× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনা চিকিৎসায় প্রতারণার ফাঁদ

বাংলারজমিন

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
১৬ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার

ঢাকার ধামরাইয়ে আবারো ভণ্ড সাধুদের প্রতারণা বেড়েছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষ। অনেক নারীরা হচ্ছেন ধর্ষণের শিকার। সাধুরা করোনাসহ সর্বরোগ সারানোর কথা বলে  ঝাড়-ফুঁক, পানি পড়া আর তাবিজ কবচ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লুটে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর তাদের এ প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় তারই পাতানো কয়েকজন চামচা। জানা গেছে, ধামরাইয়ের চৌহাট গ্রামের প্রফুল্ল চন্দ্র পালের ছেলে নিতাই চন্দ্র পাল ওরফে নিতাই  যিনি বছর কয়েক আগেও এলাকায় ঘুরে ঘুরে হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতো। সেই নিতাই আজ মস্ত বড় সাধু হয়েছে। যিনি সর্বরোগের চিকিংসা করেন ঝাড়, ফুঁক, আর তাবিজ-কবচ দিয়ে।
তার নাম ডাক ছড়িয়েছে ধামরাই ,পার্শ্ববর্তী সাটুরিয়াসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায়। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খালি গায়ে নারী পুরুষের চিকিৎসা করে থাকে। তার চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়েছেন এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। চৌহাট দক্ষিণপাড়া গ্রামের ওয়ারেজ মিয়ার ছেলে ভণ্ড কবিরাজ সালাম গুলজার এক গৃহবধূকে চিকিৎসার নামে ঘরে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। জানা গেছে, নিতাই সাধু করোনাসহ বন্ধ্যা নারীদের সন্তান হওয়া, অল্প বয়সে চুল পাকা, প্রতিবন্ধী শিশুদের ভালো করা, প্রেমিক-প্রেমিকাকে পাইয়ে দেয়া, জিন- ভূত তাড়ানো, যেসব নারীদের বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে হচ্ছে না ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস, আমাশা, গ্যাস্ট্রিক, পিত্তথলিতে পাথর, প্যারালাইস, বাতের ব্যথা, হাঁপানি, একশিরা, যৌন দুর্বলতা, আলসার, ব্যথা, স্বপ্নদোষ, সহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করেন। আর এতে রোগের ধরন দেখে চিকিৎসার ফি নিচ্ছেন মাত্র ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এসব কাজ করে তার এখন প্রতি মাসে আয় হয় প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। তবে স্থানীয় কয়েকজন জানান, নিতাই পালের কাছে চিকিৎসা নিতে এসে এক যুবক তার স্ত্রীকে নিয়েই পালিয়ে গেছে। যে নিজের স্ত্রীকে রাখতে পারে না সে আবার বশীকরণের চিকিৎসা কিভাবে করায়। তারা দ্রুত এসব ভণ্ডদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। সরজমিনে দেখা যায়, নিতাই সাধুর বাড়িতে ভোর বেলায় তার ছাপরা ঘরের আস্তানার সামনে পানির বোতল হাতে নিয়ে ধামরাই, সাটুরিয়া, মির্জাপুর, নাগরপুর এলাকার কয়েকজন ১০০ টাকা করে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। আর ছাপরা ঘরের ভেতর আসর বসিয়ে মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে খালি গায়ে নিতাই পাল রোগীদের ঝাড়-ফুঁক করছেন এবং আধা লিটার বোতলে পানি পড়া দিচ্ছেন। আবার যারা মাঝে মধ্যে পাগল হয়ে যান, তাদের দেয়া হচ্ছে তাবিজ-কবচ। এ ব্যাপারে নিতাই বাবার কাছে তার লেখাপড়া কতদূর  জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভাবের কারণে স্কুলে যেতে পারিনি। তবে এখন শুধু নাম লিখতে পারি। একপর্যায়ে নিতাই পাল সাংবাদিকদের বলেন, অভাবের কারণে দুই বছর আগেও গ্রামে গ্রামে ঘুরে হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করে সংসার চালিয়েছি। এখন নিজ বাড়িতেই আসর বসিয়ে সর্বরোগের পানিপড়া দিয়ে মানুষের কাছ থেকে যে টাকা পান তাতেই আর কোনো অভাব হয়না।

 তবে সাধারণ মানুষ এখনো বুঝতে পারেনি নিতাই পালের পুরোটাই প্রতারণা। গত কয়েক বছর যাবৎ তিনি কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। প্রতিনিয়তই প্রশাসনের চোখের সামনে এ প্রতারণা হলেও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর