এখনো কঠিন পরিস্থিতি চলছে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমি সবসময় প্রার্থনা করে থাকি। ‘ঈশ^র তুমি আমাকে সঠিক কাজটি করতে সাহায্য করো।’ আমি প্রার্থনা করি সঠিক পথটি খুঁজে পেতে এবং সঠিক কাজটি করার সাহস পেতে। বেশির ভাগ সময় আমি পরিবারের সকলেই যেন নিরাপদে থাকে সেজন্য প্রার্থনা করি। আমি জানি কতটা ঝুঁকি রয়েছে।
আমি আমার মায়ের কথা ভাবি যে, তিনি কত কিছুই না করতেন। আমি জানি তিনি বলতেন শাস্তি দেয়ার আগে ধৈর্য ধরে কথা শুনতে। কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর জন্য কঠিনভাবেই তৈরি হয়ে নিতে হয় কারণ এর পরিণতি কি হবে তা জানা নেই।
কিন্তু তোমার শক্তির ওপরই নির্ভর করছে তুমি সঠিক পথে আছো কি না? এবং তুমিই জানবে তোমাকে কি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সেই দিনগুলোতে আমার পাশে বন্ধু হিসেবে ছিল অ্যাটর্নি জেনারেল বো বাইডেন এবং দিলাওয়ারস। ফোরক্লোজার সংকটে এবং ব্যাংকিক জটিলতায় দিলাওয়ারস এবং বো বাইডেনের রাজ্যে অন্যদের তুলনায় পরিস্থিতি ভালো ছিল। যেকোনো কারণেই হোক বোকে ছাড় দিতে হয়েছিল এবং যা চলছিল তা চলতে দিতে হচ্ছিল। তবে বো সেরকম মানুষ ছিলেন না। তিনি ছিলেন নিষ্ঠাবান এবং সাহসী।
একেবারে শুরু থেকেই তিনি ধারাবাহিকভাবে চুক্তিটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। আমি যেসব পয়েন্ট তুলে ধরেছিলাম তিনি তাতেই জোর দিয়েছিলেন। পয়েন্টগুলো ছিল: আর্থিক সঙ্গতি না থাকা এবং প্রতারকদের বিরুদ্ধে তদন্তের সুযোগ না থাকা। আমার মতোই তিনি সাক্ষী এবং নথিপত্র চাইছিলেন। সে এর জন্য প্রমাণ চেয়েছিল যে ব্যাংকগুলো ফোরক্লোজিংয়ে কীভাবে মটগেজের মালিক হয়েছিল। তিনি কখনই তার অবস্থান থেকে নড়েননি। তিনি তার নিজের মতো করে তদন্তকাজ শুরু করেছিলেন এবং আমাদের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করছিলেন। এমন একটি সময় গেছে যখন তীব্র চাপের মধ্যে তখন প্রতিদিনই বো এবং আমি কথা বলতাম। এমন হয়েছে দিনে একাধিকবারও কথা বলতাম তার সঙ্গে। আমরা একে অন্যকে সহযোগিতা করতাম।
এই যুদ্ধে আমার আরেক গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধা ছিলেন মার্থা কোকলে। ম্যাসাচুসেটসের আ্যটর্নি জেনালের মার্থা ছিলেন তার কাজের জায়গায় অসম্ভব চৌকস, কড়াকড়ি এবং সাবধানী। আমার এখনকার সিনেট কলিগ ক্যাথরিন কোর্থেজ মাসতো নেভাদার অ্যাটর্নি জেনারেল থাকার সময় ভীষণভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার মতো নেভাদাও সংকটে নিমজ্জিত হয়েছিল। ২০০৭ সালে ক্যাথরিন দায়িত্ব নেয়ার পর ২০০৮ সালে তিনি তার নিজস্ব মটগেজ ফ্রড স্টাইক ফোর্স গঠন করেন। তিনি আমার মতোই ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছিলেন দৃঢ়চিত্ত। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে আমরা দু’জন মিলে ফোরক্লোজার প্রতারক প্রমাণ করতে যৌথভাবে কাজ শুরু করি। তার মতো আগ্রহী সহযোগী আর হতেই পারে না।
এ ঘটনা যখন তুঙ্গে তখন আমি আমার টিম নিয়ে দেশের নানাপ্রান্তে ছুটেছি। আমি কোনদিনও ভুলবো না যে দিন কুয়াশার মধ্যে আমাদেরকে শীতের পোশাকে ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়তে হয়েছিল শুধু যাচাই করতে যে ঐদিনই আমাদের ফ্লোরিডা যেতে হবে কিনা? ব্রায়ান এবং আমি জর্জ টাউনের একটি পোশাকের দোকানে আবহাওয়া উপযোগী পোশাক কিনেছিলাম। মুহূর্তটি ছিল বিব্রতকর। আমরা একে অপরের পোশাকের রুচি নিয়ে সমালোচনা করছিলাম।
জানুয়ারি নাগাদ ব্যাংকগুলো হতাশ হয়ে পড়লো। মাইকেল আমার অফিসে এলেন। মাইকেল তাকে বলেছে, আমি জেনালের কাউন্সেল জেপি মর্গানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। আমি তাকে বলেছি, চুক্তিটি যাই হোক আমরা আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করবো না।
আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, তিনি কি বলেছেন।
সে আমার প্রতি ক্রোধান্বিত স্বরে বললো, এটি শেষ। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। এখন বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। তিনি ফোন রেখে দিলেন।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে