× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হোয়াইট হাউসে বাইডেন / আমেরিকায় নতুন দিন

প্রথম পাতা

অনিম আরাফাত, ঢাকা, হেলাল উদ্দীন রানা, যুক্তরাষ্ট্র
২১ জানুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

ওভাল অফিসের ডেস্কে ট্রাম্পের জন্য একটি চিঠি রেখে গিয়েছিলেন বারাক ওবামা। যেখানে মোটা অক্ষরে লেখা ছিল, এটি একটি অনন্য দায়িত্ব। যেকোনো প্রেসিডেন্ট এই প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী কর্মচারী মাত্র। ডনাল্ড ট্রাম্প কখনো চিঠিটি খুলে দেখেছিলেন কিনা কে জানে? না দেখার সম্ভাবনাই বেশি। সে যাই হোক, অবশেষে ডনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আলোচিত শাসনের অবসান হলো। পালাবদল হলো সিংহাসনে। শপথ নিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস। এবার প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানটি ছিল একেবারেই অন্যরকম।
এমনিতে করোনার কারণে চারদিকে সতর্কতা। ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব পুরো পরিস্থিতিকে একেবারেই বদলে দেয়। এমন আরো ঘটনার আশঙ্কায় পুরো দেশকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়। ওয়াশিংটন ডিসিকে রীতিমতো অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। এরই মধ্যে গতকাল অভিষেক অনুষ্ঠানে লোকজনের উপস্থিতি ছিল নিয়ন্ত্রিত। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছিলেন না বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। যদিও বাইডেনের জন্য একটি চিঠি রেখে গেছেন তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান জয় ঘোষণা করলো গণতন্ত্রের। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের ভাষ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় নতুন দিন। হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পের প্রস্থান এবং বাইডেনের প্রবেশের মাধ্যমে শুরু হলো ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়। জো বাইডেনের যুগ যে ট্রাম্প যুগ থেকে একেবারেই আলাদা হবে তা স্পষ্ট।  মসনদে বসার প্রথম দিনেই মার্কিন নীতিতে বেশকিছু পরিবর্তন আনার কথা তার। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রতিক্রিয়া হবে বিশ্বব্যাপী।
বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা পূর্বেই হোয়াইট হাউস ছাড়েন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস থেকে তিনি যান জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রুজে। সেখানে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সর্বশেষ ভাষণ প্রদান করেন ট্রাম্প। এতে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অনেক সম্মানের। এ সময় তিনি জো বাইডেনের নাম না নিয়েই নতুন প্রশাসনের সাফল্য কামনা করেন। ভাষণ শেষে তিনি এয়ারফোর্স ওয়ানের একটি বিমানে করে ফ্লোরিডা পৌঁছান।

জো বাইডেন এমন এক সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন যখন দেশটি করোনাভাইরাস মহামারিতে বিধ্বস্ত এবং ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। ক’দিন আগেই নিজের শেষ সময়ে ক্যাপিটল হিলে সমর্থকদের হামলায় উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে প্রতিনিধি পরিষদে ইমপিচ হয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দু’বার ইমপিচ হওয়া প্রেসিডেন্ট তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের লাগাতার মিথ্যা অভিযোগই ক্যাপিটল হিল হামলার প্রধান কারণ। শেষ সময়ে এসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে চলমান সবগুলো প্রথা ভেঙেছেন ট্রাম্প। একবারের জন্যও স্বাগত জানাননি নতুন প্রেসিডেন্টকে। বলা হচ্ছে, নানা কারণে এবারের ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা: দু’সপ্তাহ পূর্বে ক্যাপিটল হিল হামলার প্রেক্ষিতে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আয়োজিত হয় বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এবারের শপথ অনুষ্ঠান ছিল অন্য সব বারের থেকে আলাদা। শপথ অনুষ্ঠানের পূর্বে ওয়াশিংটন ডিসিকে এক দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করা হয়। ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড ঘিরে রাখে গোটা ওয়াশিংটন নগরী। এর আগে ট্রাম্প সমর্থক উগ্রবাদী মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসূত্র থাকার সন্দেহে ১২ জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের ডিউটি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তায় নিয়োজিত রক্ষীদের ভেতর থেকেই নাশকতা বা আত্মঘাতী ঘটনা ঘটতে পারে এমন শঙ্কা ছিল প্রচুর। এটি থামাতে কাজ করে এফবিআই।

ন্যাশনাল গার্ড কমান্ডার ইউএস আর্মি জেনারেল ড্যানিয়েল হোকানসন বলেছেন, বিরূপ মন্তব্য করার জন্য দু’জন গার্ডকে অপসারণ করা হয়। এছাড়া, আরো বেশ কয়েকজনকে টেক্সট ম্যাসেজ আদান-প্রদান ও সন্দেহজনক আচরণের জন্য দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। গার্ডদের পরীক্ষাকালে তাদের এসব কর্ম ধরা পড়ে। ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর প্রভোস্ট মার্শাল কর্নেল মাইকেল ডুগাস সিএনএন’কে জানান, শপথ অনুষ্ঠানের আগে ১৭ হাজার গার্ডকে পরীক্ষা করা হয়েছে। শপথ অনুষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ হামলা এড়াতে ওয়াশিংটনজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা গেছে মার্কিনিদের মধ্যেও। রাজপথে সাধারণ মানুষের চলাফেরাতেও অস্বস্তি লক্ষ্য করা গেছে। হুমকির জেরে ক্যাপিটল হিলে জারি করা হয়েছে লকডাউন। তবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের পরও নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। আগামী কয়েকদিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে সব ধরনের সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।

আবেগঘন বক্তৃতায় বাইডেন: দেলাওয়ার হৃদয়ে লেখা থাকবে: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার জন্য সপরিবারে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি’তে পৌঁছানোর পূর্বেই নিজের রাজ্য দেলাওয়ার  নিউ ক্যাসেল শহরে আবেগঘন বক্তৃতা দেন জো বাইডেন। বক্তৃতায় বাইডেন বলেন,  দেলাওয়ার রাজ্যের এক গর্বিত সন্তান হিসেবেই সব সময় আমার পরিচিতি থাকবে। বাইডেন বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাকে বারবার চোখ মুছতে দেখা যায়। তিনি নিজের আবেগের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ক্যান্সারে মারা যাওয়া তার অকালপ্রয়াত ছেলে বিউ বাইডেনকে স্মরণ করে বলেন, ধারণা ছিল বিউ একদিন প্রেসিডেন্ট হবে। জো বাইডেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি যখন মারা যাবো, দেলাওয়ার আমার হৃদয়ে লেখা থাকবে।

কালো কোট পরে শীতের সকালে দেয়া বক্তৃতায় স্মরণ করেন তার বাবা-মা চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময় দেলাওয়ারে এসে বসতি গড়েন। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে রাজ্যের হয়ে ত্রিশ বছর দায়িত্ব পালনের আগে নিউ ক্যাসল এলাকা থেকে কাউন্সিলর হওয়ার কথা জো বাইডেন তার বক্তৃতায় স্মরণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আট বছর।

এসব ঘটনায় নিজের আপ্লুত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন- তার জীবনের ভালো ও খারাপ সময়ে দেলাওয়ার রাজ্যের লোকজন পাশে ছিল। এটি তার জীবনের চরম পাওয়া বলে তিনি উল্লেখ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন জনপ্রিয় ডেমোক্রেট দলের উদীয়মান রাজনৈতিক তারকা হিসেবে তার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। দেলাওয়ার রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে অল্পদিনেই মারা যান বিউ বাইডেন। এ কারণে সুযোগ থাকার পরও ২০১৬ সালের নির্বাচনে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে অস্বীকার করেছিলেন।
 
বাইডেন বলেন, এ রাজ্য আমাদের অনেক দিয়েছে। আমার মা-বাবার সবচেয়ে প্রয়োজনের সময় এ  দেলাওয়ার রাজ্য তাদের থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি বলেন,  দেলাওয়ার নিজের প্রতি আস্থা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। আমাকে সিনেটে পাঠিয়েছে রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। এ রাজ্য আমাকে জিল বাইডেনকে খুঁজে পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এ রাজ্য আমার ছেলে বিউকে ভালোবাসা দেখিয়েছে।’ জো বাইডেনের এমন আবেগমাখা বক্তৃতার সময় উপস্থিত লোকজনকেও অশ্রুসিক্ত হতে দেখা যায়।

যেসব পরিবর্তন নিয়ে আসবেন বাইডেন: ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পরই বেশকিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন জো বাইডেন। তার প্রচারণা শিবির প্রথম থেকেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল। যেসব পরিবর্তন আসতে পারে তা নিয়ে একটি আপডেট প্রকাশ করেছে সিএনএন। এতে করোনাভাইরাস মহামারি, অর্থনীতি ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নানা পদক্ষেপের ঘোষণা আসতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

বলা হয়েছে, বাইডেন প্রথম দিনেই মার্কিন নাগরিকদের ‘১০০ দিনের মাস্ক চ্যালেঞ্জ’-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। এরফলে পরবর্তী ১০০ দিন মার্কিনিদের মাস্ক পরার আহ্বান জানানো হবে। একইসঙ্গে তিনি স্বাক্ষর করবেন মাস্ক ম্যানডেটে। এর অধীনে সকল ফেডারেল ভবনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে। ডনাল্ড ট্রামপ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন। বাইডেন এই প্রক্রিয়া বাতিল করবেন। নিজের ক্ষমতা বলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স কো-অর্ডিনেটর’ পদ সৃষ্টি করবেন। এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সমপর্কে সকল তথ্য প্রেসিডেন্ট সরাসরি হাতে পাবেন।

ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সমপন্ন হবে। তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন যার ফলে মার্কিন এজেন্সিগুলো কার্বন নিঃসরণের মাত্রা পুনরায় নির্ধারণ করবে। একইসঙ্গে পরিবেশের জন্য হানিকর এমন সব নীতি তিনি বাতিল করবেন যা ট্রামপ সরকারের সময় চালু করা হয়েছিল।

জাতিগত বৈষম্যতা ও বর্ণবাদ রোধেও নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন বাইডেন। এর ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সিগুলোতে থাকা বর্র্ণবাদী নানা নীতি পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে। এতে যেসব সমস্যা বা সীমাবদ্ধতা পাওয়া যাবে সেটা সংশোধন করা হবে।

ট্রামেপর বিদায়ী ভাষণ: বিদায়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে হোয়াইট হাউসেই ছিলেন ট্রামপ। তাকে দেখা যায়নি জনসম্মুখেও। স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে তিনি সর্বশেষ হোয়াইট হাউসের ব্লু-রুম থেকে ভিডিও ধারণ করেন। তার এই বিদায়ী ভাষণ প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার বিকালে। এতে তিনি তার প্রশাসনের একাধিক অর্জন তুলে ধরেন। ধন্যবাদ জানান তার পরিবার, হোয়াউট হাউসের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রশাসন এবং দেশের জনগণের প্রতি। ট্রামপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আমার মেয়াদ শেষ করছি। এই সময়ে আমরা একসঙ্গে যা অর্জন করেছি তা অনেক গর্বের। নতুন প্রশাসনের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন ট্রামপ। বার্তায় তিনি বলেন, এ সপ্তাহে একটি নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। নতুন প্রশাসন আমেরিকাকে নিরাপদ ও সমৃদ্ধ রাখবে এই প্রার্থনা করছি। আমার শুভকামনা রইল। মনে রাখতে হবে যে, মার্কিনিদের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে। তবে সবাই তাদের দেশকে সমৃদ্ধ  দেখতে চায়। তবে শুভকামনায় তিনি জো বাইডেনের নাম উল্লেখ করেননি।

ভিডিও বার্তায় ক্যাপিটল হিল হামলার সমালোচনা করেন ট্রামপ। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ক্যাপিটল আক্রমণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। এ রকম রাজনৈতিক সহিংসতা আমাদের মূল্যবোধের ওপর আক্রমণ। এটি কখনই সহ্য করা যায় না। এরপরই নিজের সময়ের কিছু অর্জনের দিকে দৃষ্টিপাত করেন ট্রামপ। করোনাভাইরাসের একাধিক ভ্যাকসিন আবিষ্কারের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। বিদায়ী ভাষণে ট্রামপ বলেন, আমাদের এজেন্ডা ডান বা বাম সম্পর্কে ছিল না কিংবা রিপাবলিকান বা  ডেমোক্র্যাট নিয়ে ছিল না, এটি ছিল মার্কিনিদের ভালোর জন্য। আমরা ঘরে ঘরে আমেরিকান শক্তি পুনরুদ্ধার করেছি এবং বিদেশে আমেরিকান নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের সাহসী কূটনীতি এবং নীতিগত বাস্তবতার ফলস্বরূপ, আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি অর্জন করেছি।  

ট্রামপ বলেন, আমি গর্বিত কারণ আমি নতুন কোনো যুদ্ধ শুরু করিনি। বুধবার দুপুরে আমি যখন নতুন প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমি জানাতে চাই যে, আন্দোলন আমরা শুরু করেছি তা কেবলমাত্র সূচনা হলো।

ট্রামেপর ওয়াশিংটন ত্যাগ: শপথ অনুষ্ঠানের ৪ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে (১৩ জিএমটি) হোয়াইট হাউস ছাড়েন ডনাল্ড ট্রামপ। সেখান থেকে তিনি যান জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রুজে। এর আগে হোয়াইট হাউস থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রামপ। বলেন, দায়িত্বে থাকার সময় তিনি অনেক কিছু অর্জন করেছেন। তিনি এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রামপ মার্কিন জনগণকে ভালোবাসেন। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সর্বশেষ ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণের  শেষদিকে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত সম্মানের। বাইডেনের নাম না নিয়েই তিনি নতুন মার্কিন প্রশাসনের সাফল্য কামনা করেন। ভাষণ শেষে ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন ট্রামপ। প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ সুবিধা হিসেবে এয়ারফোর্স ওয়ানের প্রেসিডেনশিয়াল ফ্লাইটে ট্রামপ যান ফ্লোরিডার পাম বিচে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর