× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেটে সেলিমের বাসায় মন্ত্রী ইমরান

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৫ জানুয়ারি ২০২১, সোমবার

এক সময় দু’জন ছিলেন একই ঘরানার। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করেছেন। সম্পর্কও ছিল ভালো। সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে ছিলেন। পরে আলাদা হয়ে গেলেন তারা দু’জন। রাজনীতির মাঠে হয়ে পড়লেন মুখোমুখি। দীর্ঘ দুই যুগ ধরে তারা একে অপরের প্রতিপক্ষ। কিন্তু সম্পর্কের হেরফের হয়নি একটুও।
এ কারণেই বিপরীত শিবিরের নেতা হওয়া সত্ত্বেও গুরুতর অসুস্থ একজনকে দেখতে মন্ত্রী হয়েও আরেকজন চলে গেলেন বাসায়। সিলেটে দেখা গেল এমন রাজনীতির উদাহরণ। একজন ইমরান আহমদ। সিলেট-৪ আসনের বর্তমান এমপি ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। আর আরেকজন হলেন দিলদার হোসেন সেলিম। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। সিলেট-৪ আসনের সাবেক এমপিও ছিলেন তিনি। দিলদার হোসেন সেলিম বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। নানা রোগব্যাধি তার শরীরে বাসা বেঁধেছে। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঘরবন্দি। অসুস্থতার কারণে রাজনীতির মাঠেও তিনি এখন অনুপস্থিত। নিজেকে প্রায় গুটিয়ে নিয়েছেন সবকিছু থেকে। মাঝখানে গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কয়েক দফা। বর্তমানে বাসায় রয়েছেন। কিছুটা সুস্থ এখন। তবে, ঘরেই কাটছে তার দিন। অসুস্থ বিএনপি নেতা দিলদার হোসেন সেলিমকে দেখতে শনিবার রাতেই তার লামাবাজারস্থ বাসায় ছুটে গেলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। আকস্মিক তিনি মনঃস্থির করেন দিলদার হোসেন সেলিমকে দেখতে যাবেন। সঙ্গে থাকা গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হককে সঙ্গে নিয়ে তিনি শনিবার রাতে চলে গেলেন বাসায়। মন্ত্রীকে দেখে চমকে গেলেন দিলদার হোসেন সেলিমও। অনেকটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন। মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত থাকা নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, মন্ত্রী ইমরান আহমদ বাসায় গিয়ে দিলদার হোসেন সেলিমের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। বেশকিছু সময় তারা এক সঙ্গে বসা ছিলেন। দু’জনই তাদের পারিবারিক বিষয় সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। অতীত সম্পর্কেও তারা স্মৃতি রোমন্থন করেন। মন্ত্রী ইমরান আহমদ এ সময় দিলদার হোসেন সেলিমের রোগমুক্তি কামনা করেন। দিলদার হোসেন সেলিমের সহধর্মিণী এডভোকেট জেবুন্নাহার সেলিমও ছিলেন। এদিকে এমন ঘটনা সিলেটের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে খুব বেশি চোখে পড়ে না। সিলেটকে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক শহর বলা হয়। কিন্তু বর্তমানে এই সম্প্রীতি আর লক্ষ্য করা যায় না। রাজনীতির মাঠের প্রতিপক্ষরা একে অপরের যোজন- যোজন দূরত্বে থাকে। কথা বলা, মুখ দেখাদেখিও বন্ধ থাকে। এক সময় সিলেটের রাজনীতিতে এ ধরনের সম্প্রীতি বজায় রেখে চলতেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ, প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, প্রয়াত সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপি’র শীর্ষ নেতা এমএ হক। তাদের মৃত্যুর পর সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির রাজনীতির শূন্যতা বিরাজ করছে। তবে এবার সেই সম্প্রীতির রাজনীতির উদাহরণ দেখিয়ে সিলেটে প্রশংসায় ভাসছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, রাজনীতির মাঠে প্রতিপক্ষ হলেও সিলেট-৪ আসনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে ইমরান ও সেলিমের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিরাজমান। দুই দশকের রাজনীতিতে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুই ঘরানা থেকে প্রার্থী হয়ে মুখোমুখি ছিলেন। দু’জনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও শ্রদ্ধা বোধের কারণে তাদের এই সম্পর্কের ঘাটতি হয়নি। এ কারণে দিলদার হোসেন সেলিমের অসুস্থতার খবর পেয়ে সিলেট সফরে আসার দ্বিতীয় দিনই বাসায় গেছেন মন্ত্রী। একে অপরের সঙ্গে দেখা হওয়ায় দু’জনই ছিলেন হাসিখুশি। সিলেট-৪ আসনে এবার নিয়ে ৬ বার এমপি হয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে পরাজিত করে বিএনপি থেকে এমপি হয়েছিলেন দিলদার হোসেন সেলিম। এর আগে দিলদার  হোসেন সেলিম গোয়াইনঘাট থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন। তখন থেকেই ইমরান আহমদের সঙ্গে দিলদার হোসেন সেলিমের সম্পর্ক ভালো। এই সম্পর্ক এখনো অটুট রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর