× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টস বিক্রয় নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার
(৩ বছর আগে) জানুয়ারি ১৪, ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:২২ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস (ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট) এর ব্যবহার তরুণ এবং যুব সমাজের মধ্যে উদ্বেগজনক হারে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বিক্রয় কেন্দ্র। রাস্তাঘাট, ক্যাম্পাস, তরুণদের আড্ডাস্থল, বিভিন্ন মার্কেট এবং রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ভ্যাপিং ক্লাবে এসব পণ্যের ব্যবহার ব্যাপকহারে চোখে পড়ছে। অনলাইন এবং ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ই-সিগারেট সামগ্রী নিয়ে আলোচনা, বিক্রয় ও হাতবদল হচ্ছে।
এসব পণ্য ব্যবহারের মাত্রা কতটা বিস্তার লাভ করেছে সে বিষয়ে সবশেষ কোন গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত নেই। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (GATS) ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠির মধ্যে পরিচালিত হয় বলে এই গবেষণার মাধ্যমে ইমার্জিং টোবাকো প্রোডাক্ট ব্যবহারে প্রকৃত চিত্র পাওয়া কঠিন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৭ সালে পরিচালিত GATS অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠির মধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহারের হার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

মূলত তরুণ এবং শিশুদের টার্গেট করে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এসব ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে তামাক কোম্পানিগুলো।
উদ্ভাবনী কৌশল এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে কিশোর এবং তরুণদের মাঝে বিশেষত বিদ্যালয়গামী শিশুদের মধ্যে এসব তামাকপণ্যের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা সহ বেশ কিছু দেশে এসব পণ্যের ব্যবহার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি আমেরিকায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে মাত্র ১ বছরের ব্যবধানে আমেরিকায় স্কুল পড়–য়া তরুণদের মধ্যে ই-সিগারেট ব্যবহার ৭৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।

সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠির ৪৯ শতাংশই তরুণ, যাদের বয়স ২৪ বছর বা তার নিচে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট সময়কাল অতিবাহিত করছে যেখানে, নির্ভরশীল জনগোষ্ঠির তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠির সংখ্যা বেশি। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট জনগোষ্ঠির অবদান অতি গুরুত্বপূর্ণ। তামাক কোম্পানিগুলোও এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠিকে যেকোন উপায়ে তামাকপণ্য ও ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট এ আসক্ত করে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং মুনাফা বৃদ্ধি করতে চায়। এজন্য তারা ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট ইত্যাদিকে সিগারেটের ‘নিরাপদ বিকল্প’ হিসেবে ভোক্তা এবং নীতিনির্ধারকদের সামনে উপস্থাপন করছে।

বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত WHO Report on Global Tobacco Epidemic ২০১৯ এ, ই-সিগারেটকে সুনিশ্চিতভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট ২০১৬ এ ই-সিগারেটসহ নিকোটিনযুক্ত সকল পণ্যকে ‘অনিরাপদ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালে ই-সিগারেট বা ভ্যাপিং-সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে মহামারির আকার ধারণ করলে এই ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টসগুলোর সত্যিকারের চেহারা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে ফুসফুসজনিত রোগে ভর্তি হওয়া মোট ২ হাজার ৮০৭ জন রোগী এবং এরমধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যুর সঙ্গে ই-সিগারেট/ভ্যাপিংয়ের যোগসূত্র থাকার কথা নিশ্চিত করেছে।
ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস (ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট) ব্যবহারের স্বাস্থ্যক্ষতি আমলে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশ এগুলো নিয়ন্ত্রণে/বন্ধে ইতোমধ্যে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাশর্^বর্তী দেশ ভারত ইতোমধ্যে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়াও শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ কমপক্ষে ২৪টি দেশ এসব পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে।

বাংলাদেশে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস এর ব্যবহার ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও এগুলো নিয়ন্ত্রণে/বন্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় নাই। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট অর্থাৎ ই-সিগারেটসহ সকল ভ্যাপিং এবং হিটেড তামাকপণ্যের উৎপাদন, আমদানি, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন বলে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো মনে করে।


 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর