× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পথে পথে ঘুরে বেড়ানো মিম-ইমরানের ঠিকানা হলো খুলনার শেখ রাসেল কেন্দ্রে

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
১৮ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার

 পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ওরা দু’জন। সম্পর্কে দু’জন মামাতো-ফুপাতো ভাইবোন বলে পরিচয় দেয়। কখনো বলছে আপন ভাইবোন। বাড়ি  কোথায় বলতে পারছে না। খুলনা   জেলার সেনের বাজার এলাকায় দিনের বেলায় ঘুরে বেড়ায়। মানুষ ২-১ টাকা যা দেয় তা দিয়েই কিছু কিনে খায়। রাতে ঘুমায় সেনের বাজার ফেরিঘাটের একটি রাস্তার পাশে। রাস্তা থেকে তুলে আনা এ দু’টি শিশুর জন্য আশ্রয় হলো খুলনার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।
তারা দু’জনেই এখন হাসিখুশি। কেন্দ্রের অন্য শিশুদের সঙ্গে তারা হেসে-খেলে বেড়াচ্ছে। ছেলেটি বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা মোড়স্থ বালক কেন্দ্রে আর মেয়েটি গল্লামারীর বালিকা কেন্দ্রে।
কেন্দ্র পরিদর্শনকালে কথা হয় ৯ বছর বয়সী খাদিজা আক্তার মীম’র সঙ্গে। কথা বলতে বলতে মীম জানায়, তার বাবার নাম খোকন আর মায়ের নাম সাবানা। বাড়ির কথা জানতে চাইলেই জানায়, ‘বাড়ি নাই’। কোথায় থাকতো জানতে চাইলে বলে, ‘ফেরিঘাটে’। এর বাইরে আর কিছুই বলতে পারে না মিম। মিমের ছোটভাই ইমরান হেলালকে (৮) রাখা হয়েছে জলমা মোড়স্থ শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (বালক)। রূপসা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেয়া তথ্যমতে, ইমরান হেলালের পিতার নাম বলা হয় জুয়েল আর মায়ের নাম লাবণী।
সেনের বাজার ফেরিঘাট থেকে গত ১৪ই জানুয়ারি তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন আক্তার তাদেরকে মাতৃস্নেহ দেন। এরপর তাদের অভিভাবকের খোঁজ না পেয়ে হস্তান্তর করা হয় এ কেন্দ্রে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ওই কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক বিপ্লব সাহা বলেন, পথশিশুসহ অসহায় শিশুদের আশ্রয় দেয়া হয় এ কেন্দ্রে। ছেলেদের রাখা হয় বালক কেন্দ্রে আর মেয়েদের বালিকা কেন্দ্রে। প্রথমে তাদেরকে কাউন্সিলিং করা হয়। এরপর তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের সন্ধান পেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিগত এক বছরে ১৭ জন শিশুকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও তিনি জানান। যতদিন তারা কেন্দ্রে থাকে ততোদিন তাদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বর্তমানে বালক কেন্দ্রে ৫৬ জন এবং বালিকা কেন্দ্রে ১১২ জন শিশু রয়েছে বলেও তিনি জানান। পরিবার থেকে যেকোনোভাবে হারিয়ে যাওয়া ১৩টি শিশু রয়েছে এ দু’টি কেন্দ্রে। তাদের পরিবারের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রের শিশুদের জন্য কেন্দ্র অভ্যন্তরেই রয়েছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা। এর বাইরেও পাশর্^বর্তী মোহাম্মদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৬ জন পড়াশোনা করছে। এ বছর পাশর্^বর্তী এ এইচ দেলদার আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৫ জন লটারিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। চারজন রয়েছে অপেক্ষমাণ তালিকায়। এভাবেই অসহায় ও পথহারা শিশুদের আশ্রয় দিচ্ছে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।
রূপসা উপজেলার সেনের বাজার থেকে উদ্ধার হওয়া শিশু খাদিজা আক্তার মিম ও ইমরান হেলাল সম্পর্কে কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক বিপ্লব সাহা বলেন, দু’জনের সঙ্গেই তিনি পৃৃথকভাবে কথা বলেছেন। রূপসার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তারা মামাতো-ফুপাতো ভাইবোন পরিচয় দিলেও এখন বলছে আপন ভাইবোন। তাদের ঘরে সৎ মা ছিল বলেও তারা জানায়। বাবা তাদের রেখে কোথায় যেন চলে যান। সৎ মায়ের অত্যাচার সইতে না পেরে তারা ঘরছাড়া হয়েছে বলেও জানায়। তাদের বাড়ি বরিশালের দিকে হতে পারে বলেও সংশ্লিষ্টদের ধারণা। তাছাড়া তাদের কথাবার্তায়ও এমনটি আঁচ করা যায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর