পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তক-অধিগ্রহণকৃত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থেকে পাবনা জেলার নিমাইপড়া পর্যন্ত নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলে রয়েছে। ওয়াপদা বাঁধের ওপর স্থাপিত বিভিন্ন বাজারে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা (জায়গা) বিক্রি করে এলাকার প্রভাবশালী মহল হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সরজমিনে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ সদর থেকে পাবনার চাটমোহরের নিমাইপাড়া পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার চলনবিলে ভাঙন ও ফসলহানি রোধকল্পে ১৯৮৬ সালে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি নির্মিত হয়। তৎকালীন পানি সম্পদমন্ত্রী মেজর (অব.) মনজুর কাদের তাড়াশ উপজেলা সদরে এসে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটির উদ্বোধন করেন। বর্ষা মৌসুমে চলনবিলের তাড়াশ, গুরুদাসপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও সিংড়া উপজেলায় বন্যায় ফসলহানি রোধে নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপিত সুইস গেটের মাধ্যমে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। সরজমিনে গত ২-৩ দিন গিয়ে দেখা যায়, তাড়াশ উপজেলা সদরের পশ্চিম পার্শ্বে ওয়াপদা বাজার, ঘরগ্রাম, দোবিলা, মান্নানগর, হামকুড়িয়া, চাটমোহর উপজেলা অংশে বাঘলবাড়ী চারমাথা, টিবাপাড়া, হান্ডিয়াল বাজার ও নিমাইচড়া পর্যন্ত বাজারগুলোতে কয়েক সহস্রাধিক পাকা ও টিনশেডের অবৈধ স্থাপনা নিমাণ করে দখলে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। হান্ডিয়ালের আব্দুল হাদী জানান, সরকারি এই বাঁধ ও খাল ভরাট করে অনেকেই বেচাকেনা করে লাখ লাখ হাতিয়ে নিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান বাঁধটির ওপর স্থাপিত বিভিন্ন বাজারের অবৈধ স্থাপনা ভরাট করা খাল উন্মুক্ত করলে সড়কে যানবাহন চলাচল ও পানি প্রবাহের সুবিধা হতো।
তাড়াশ উপজেলার ভাদাস গ্রামের আব্দুল মতিন জানান, একাধিকবার অভিযান চালানো জন্য এসে ২-৪টি ঘর ভেঙেই প্রভাবশালী মহলের তদবিরে অভিযান বন্ধ হয়ে গেছে। তাড়াশ সদরের উত্তর ওয়াপদা বাঁধ এলাকায় গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। দেখা যায় প্রায় ১ বছর পূর্বে একটি অভিযানে ৫-৭টি ঘর ভেঙে অনেক স্থাপনা না ভেঙেই চলে গেছে অভিযানকারী দল। স্থানীয়রা জানান, দখলকৃত এই সম্পত্তির মূল্য দেড়শ’ কোটির টাকার ও বেশি। তাড়াশ সদরের মো. পিয়ার আলী অভিযোগের কপি দেখিয়ে জানান, গত ২ বছর আগে আমি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাক্ষরিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই সম্পত্তি উদ্ধার করার জন্য অভিযোগ করেছিলাম কিন্তু কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, কয়েক শতাধিক অবৈধ দখলদারের তালিকা করে নোটিশ দেয়া হচ্ছে অতি শিগগিরই উচ্ছেদের অভিযান চালানো হবে।