× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ত্রিপক্ষীয় বৈঠক / প্রত্যাবাসন নিয়ে একমত হতে পারেনি ঢাকা-নেপিডো

প্রথম পাতা

কূটনৈতিক রিপোর্টার
২০ জানুয়ারি ২০২১, বুধবার

চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় বৈঠকে প্রত্যাবাসনের পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে একমত হতে পারেনি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ চেয়েছে গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক প্রত্যাবাসন। আর মিয়ানমারের চাওয়া ভেরিফাই করা রোহিঙ্গাদের পাঠানো। তারা যে গ্রামের বাসিন্দাই হোক না কেন। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান বা সমঝোতা হয়নি জানিয়ে ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ আশা করছে এ বিষয়ে চীন পর্দার আড়ালেও দূতিয়ালি করবে এবং মিয়ানমারকে গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসনে রাজি করাতে সমর্থ হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রায় দেড়ঘণ্টাব্যাপী আকাঙ্ক্ষিত ওই বৈঠক হয়। ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেয়া পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পরে সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার যেটা বলেছে, তাহলো যে ৪২ হাজারের তালিকা তারা যাচাই-বাছাই করেছে, তা দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায় কি-না? জবাবে আমাকে দুই-তিনবার বলতে হয়েছে সংখ্যাটি এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরস্পর পরস্পরকে চেনে বা একই গ্রাম বা একই এলাকা থেকে এসেছে, এমন লোকদের একসঙ্গে পাঠানো, যাতে তারা যেতে উৎসাহবোধ করে। দুটি বা তিনটি গ্রামের রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করে পাঠানোটা আরো বেশি বাস্তবসম্মত হবে। এ বিষয়ে মিয়ানমারের বক্তব্য কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিয়ানমার যেহেতু আগে থেকে একটি অবস্থান নিয়েছে, সেজন্য তারা সঙ্গে সঙ্গে এটি মেনে নেয়নি। তবে তারা এটি বিবেচনায় নেবে বলে আমরা আশা করছি। সচিব বলেন, সামনে ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এ নিয়ে কথা হবে। এ বিষয়ে বেইজিংয়ের মনোভাব কি? জানতে চাইলে সচিব বলেন, চীন মনে হলো আমাদের এই প্রস্তাবের কারণটা ধরতে পেরেছে। চীনের ওপর বাংলাদেশ আস্থা রাখতে পারে কি-না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চীনের আগ্রহ ছিল দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মাধ্যমে প্রত্যাবাসন যেন এগিয়ে যায় এবং আমরা সরল বিশ্বাসে তাদের সঙ্গে গিয়েছি। আমার তো মনে হয় তাদের যথেষ্ট উদ্যোগ আছে।  প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের অনীহার বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যেটা দেখা যাচ্ছে ১২টি গ্রাম থেকে ৮৪০ জন তারা যাচাই-বাছাই করেছে। অর্থাৎ গোটা বিষয়টি বিক্ষিপ্ত। বরং ৮৪০ জন একটি গ্রাম থেকে হলে তাদের আলাদা করে উৎসাহ দিয়ে প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি করতে পারতাম। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি অ্যাপ্রোচ পরিবর্তনের জন্য, সংখ্যা যেটাই থাকুক। মিয়ানমারের অবস্থান পরিবর্তন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কথা শুনে মনে হচ্ছে তারা আলোচনা করতে চায়। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে মিয়ানমারের যদি ন্যূনতম রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তবে প্রত্যাবাসন সম্ভব। তাছাড়া চীনেরও একটি ইচ্ছা আছে।
ত্রিদেশীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত সমূহ: প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে একমত হতে না পারলেও বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি বৈঠক হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে কীভাবে এগোতে পারি এবং নতুন কোনো ইস্যু এরমধ্যে না এনে এটিকে আরো দেরি না করার বিষয়ে সবাই ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে জানিয়ে সচিব বলেন, ওই বৈঠকের পরপরই পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আরেকটি বৈঠক হবে। আমি অন্য দুই দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং চীনেরও এই বৈঠক করার আগ্রহ আছে। তবে এটি ভার্চ্যুয়ালি হতে পারে। বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, বাংলাদেশ চায়  চীন ছাড়াও ভারত, জাপান, আসিয়ান জোট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা। বিষয়টি চীন কীভাবে নেয় তা নিয়ে ঢাকার অবস্থান হচ্ছে বেইজিংকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়ায় চীন যাতে ‘বিব্রত’ না হয় সে বিষয়টি খেয়াল রাখছে বাংলাদেশ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর