নব্বই দশক থেকে অভিনয় করছেন আরজুমান্দ আরা বকুল। একটা সময় নিয়মিত অভিনয় করলেও এখন আর তাকে আগের মতো পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে পর্দায় দেখা মেলে। কেন অভিনয় থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন? আরজুমান্দ আরা বকুল বলেন, আমি শুধু অভিনেত্রী নই, সমাজের একজন মানুষ। যদি সমাজকে কিছু না দিতে পারি তাহলে তো কোনো লাভ নেই। আর স্রোতে গা ভাসানোর মতো শিল্পী নই আমি। এখন যেসব নাটক হচ্ছে তাতে হয়তো ব্যবসা হচ্ছে, কিন্তু আসল উদ্দেশ্যটা পূরণ হচ্ছে না। গল্প লিখছে কারা, ডিরেকশন দিচ্ছে কারা, অভিনয় করছে কারা কিছুই বুঝতে পারছি না।
সব এলোমলো। অভিনয় জগতে থেকেও যেহেতু বুঝতে পারছি না তাহলে সাধারণ মানুষ কী করে বুঝবে। আমারই গল্প ভালো লাগছে না। তাহলে দর্শকের কীভাবে ভালো লাগবে! একটা ঘরে কি দু-তিন জন মানুষ থাকে? ছেলে মেয়ে কি শুধু প্রেমই করে? তাদের আগে পরে কিছু নেই? এসব কথা একটানা বলে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন এ অভিনেত্রী। পরক্ষনেই জানালেন, সম্প্রতি একটা নাটকে কাজ করতে গিয়ে বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। এক পর্যায়ে নাটকটির শুটিং স্পট ত্যাগ করতে বাধ্য হন। আরজুমান্দ আরা বকুল বলেন, যিনি নাটকটির পরিচালক তার নাম বলতে চাচ্ছি না। উনি প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ না দিয়ে জায়গাতে বসেই নাটক শুরু করলেন। ওনাদের হয়তো মাথায় আছে। আমার তো মাথায় নেই। সংলাপ দিতে বলছে, তাও আবার অন্য এক অঞ্চলের ভাষায়। পরিচালক বলে উঠলো, বকুল আপা আপনি এভাবে করেন। সহশিল্পী আরেকভাবে করার কথা বললেন, আবার ক্যামেরাম্যান ও বললেন! এভাবে হেয় হতে হয়েছে শুটিং করতে গিয়ে। আমি তো রোবট না। পরে পরিচালককে জানালাম এই কাজটা আমাকে দিয়ে হবে না। বলেই চলে আসি সেখান থেকে। প্রবীণ শিল্পীদের সঠিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে না উল্লেখ করে অভিনেত্রী আরও বলেন, মানুষ যখন আরও পাকাপোক্ত হয় বয়স বাড়ে তখন কিন্তু তার পদোন্নতি হয়। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পীদের বয়স বাড়লে তার পদের অবনতি হয়। বসিয়ে রাখা হয়। এটা ঠিক না। সর্বশেষ, ইস্পাহানি আরিফ জাহানের পরিচালনায় ‘হৃদিতা’ শিরোনামের একটি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। ১৯৯৭ সালে ফরিদুর রহমানের প্রযোজনায় ‘হিসাব নিকাশ’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে টিভি নাটকে অভিষেক হয় বকুলের। আর সে বছরই তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত অভিনয়শিল্পী হন। ১৯৯৭ সালেই শাহ আলম কিরণের নির্দেশনায় ‘আমি এক অমানুষ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অদম্য ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করে চলেছেন আরজুমান্দ আরা বকুল। শুধু একজন অভিনেত্রী হিসেবেই নয় সংগীতশিল্পী হিসেবেও তার বেশ সুনাম রয়েছে। ২০০১ সালে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী হন।