২৬শে অক্টোবর ২০১৮, চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। প্রতিপক্ষ জিম্ববুয়েকে ৪৭ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা। দীর্ঘ ২ বছর দুই মাস ৩০ দিন পর অবশেষে ২৫শে জানুয়ারি ফের এই মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে। দিনের হিসাব করলে ৮২২ দিন পর ৫০ ওভারের লড়াই। অধিনায়ক তামিম ইকবাল এই শহরের সন্তান। তবে ২০১৬ সালের ১২ই অক্টোবর তিনি এখানে শেষ ওয়ানডে খেলেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে হেসেখেলে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে তার দল। হাতে এখনও এক ম্যাচ বাকি।
তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, ফুরফুরে মেজাজেই গতকাল চট্টগ্রামে পৌছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য হোয়াইটওয়াশ বাঁচানোর লড়াই। সাগরিকায় ১৫ মাস আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হয়েছিল শেষ টেস্ট। সেই ম্যাচে হারের স্মৃতি এখনো হয়তো ভুলতে পারেনি টাইগাররা। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৩রা ফেব্রুয়ারি শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। যেখানে অন্যরকম চ্যালেঞ্জ থাকবে চট্টলার আরেক সন্তান নয়া অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভের। শহরে একদিকে মেয়র নির্বাচনের ডামাডোল। আন্যদিকে করোনা বিরতি ভেঙে দীর্ঘদিন পর ক্রিকেট উত্তাপ। বলা যায়, সব মিলিয়ে আগামী ক’দিন বেশ সরগরম থাকবে চট্টগ্রাম। টাইগাররা শেষ ম্যাচে জিতলে ওয়ানডে সুপার লীগের খাতায় যুক্ত হবে সিরিজের পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট। যা ২০২৩ বিশ্বকাপে সেরা আট-এ থাকতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এরপর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের মিশনে নামবে টাইগাররা। এখন পর্যন্ত টেস্টের পয়েন্ট তালিকায় শুন্য হাতেই বসে আছে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে সিরিজ শেষে আগামী ২৮শে জানুয়ারি থেকে টাইগাররা খেলবে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। আর এই স্টেডিয়াম মেয়র নির্বাচনের সব কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র। তাই প্রশ্ন ছিল ম্যাচে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা। যদিও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নিশ্চিত করেছে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি ম্যাচের আগের দিন নির্বাচনের সব কার্যক্রম শেষ হবে। তাই পর দিন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে বাধা নেই। এরপর জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ৩ থেকে ৭ই ফেব্রুয়ারি হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।
সাগরিকায় (জহুর আহমেদ মাঠ) বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১৯ টেস্ট ও একই সমান ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। এই ভেন্যুতে দুই ফরম্যাটেই নিজেদের ২০তম ম্যাচ খেলতে নামছে টাইগাররা। টেস্টে আছে ২ জয়, ৬ ড্র ও ১১ হার। এর মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে শেষ টেস্টে টাইগারদের ক্রিকেট ইতিহাসে দারুণ লজ্জা। ২৪৪ রানের বড় ব্যবধনে হার দেখেছিল বাংলাদেশ দল। তবে ওয়ানডেতে এটি টাইগারদের ‘পয়মন্ত ভেন্যু’। ওয়ানডেতে ১২ জয় ও ৭ হার বলা চলে এই ফরম্যাটে ৮০ ভাগ সফলতা এসেছে সাগরিকায়। নয়া অধিনায়ক তামিম নিজ শহরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এখানে ১৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। কোনো সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯৫ রানের। সব শেষ ২০১৮ তে তিনি নিজের ঘরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে খেলতে পারেননি। অন্যদিকে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল এখানে দারুণ সফল। তার ৪০ টেস্টের ক্যারিয়ারে আছে ৯ সেঞ্চুরি। তার ম্যধ্যে সাগরিকায় ৯ ম্যাচ খেলেই সেঞ্চুরি করেছেন ৬টি। ঢাকা ছাড়ার আগে গতকাল সকালেই আরেক দফা করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয় বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের। এ বিষয়ে বিসিবির চিকিৎসক মঞ্জুরুল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ঢাকা ছাড়ার আগেই দুই দলের করোনা পরীক্ষা করেছি। আশা করি কাল (আজ) সকালেই ফলাফল চলে আসবে। আশা করি কারো কোনো সমস্যা হবে না। কারণ সব ক্রিকেটারই ছিল কঠিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে। বাংলাদেশ দলের সবাই ভালো আছেন। বড় কোনো ইনজুরি বা অন্য কোনো সমস্যা নেই।’