× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পারমাণবিক বিশ্বে বাংলাদেশ! তবে...

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
২০ জানুয়ারি ২০২১, বুধবার
প্রতীকী ছবি

শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশও যুক্ত হলো পারমাণবিক বিশ্বে। এ এক অন্যরকম যাত্রা। ইতিহাসে তো ঠাঁই পাবে নিশ্চয়, বাংলার ঘরে ঘরে স্থান করে নেবে এ পারমাণবিক। আসলে পাশের বাড়ি ভারত ও পাকিস্তান দু’টি দেশই পারমাণবিক ক্ষমতাধর। তাহলে আমরা বাদ যাবো কেন? এছাড়া রাশিয়া, আমেরিকা, ফ্রান্স, চীন, বৃটেন, ইসরাইল ও উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক শক্তির অধিকারী। ওরা পারলে আমরা পারব না কেন? আমরা তো সব দিক দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা তো শরমের। ওইসব দেশের পারমাণবিক বোমার রশদ একটা।
আমাদের সেদিকে গিয়ে লাভ কি? শুধু শুধু টাকা নষ্ট করা। আমরা খুবই সহজ পদ্ধতিতে পারমাণবিক শক্তি অর্জন করলাম। কিন্তু বাহবা পাচ্ছিনা কেন? পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো তাহলে গোস্সা করল নাকি।

এমনিতেই ইরানের পারমাণবিক শক্তির ইচ্ছা জেগেছিল মনে। আর যায় কোথায়? চারদিকে হইচই। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে তাদের ত্রাহি অবস্থা। পারমাণবিক হলো মরণঘাতি অস্ত্র। রাসায়নিক বারুদ-এর রশদ। একটি পারমাণবিক প্রয়োগই লাখ কোটি মানুষের জীবন থামিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট। এমন শক্তি ইরানকে দেয়া যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশ সহজেই উৎরে গেলো। নিষেধাজ্ঞার ঝামেলায় পড়তে হয়নি। আলবার্ট আইনস্টন কেন যে পারমাণবিক বোমা আবিস্কার করতে গেলেন তিনিই ভাল জানেন। আসুন দেশবাসী আজ আমরা আনন্দের গীত গাই। পিঠাপুলির উৎসব করি। কারণ নামে হলেও পারমাণবিক শক্তিধর আমরা।

বাংলাদেশের পারমাণবিক বোমার কথা লিখতে গিয়ে মনে পড়ল টেবিল টেনিসের আন্ডার কথা। সে এক বিশাল কাহিনী। এক এলাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা। ফাইনাল খেলার দিন। সাজানো হয়েছে জাঁকজমকভাবে। প্রধান অতিথি করা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানকে। দর্শকও প্রচুর। টান টান উত্তেজনার মধ্যে খেলা শেষ হলো। এবার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। এর আগে প্রধান অতিথির কিছু বলার পালা। প্রধান অতিথি তার বক্তৃতা শুরু করলেন- এই খেলার অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই খেলায় যারা অংশ নিয়েছে এবং যারা জিতেছে তাদের। আরও ধন্যবাদ জানাই দর্শকদের, যারা উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ যুগিয়েছেন। আর সবচেয়ে বেশি ধন্যবাদ জানাই সেই মুরগিটারে যে মুরগি এতো শক্ত আণ্ডা দিছে, এত পেটা পেটানোর পরও যার আন্ডা ভাঙেনি। এরই সাথে শুরু হয়ে যায় গোটা অডিটোরিয়ামে হাসির রোল। আরেক অনুষ্ঠানে ইউনিয়নবাসী তাদের বক্তৃতায় ইউনিয়নে একটি মাঠের দাবি জানিয়েছে চেয়ারম্যানের কাছে। একই সাথে বক্তারা সারা বিশ্বে ক্রিকেট জ্বরের কথাও বলে যাচ্ছেন। বক্তাদের বলার পর চেয়ারম্যান দাঁড়ালেন। বললেন, আমি এ অনুষ্ঠানে আসার সময়ও দেখে এসেছি আমার ইউনিয়নের ছেলেরা রাস্তায় ক্রিকেট খেলছে। তখনই আমি মনে মনে চিন্তা করেছি একটি মাঠের ব্যবস্থা করব। যদিও ক্রিকেট খেলে দেশের খেলোয়াড়রা শুধু গোল খেয়েই আসে, গোল দিতে পারে না। কথা শুনে সবাই এক সাথে হেসে ওঠেন।  চেয়ারম্যান বলেন, হাসবেন না- মনে বড় দুঃখ নিয়া কথাগুলো বলছি। আমি বলতে চাই, মাঠ দেব আপনাদের। আপনারা আমাকে গোল উপহার দেবেন। ক্রিকেটে যেন আর শুনতে না পাই আমরা গোল খেয়েছি। টেবিল টেনিসের বল যেমন কোন মুরগির আন্ডা নয়, তেমনি ক্রিকেটে আউট আর রানের হিসাব হয়। গোলের নয়। পারমাণবিক বোমার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব এখন সোচ্চার। তারপরও ক’টি দেশ নিজেদের শক্তিমত্তা দেখাতে পারমাণবিক ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। সে পারমাণবিক বোমা বানানো হয়েছে রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে। রাসায়নিক বিষক্রিয়ার ফলে পারমাণবিক বোমা জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করে। আর বাংলাদেশের পারমাণবিক বোমা তৈরি হয়েছে সুতা আর রং দিয়ে। তাঁত কারখানায় তা উৎপাদিত হয়ে চলে যাচ্ছে মানুষের ঘরে ঘরে। এর নাম পারমাণবিক লুঙ্গি। কথায় বলেনা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। ঠিক তেমনি। ক’দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি ছবি। যেখানে আমরিকা পাকিস্তান আর রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের ছবি দেখানে হয়েছে। আর বাংলাদেশের পারমাণবিক লুঙ্গির ছবি দেখানো হয়েছে। রসিকতা করে এটা দেয়া হয়েছে বোঝাই যায়। কিন্তু এ ছবি এখন ব্যাপক হাস্যরসের খোরাক। টেবিল টেনিসের আন্ডা আর ক্রিকেটের গোলের মতই বিষয়টি। লুঙ্গি কারখানার মালিক হয়তো বুঝাতে চেয়েছেন পারমাণবিক বোমার মতই এ লুঙ্গি শক্তিধর। কিন্তু পারমাণবিক বোমা আর লুঙ্গি একই ক্ষমতার হতে পারেনা। এটা তিনি বুঝলেও চমক লাগানোর জন্যই তার এ প্রয়াস। তারপরও পারমাণবিক লুঙ্গি দেশবাসীকে আনন্দ দিচ্ছে এটাই বা কম কিসের? এখানেই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। আসলের অভাব নকলে মেটানো। সে যাই হোক, বুক ফুলিয়ে বলতে তো পারছি বাংলাদেশও প্রবেশ করেছে পারমাণবিক যুগে। থাকনা তবে, কিন্তু।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর