অবৈধভাবে চাঁদা নেয়া ও মারধরের প্রতিবাদে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার থানা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যাটারিচালিত অটোগাড়ির চালকেরা। গতকাল বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ২১ জন ব্যাটারিচালিত অটোগাড়ির চালক তাদের গাড়ি নিয়ে ওই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা চলে যান। তারা সবাই দাসপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা এবং দাসপাড়া ল্যাংরা মুন্সির পুল এলাকায় তাদের অটোগাড়ির স্ট্যান্ড। ২১ চালক অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় মনির হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক প্রত্যেক অটোচালক থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা দিতে বিলম্ব হলে অশালীন ভাষায় গালাগাল শুনতে হয়, লাঞ্ছিত হতে হয়। অনেক সময় প্রকাশ্যে মারধর করে মনির। মনির স্থানীয় সরকার দলীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি করে।
এ কারণে তারা প্রতিবাদ করতে পারছেন না। ভুক্তভোগী বাহির দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অটোগাড়ির চালক মো. আলাউদ্দিন আকন (৪৫) বলেন, শুধু চাঁদা দিলেই রক্ষা পাওয়া যায় না। তার (মনির) কথামতো অটোগাড়ি চালাতে হয়। তার কথা না শোনায় গতকাল সকালে চালক মো. জাহিদুল ইসলামকে (৩২) প্রকাশ্যে মারধর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মনির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, মারধরের ঘটনা সত্য না। তবে নিজেকে যুবলীগের কর্মী দাবি করে প্রত্যেক অটোগাড়ি থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে নেয়ার কথা তিনি অকপটে স্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন, সারা দেশেই এভাবে অটোগাড়ি থেকে সরকার দলীয় নেতারা টাকা নিয়ে থাকেন। তিনিও উপর মহলের নির্দেশে সেভাবেই নিচ্ছেন। উপর মহল কাকে বুঝাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনার কাছে বলবো কেন? এই বলে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে দাসপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ এনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ল্যাংড়া মুন্সির পুল স্ট্যান্ডটি তার ইউনিয়নের। ওই জায়গার কোনো ইজারা দেয়া হয়নি। অথচ প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে চাঁদা দেয়া-নেয়াকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের অঘটন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আল মামুন সত্যতা স্বীকার বলেন,‘ওসি স্যার নেই। স্যারের সঙ্গে কথা বলে তাদের (অটোগাড়ির চালক) আশ্বস্ত করেছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরে তারা থানা চত্বর থেকে চলে যান।’