বড়লেখার সুজানগর ইউপির বড়থল গ্রামের আমেরিকা ফেরত বৃদ্ধার বাড়িতে গৃহকর্মী সেজে ঢোকার এক সপ্তাহের মাথায় বৃদ্ধাকে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে পালিয়েছে গৃহকর্মী। গত ৩ দিন ধরে আহত বৃদ্ধা হাজেরা বেগম (৭৬) সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, গত ১৫ই জানুয়ারি নিজেকে মরিয়ম (জয়নব) পরিচয়দানকারী ষাটোর্ধ্ব মহিলা উপজেলার বড়থল গ্রামের আমেরিকা ফেরত বৃদ্ধা হাজেরা বেগমের বাড়িতে নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে গৃহকর্মীর চাকরি চায়। বৃদ্ধা হাজেরা বেগম প্রায় ৫ বছর ধরে দেশে বসবাস করলেও তার ১ ছেলে ও ৩ মেয়ে আমেরিকায়। অপর ছেলে সেলিম আহমদ স্ত্রী-সন্তানসহ বড়থল গ্রামে বসতবাড়িতে থাকেন। তার সঙ্গে বৃদ্ধা হাজেরা বেগমও বসবাস করেন।
জুড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী ফুলতলা এলাকায় বাড়ি থাকলেও স্বামী-সন্তান কেউ নেই বলায় সেলিম ও তার বৃদ্ধা মায়ের দয়া হয়। কথিত নারীকে ঘরের কাজের জন্য রেখে দেন। গত শুক্রবার বিকালে সেলিম আহমদ বৃদ্ধা মা ও কাজের মহিলাকে বাড়িতে রেখে স্ত্রী-সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার যান। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে মাকে অজ্ঞান পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো ও কথিত কাজের মহিলাকে খুঁজে পাননি। খোঁজ নিয়ে দেখেন মায়ের গায়ের ও ঘরের বিভিন্ন আলমারিতে থাকা প্রায় ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, টাকাসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে কথিত কাজের মহিলা পালিয়ে গেছে।
সেলিম আহমদ জানান, তার মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভাবতেও পারেননি এভাবে ভুয়া নাম-ঠিকানা বলে অনুনয়-বিনয় করে ঘরে প্রবেশ করে সুযোগ বুঝে সবকিছু নিয়ে উধাও হবে। চিকিৎসকরা বলছেন তার মায়ের শরীরে উচ্চ মাত্রার চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের আইসিইউতে মায়ের চিকিৎসা চলছে। এ ব্যাপারে তিনি থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বড়লেখা থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, এ ধরনের একটি ঘটনার খবর পেয়েছেন। তবে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।