গাজীপুরে সাড়ে তিন বছর বয়সের এক শিশু অপহরণ অভিযোগের সাতদিন পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একমাত্র পুত্র সন্তান নোমানকে হারিয়ে তার মা সাইদা পারুল এখন পাগল প্রায়। সন্তানহারা মায়ের আহাজারি কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। কাঁদতে কাঁদতে তিনি জ্ঞান হারাচ্ছেন ক্ষণে ক্ষণে। তার বুক চাপড়ানো কান্না আর গগনবিদারী আহাজারীতে প্রতিবেশীরাও আবেগে আপ্লুত হচ্ছিলেন। তিনি নাড়িছেঁড়া ধন শিশুপুত্র নোমানকে ছাড়া ছাড়া সহায়-সম্পদ কিছুই চাননি। এমন অবস্থা, আহাজারি ছিল এক সপ্তাহ ধরে। সোমবার দুুপুরে শিশু নোমানের মরদেহের সন্ধান মেলে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) উপকমিশনার জাকির হাসান জানান, নগরের হাড়িনাল এলাকার আবু সাইদ সরকারের ছেলে নোমান গত ১৮ই জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল।
সোমবার দুপুরে এলাকার অন্য শিশুরা নোমানের বাড়ির কাছের স্কুলের পাশের একটি গাছ থেকে বড়ই পাড়তে গিয়ে বাউন্ডারি ওয়ালের ভেতরের কলাবাগানে মরদেহটি দেখতে পায়। পরে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নোমানের নিখোঁজের বিষয়ে নোমানের সৎভাই নাহিদ সরকারের বিরুদ্ধে গত ১৯শে নভেম্বর সদর থানায় অপহরণ মামলা দেয়া হয়। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়। শিশুটির বাবা আবু সাইদ সরকার ও মা সাইদা পারুলের অভিযোগ, দ্বিতীয় বিয়ের পর অর্ধকোটি টাকা বেশি দামের জমি জমায় সৎ মায়ের সন্তান শিশু নোমান ওয়ারিশ হয়েছে। আর জমিজমার লোভেই নোমানের সৎ ভাই যুবক নাহিদ সরকার অপহরণ করে গুম করেছিল। আবু সাইদ আরা জানান, এর আগে তার প্রথম সংসারের ছেলে নাহিদ বার বার লাঞ্ছিত করেছে জমি জমা লিখে দিতে। প্রথম স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার ছয় বছর পর তিনি বিয়ে করে সাইদা পারুলকে। তার কোলে সন্তান আসার পর থেকে নানা উৎপাত করতে থাকে বখাটে নাহিদ সরকার। গত ১৮ই জানুয়ারি সকালে দুই ভাই নাহিদ আর শিশু নোমান একই সঙ্গে ছিলো ওদের বাসায়। হঠাৎ করে দুজনে উধাও। বিকেলে বাড়ি ফিরে আসে নাহিদ। মায়ের কোলে আর ফেরেনি নোমান। এরপর থেকে চলতে থাকে মায়ের আহাজারি। নোমানকে না পেয়ে জিএমপি’র সদর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয় নাহিদের নামে। আসামি গ্রেপ্তারও হয়। কিন্তু উদ্ধার না হয়ে মিলেছে মরদেহ।