রমণের বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভরশীল। এজন্যই রোগাক্রান্ত কারও কারও ঠাঁই হচ্ছে আইসিইউয়ে, কেউ স্রেফ বাড়িতে থেকে সেরে উঠছেন।

এডিনবরা ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ পত্রিকায়, যাতে এসব তথ্য উপস্থাপিত হয়। একদল গবেষক ২০৮টি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি ২৭০০ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা-রোগীর ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন যে পাঁচটি জিনের গড়বড়ের কারণেই সংক্রমণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

করোনার জন্য যে পাঁচটি জিনকে সরাসরি সম্পৃক্ত ও দায়ী করা হয়েছে, সেগুলো মূলত দেহের ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা (অ্যান্টিভাইরাল ইমিউনিটি) বৃদ্ধি করে এবং ফুসফুসে প্রদাহ রুখতে সাহায্য করে। জিনগুলো হল— আইএফএনএআর২, টিওয়াইকে২, ওএএস১, ডিপিপি৯ এবং সিসিআর২।

এডিনবরার ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিনের পরামর্শদাতা-গবেষক কেনেথ বেলি জানিয়েছেন, ‘আমাদের এই গবেষণা কোনও ওষুধের কার্যকারিতা বুঝতে সাহায্য করবে।’ অর্থাৎ, সম্ভাব্য ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পরীক্ষা করে দেখা হবে, ওই জিনগুলোর উপরে ওষুধের প্রভাব কতটা জোরদার। আবার বাজারে থাকা প্রদাহজনিত রোগের ওষুধগুলো করোনার চিকিৎসায় ভাল কাজ দিতে পারে কি না, সেটাও এই জিনগুলো জানিয়ে দেবে। রোগের বিরুদ্ধে ওষুধের গুণ ও মান বাড়ানোর পথও দেখিয়ে দেবে এই গবেষণা।

যেমন বেশ কিছু অ্যান্টি- ইনফ্লেমেটরি ওষুধ (আরথ্রাইটিসের ওষুধ ব্যারিসাইটিনিব) করোনার চিকিৎসার ভাল কাজ দিতে পারে বলে দাবি কেনেথের। তাঁর নেতৃত্বাধীন গবেষক দলটি আরো জানিয়েছে, চিহ্নিত পাঁচটি জিনের মধ্যে আইএফএনএআর২-র কার্যকারিতা বাড়ানো গেলে, করোনা সংক্রমণ রুখে দেওয়া অনেকটাই সহজ হবে। কোন ওষুধ সেটা পারে তা খুঁজে বের করতে হবে কিংবা ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন গবেষকরা

করোনা প্রতিরোধে বিশ্ব জুড়ে শত শত গবেষণা চলছে। এসব গবেষণার মাধ্যমেই নানা কোম্পানি ভ্যাকসিনের দিশা পেয়েছে। গবেষণার হাত ধরেই অদূর ভবিষ্যতে সম্ভব হবে ভ্যাকসিন ও বিভিন্ন ঔষধের মাধ্যমে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে প্রশমিত ও পরাজিত করা। রোগ ও জরার বিরুদ্ধে এভাবেই বিজয়ী হয়ে এগিয়ে নিয়ে চলছে পৃথিবীর চাকা আর মানব সভ্যতার জয়রথ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর