× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

১০ দিনেও ক্লুলেস অভিনেত্রী আশার মৃত্যু

এক্সক্লুসিভ

শুভ্র দেব
১৮ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার

সড়ক দুর্ঘটনায় অভিনেত্রী আশা চৌধুরী নিহত হওয়ার ১০ দিন পার হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত সেই ঘাতক ট্রাককে শনাক্ত করা যায়নি। পাশাপাশি ট্রাক চালককে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ছাড়া এখনো মিলেনি আশার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। ফলে ওই রাতে আশাকে নেশা জাতীয় কোনো কিছু খাওয়ানো হয়েছিল কি-না সেটিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ ও ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভিডিও ফুটেজে অনেকটাই স্পষ্ট দেখা যায় একটি ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে আশার মৃত্যু হয়েছে। তাই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘাতক ওই ট্রাকটি শনাক্ত করে তার চালককে আটক করা। কারণ ওই ট্রাকের চালকই প্রধান প্রত্যক্ষদর্শী ও আসামি।
চালককে আটক করতে পারলে ঘটনার কিছুটা বিবরণ পাওয়া যাবে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশার পরিবারের তথ্যমতে ওইদিন আশা রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আশা ওই সময়ের ভেতরে বাসায় ফিরেনি। রাত ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে শামীম আহমেদ ফোন করে আশার মাকে জানান আশা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। তাই সাড়ে ১১টা থেকে বাকি সময়টুকু তারা কোথায় ছিল বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শামীমের সঙ্গে কথা বলে তারা জানতে পেরেছেন ওই রাতে চিকেন ফ্রাই কেনার জন্য তারা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছেন। গভীর রাতে দোকান খোলা না পেয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ঘুরেছেন। একপর্যায়ে তারা শ্যামলীর একটি হোটেলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আশার পরিবার অভিযোগ করেছেন, শামীম হয়তো ওই রাতে বেপরোয়া ড্রাইভিং করেছে। ফলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। যদিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে ইউটার্ন নিয়ে এমন একটি গাড়ির পেছনে দাঁড়ানো অবস্থায় পেছন থেকে আসা আরেকটি ট্রাক এসে তাদের বহনকারী মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা আশা ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েন রাস্তায়। এ সময় ওই ট্রাকটি তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। পুলিশ বলছে, ঘটনার আগে শামীম নেশা জাতীয় কিছু আশাকে খাইয়েছিল কি-না এটি জানার জন্য মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গাড়ি শনাক্তের জন্য প্রযুক্তিগত সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে ওই ট্রাকটি যেদিকে গেছে তার সবক’টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সাহায্য নেয়া হয়েছে বিআরটিএ বিভিন্ন ডিভাইসের। গাড়ি শনাক্তে কাজ করছে ডিবির একটি টিম। কিন্তু কোনোভাবেই গাড়ির নম্বর প্লেটটা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। কারণ ওই গাড়ির সামনে বা পেছনে কোনো নম্বর প্লেট নাই। এমনি একটি জায়গায় নম্বর প্লেটটি রাখা হয়েছে সেটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ছে না।
আশার বাবা আবু কালাম গতকাল মানবজমিনকে বলেন, আমাদের মেয়ে চলে গেছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ছিল আশা। তার আয়েই সংসার চলতো। করোনার পর থেকে আমি ব্যবসাতে নিয়মিত না। এখন আমাদের পরিবার অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে চলছে। আগামী মাসে বাসা ভাড়া দেয়ার উপায় নাই। তিনি বলেন, পুলিশ এখনো ঘাতক ট্রাকটি উদ্ধার করতে পারে নাই। ঘটনার আগে আমার মেয়েকে নিয়ে শামীম কোথায় গিয়েছে কি করেছে সেটি জানতে পারি নাই। শামীম আমাদের কাছে একেকবার একেক কথা বলেছে। সত্যটা এখনো জানতে পারি নাই।  
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক সোহান আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টও পাইনি ঘাতক গাড়িটাকেও শনাক্ত করতে পারি নাই। সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি। গাড়ির নম্বরটি এমনভাবে রাখা হয়েছে সিসি ক্যামেরায় দেখে কোনোভাবেই শনাক্ত করা যাচ্ছে না। বিআরটিএ ও গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতা নিয়েও কাজ হয়নি। বিআরটিএ’র ডিভাইস ব্যবহার করে কাজ হয়নি। আর মেডিকেল রিপোর্ট দ্রুত পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি।
৫ই জানুয়ারি দিবাগত রাতে বনানী থেকে রূপনগরের বাসায় ফেরার পথে টেকনিক্যাল মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন অভিনেত্রী আশা চৌধুরী। পরে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরের দিন আশার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে সড়ক আইনের ১০৫ ধারায় দারুস সালাম থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আশাকে বহনকারী মোটরসাইকেল চালক শামীম আহমেদ ও অজ্ঞাত ট্রাকের চালককে আসামি করেন। পুলিশ শামীম আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে। শামীম এখন কারাগারে রয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর