× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হামলার নিন্দা জেনারেলদের / অভিশংসনের প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদে

প্রথম পাতা

হেলাল উদ্দীন রানা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
১৪ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

উত্তেজনায় কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। আরো সহিংসতার আশঙ্কা এবং নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা পড়েছে এই ফেডারেল রাজধানী। ৬ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে নৃশংস, নারকীয় হামলার নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট স্টাফের চেয়ারম্যান এবং সকল বাহিনীর প্রধানরা। সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলদের এই বিবৃতি খুবই বিরল। তারা বিবৃতিতে বাহিনীর সদস্যদেরকে সকল চরমপন্থা প্রত্যাখ্যান ও সংবিধানকে রক্ষা এবং সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রত্যেক রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় ব্যাপক নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে গতকাল প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোট হওয়ার কথা।
এর পক্ষে ভোট দেয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের কমপক্ষে চারজন সদস্য। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনিও। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোট বা ভোটের ফল পাওয়া যায়নি। তবে অভিশংসন নিয়ে সতর্কতা দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি ৬ই জানুয়ারির ঘটনায় কোনো অনুশোচনা না করেই বলেছেন, অভিশংসন নিয়ে ক্ষোভ ও বিভক্তি বাড়ছে দেশে। এতে আরো সহিংসতা দেখা দিতে পারে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি, বার্তা সংস্থা রয়টার্স, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট।
অভিশংসনের আগে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী সক্রিয় করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এক পত্রে তিনি হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে একথা জানিয়ে দিয়েছেন মঙ্গলবার। স্পিকার পেলোসি তাকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ফলে অভিশংসনের বিল নিয়ে বুধবার কংগ্রেসে আলোচনা হওয়ার কথা। সিনেটের মেজরিটি লিডার মিচ ম্যাকনেল তার সহকর্মীদের বলেছেন, ট্রাম্প অভিশংসনের অপরাধ করেছেন। ম্যাকনেল মনে করেন ট্রাম্পকে ইম্পিচ করা গেলে রিপাবলিকান পার্টি থেকে ট্রাম্প ও তার ট্রাম্প-ইজমের প্রভাব ঝেড়ে ফেলা যেতে পারে।
ক্ষমতার বাকি মেয়াদে ট্রাম্পের উপর নিষেধাজ্ঞা বা সেন্সরশিপ আরোপ করতে রিপাবলিকানরা কংগ্রেসে একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। পেনসিলভেনিয়ার কংগ্রেস সদস্য ব্রায়ান ফিটজপ্যাট্রিক এটি উত্থাপন করেন। তারা ইম্পিচমেন্টের বিকল্প হিসেবে এই প্রস্তাব এনেছেন। হাউসের প্রভাবশালী রিপাবলিকান কংগ্রেস উইমেন লিজ চেনি সহ অন্তত ৪ জন রিপাবলিকান সদস্য ইম্পিচের পক্ষে ভোট  দেবেন বলে আগেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন। ফলে ট্রাম্পকে ইম্পিচমেন্টের পক্ষে সমর্থন বাড়ছে। তবে অনেক রিপাবলিকান সদস্য ট্রাম্পের সমালোচনা করলেও ইম্পিচের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে, জয়েন্ট স্টাফের চেয়ারম্যন মার্ক মিলি, এয়ারফোর্স প্রধান জন হিতেন, আর্মি জেনারেল জেমস ম্যাকনভিল, মেরিন কোরের জেনারেল ডেভিড বার্গার, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মাইকেল গিলডে, এয়ারফোর্স জেনারেল জন চার্লস ব্রাউন জুনিয়র, স্পেইস ফোর্স প্রধান জেনারেল জন রেমন্ড ও ন্যাশনাল গার্ড প্রধান জেনারেল ড্যানিয়েল হকারসন যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিলিটারি সদস্যরা সংবিধানকে রক্ষা করেই কাজ করবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের সকল আইনানুগ নির্দেশ পালনে তারা সব সময় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমেরিকার জনগণের জানমাল রক্ষা করা তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
অপরদিকে, এফবিআই ক্যাপিটল হিলে সন্ত্রাসী ঘটনায় এ পর্যন্ত শতাধিক ক্রিমিন্যাল মামলা দায়ের করেছে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আরো শত শত মামলা দায়ের হতে পারে। এফবিআই-এর এজেন্ট ও ফিল্ড অফিসাররা দেশব্যাপী অপরাধীদের খোঁজে চিরুনি অভিযান শুরু করেছেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এতকিছুর পরও নির্বিকার। মঙ্গলবার টেক্সাসে তার নির্মিত বর্ডারওয়াল পরিদর্শনে যাবার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি শান্তিপ্রিয় মানুষ। সহিংসতার বিরুদ্ধে তিনি চমৎকার বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট প্রস্তাব মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আরো সহিংসতা দেখা দিতে পারে। সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীকে তার জন্য কোনো ঝুঁকি মনে করছেন না। তার মাঝে কোনো প্রকার অনুশোচনার চাপ বা পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে এফবিআই এর আগে যে সহিংসতার সতর্কতা দিয়েছিল, তা এখন বাস্তব বলেই মনে হচ্ছে। ট্রাম্প যখন বলেছেন, আরো সহিংসতা হতে পারে, তখন তার এই মন্তব্যের মধ্যেই অনেক প্রশ্নের জবাব রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর