সৈয়দ নাহাস পাশা কলমে ও মননে মানবিক বোধসম্পন্ন।
২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি আমি বিলেত এসেছি। পরের দিন ২৭ জানুয়ারি ছুটে গেছি সাপ্তাহিক নতুন দিন অফিসে। নতুন দিন সম্পাদক ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মহিব চৌধুরী একজন সাহসী ব্যক্তিত্ব ও দৃঢ়চেতা সংগঠক। দেশ থেকে আসার আগেই তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মহিব চৌধুরী যখন আমাকে নতুন দিন অফিসে স্বাগত জানালেন, তখন সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন নতুন দিনের নির্বাহী সম্পাদক বর্তমানে জনমতের সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, সহকারী সম্পাদক ও বর্তমানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ ফারুক প্রমুখ।
এই দিনটি বিলেতের জীবনে আমার কাছে বেশ স্মরণীয়। নতুন দিন পরিবারের সদস্য হিসেবে তারা আমাকে বরণ করে নিলেন। একই সাথে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবেও আমাকে সংযুক্ত করে নেন। অবশ্য নতুন দিনে আমার অনেক লেখা আগেও প্রকাশিত হয়েছে। নতুন দিন সম্পাদকের বড় ভাই সিলেটের বরেণ্য সাহিত্যিক, সংলাপ সাহিত্য-সংস্কৃতি ফ্রন্টের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডিয়াম মেম্বার কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী পাঠাতেন। আমি তখন সংলাপ ফ্রন্টের সেক্রেটারি জেনারেল এবং জাতীয় দৈনিকে কাজ করি। আমার লন্ডন আসার পূর্বেই কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী নতুন দিনে আমার নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে ২০০৩-৫ সালের নির্বাহী কমিটিতে আমি যুক্ত হই। তখন মহিব চৌধুরী সভাপতি ও সৈয়দ নাহাস পাশা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই সময় আমরা প্রেস ক্লাবের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্হুমুখি কার্যক্রম পরিচালনা করি। ক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও লাইফ মেম্বার বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এক নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়। লাইফ মেম্বার ও সুধী জনের সাথে ক্লাবের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্য সৈয়দ নাহাস পাশা নির্বাহী সদস্যদের নিয়ে গ্রেট বৃটেনের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরেছেন। আজকে প্রেসক্লাবের যে বিশাল ফান্ড তৈরী হয়েছে তার মূখ্য ভূমিকা মুহিব-নাহাস কমিটির মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। সৈয়দ নাহাস পাশা পরবর্তীতে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সাফল্যের সাথে সামগ্রিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন।
লন্ডনে বাংলাদেশি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশনা শিল্প যাদের হাতে পেশাদারিত্ব অর্জন করেছে, সৈয়দ নাহাস পাশা তাদের একজন। সাপ্তাহিক সুরমার প্রতিষ্ঠাতা ডা. বশির আহমদের মেধাবী সন্তান তোফায়েল আহমদ, সারওয়ার আহমদ ও সারজমিন আহমদ কর্তৃক এথনিক মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশনা এশিয়ান উইমেন ম্যাগাজিন, এশিয়ান ব্রাইট ম্যাগাজিন, এশিয়ানা ওয়েডিং ইত্যাদি, সংবাদ সংস্থা মিডিয়া মহলের প্রকাশনা ইউকে-বাংলা ডাইরেক্টরি, ইউকে-এশিয়ান রেষ্টুরেন্ট ডাইরেক্টরি ও ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডাইরেক্টরি মুসলিম ইনডেক্স, বৃটিশ কারি এওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলী এমবিই‘র স্পাইস বিজনেস এবং সৈয়দ নাহাস পাশার কারি লাইফ ম্যাগাজিন ও কারি শেফ ম্যাগাজিন বাংলাদেশি মালিকানায় শীর্ষ প্রকাশনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
সৈয়দ নাহাস পাশা সম্পাদিত কারি লাইফ ম্যাগাজিন একটি মান সম্পন্ন কাগজ। গুণে, প্রচ্ছদে, মুদ্রণ সৌকর্যে ম্যাগাজিনটি সব সময় প্রথম কাতারে রয়েছে। জনপ্রিয় এই ম্যাগাজিনে ইংরেজীতে নিয়মিত কারি শিল্প নিয়ে মূলধারার পাঠকদের কাছে আমাদের সাফল্য গাঁথা তুলে ধরা হয়। কারি লাইফ মূল ধারায় বৃটেনে কারি হাউসের অন্যতম মূখপাত্র হিসেবে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। এই দায়িত্ব কারি লাইফ দীর্ঘদিন থেকে অত্যন্ত গৌরব ও গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে।
সৈয়দ নাহাস পাশা সম্পাদিত শেফদের জন্য কারি লাইফ মিডিয়া গ্রুপের নতুন প্রকাশনা কারি শেফ ম্যাগাজিনও বিলেতে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। কারি শেফ হচ্ছে বাংলা ভাষায় একটি মান সম্পন্ন ম্যাগাজিন। প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর প্রকাশিত হয়। এতে রয়েছে আমাদের রন্ধন শিল্পের কারিগর তথা শেফ সংবাদ, বাঙালি খাবার, রসদ ও পণ্যসামগ্রী ইত্যাদির খবরা খবর। আরো একটা বৈশিষ্ট হলো, পুরো রেষ্টুরেন্ট ও খাবার ব্যবসার সাথে জড়িত দেশ-বিদেশের বিশাল বাঙালি ভোজন রসিকদের ভালোমন্দ এবং সাফল্য ও ব্যর্থতার কথা, বাঙালী খাবার নিয়ে বৃটেন সহ আমাদের বিশ্ব জয়ের কাহিনী।
সৃজনশীলতায় অবিচল, ভালোবাসার মেলবন্ধনে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ সৈয়দ নাহাস পাশা সাংবাদিকতা ও সমাজসেবা সহ সব ক্ষেত্রেই নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানব কল্যাণে তিনি শতায়ু হোন।