× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স্বামীর সহযোগিতায় গণধর্ষণ

শেষের পাতা

রুদ্র মিজান
১৯ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়া হয়। হুমকি দেয়া হয়, একদম উলঙ্গ করে রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হবে। কিচ্ছু করতে পারবি না। বাসা থেকে বের হয়ে যেতে চাইলেই বাধা দেয়া হয়। তারপরই তাকে টেনে হিঁচড়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়া হয়। এ সময় বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করা হয়। স্বামীর সহযোগিতায়    একে একে তার পাঁচ বন্ধুর ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনার চারদিন পর গত রোববার খিলগাঁও থানায় এই অভিযোগে মামলা করেছেন নির্যাতিতা।
আসামিদের গ্রেপ্তার করতে গতকাল একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নির্যাতিতা ওই নারীকে এক ব্যক্তির সঙ্গে টেম্পো স্ট্যান্ড সংলগ্ন সিপাহীবাগের ওই বাড়িতে যেতে দেখেছেন স্থানীয়রা।  

কদমতলী এলাকার বাসিন্দা ওই নারী মামলায় উল্লেখ করেছেন, আইয়ুব আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। স্বামী আইয়ুব আলী দর্জির কাজ করেন। বিয়ের পর ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় তার আসল চেহারা। দর্জি পেশার আড়ালে বিভিন্ন নারীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করান তিনি। তার সঙ্গে রয়েছে একটি চক্র। পুরো ঢাকাজুড়ে তাদের নেটওয়ার্ক। স্ত্রীকে দিয়েও অনৈতিক কাজ করাতে চাইতেন তিনি। রাজি না হওয়ায় মারধর করতেন। এমনকি অনৈতিক কাজের জন্য ঢাকার বাইরেও নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন আইয়ুব আলী। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কলহ বাড়তে থাকে। দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রায় চার মাস আগে মানবপাচার আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন ওই নারী।  

এই অবস্থায় সংসারের বিরোধ মেটাতে স্ত্রীকে বন্ধু কালুর মাধ্যমে ১২ই জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে গোড়ানের ২৩৮/সি আশ্রয় ভিলার বাসায় ডেকে নেয় আইয়ুব আলী। ওই বাসাটি মাসুদ নামে এক ব্যক্তি ভাড়া নেয় এই মাসে। আইয়ুব আলীর ঘনিষ্ঠ মাসুদের বাসাতেই ঘটে ঘটনাটি। সেখানে গিয়ে ওই নারী দেখতে পান স্বামীর আরো চার বন্ধুসহ মোট পাঁচ বন্ধু উপস্থিত রয়েছে। সেখানে তারা মামলা নিয়ে কথা বলে।

নির্যাতিতা জানান, স্বামী আইয়ুব আলীর বন্ধুরা ওই নারীকে মামলা তুলে নিতে এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় তিনি উঠে যেতে চাইলে আইয়ুব আলী নিজেই বাধা দেন। পাঁচ তলার ওই কক্ষে টেনে-হিঁচড়ে আটকে রাখা হয় তাকে। জোর করে চলে আসতে চাইলে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়। এ সময় ওই নারীকে বিবস্ত্র করে পালাক্রমে স্বামীর সহযোগিতায় তার পাঁচ বন্ধু ধর্ষণ করে। রাত ১০টার দিকে বাসার নিচে নামিয়ে দেয়। এ সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে এ বিষয়ে তাকে চুপ থাকতে বলে।

সেখান থেকে যাত্রাবাড়ীস্থ খালার বাসায় যান ওই নারী। ওই বাসা থেকে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। ১৬ই জানুয়ারি তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান। গত রোববার তিনি থানায় অভিযোগ করেন। ওই নারী পুলিশকে জানান, ঘটনাস্থল সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না। এ ছাড়া তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তাই অভিযোগ দিতে দেরি করেছেন।

মামলায় আসামিরা হচ্ছে- মানিকগঞ্জ সদরের তেবাড়িয়ার ওই নারীর স্বামী আইয়ুব আলী,   গোড়ানের ২৩৮/সি আশ্রয় ভিলার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর, একই বাড়ির বাসিন্দা আজিজুর রহমান, মাকসুদুর রহমান, সঞ্জিত কুমার দাস ও কালু।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক-উল-আলম (ওসি) বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর কয়েক দফা অভিযান চালানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর