× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

‘জমিও পালাম না, ঘরও জুটলো না কপালে’

বাংলারজমিন

মাহামুদুন নবী, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে
২৬ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

ষাটোর্ধ্ব অসহায় নবিরন খাতুন। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার  তেলিপুকুর গ্রামের চুন্নু মিয়ার স্ত্রী। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ঘর নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে কবুলিয়তের ১০ শতক খাস জমি পান তিনি।  দীর্ঘ পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো  দখল পাননি জমিটির। মেলেনি সরকারি সহায়তাও। জমিটি বুঝে পাবার জন্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনারেরও দ্বারস্থ হন তিনি। বিভাগীয় কমিশনার সাবেক ইউএনও মিজানুর রহমান বরাবর একটি আদেশ জারি করলেও সেটি কোনো কাজেই লাগেনি নবিরনের। সরকারের দেয়া ভূমিহীনদের দেয়া সরকারি ঘরের তালিকাতেও নাম ওঠেনি তার। ভূমি অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে ধরনা দিলে উল্টো তাকে গালিগালাজ, হুমকি- ধমকি শুনতে হচ্ছে।
সরজমিন জানা গেছে, দশ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন নবিরন। পরের জায়গায়  জরাজীর্ণ বাড়িতে কোনো রকম ঘর পেতে এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। কখনো খাবার জোটে, কখনো  জোটে না। ৪০ দিনের কর্মসূচিসহ বিভিন্ন জায়গায় মাটি কাটার কাজ করে সংসার চালাতেন। এখন কাজে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। তবুও ভিক্ষা করেন না। ২৫/২৬ বছর আশ্রয় নেয়া জমিও এখন বিক্রি হয়ে গেছে। যেকোনো সময় তার ওই জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এখন তিনি দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। যেখানে যাকে পাচ্ছেন তার হাত ধরেই কান্না বিজড়িত কণ্ঠে তার দুঃখের কথা জানাচ্ছেন। নবিরন নেছা বলেন, ‘আমার দশ টাকার একখান কার্ডও নাই, ভিজিএফ কার্ডও নাই। বিধবা ভাতা বানাবো তাও বলে ৫/৬ হাজার টাহা লাগবি। এন্নে আমার কাছে টাহা নাই বাজান। আমি এহন কি হরব। কোনো ধকল নাই। পরের জায়গায় থাকিরে বাজান, এট্টু জাগা-জমি নাই। বিভাগীয় কমিশনার জমিডা দিছিল। আপনারা মনে হরেন বিটি ভিক্ষে হরে খায়। না বাজান ভিক্ষে হরে খাইনে। সারাজীবন কাম হরে খাইছি। আমার জমিডা আমারে এহন কেউ বুঝে  দেয় না। অফিসি গিলি কয় তোমার বাপের জমি নাহি। আমারে বিশ্রি কতাবাত্তারা কয়। সরকার জাগার ঘর নাই তাগারে জমি দিচ্ছে, ঘর দিচ্ছে। আমি জমিও পালাম না, ঘরও পালাম না।’ মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান রাবেয়া বেগম বলেন, নবিরন  নেছা সরকারিভাবে জমি পেয়েছে। কিন্তু দখলে যেতে পারছে না। আমি আগের ইউএনও স্যারের কাছে বলেছিলাম তার দখল বুঝায়ে দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, অনেকে আছে তাদের সামর্থ্য নেই জমিতে যাওয়ার। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন দিলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, তিনি আবেদন দিলে তার কাগজপত্র দেখে জমির দখল  দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর