নেত্রকোনার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জের ইসবপুরে মেসার্স মুকুল ইটভাটা চালু না হওয়ায় ইটভাটার তিন শতাধিক শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করছে। স্থানীয় প্রশাসনের বাধার কারণে ভাটা চালু করতে পারছে না মালিক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, জেলার ১০ উপজেলায় প্রায় ৬০টি ইটভাটা রয়েছে। ওই সমস্ত ভাটার বেশির ভাগ চালু হলেও স্থানীয় একটি মহল অবৈধ সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে মেসার্স মুকুল ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ইটভাটাটি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়। পরে ইটভাটার মালিকপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আদালতের বিচারক এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আদেনকারীর আবেদনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।
মেসার্স মুকুল ইটভাটার ম্যানেজার রিপন মিয়া জানান, নভেম্বর মাসের দিকে ইটভাটা চালু করা হয়।
এবার স্থানীয় একটি মহল ইটভাটার বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করে। এতে করে সময়মতো ভাটাটি চালু করা যায়নি। ইটভাটায় কর্মরত মাটি কাটা, আগুন ধরানো, আট বাহির করাসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত তিন শতাধিক শ্রমিক ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। তাদেরকে মজুরিও ঠিকমতো দেয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকরা ঠিকমতো মজুরি না পেয়ে স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরজমিন ইটভাটা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইটভাটায় ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ পড়ে রয়েছে। শ্রমিকরাও কাজের অভাবে অলস সময় কাটাচ্ছেন। মাটি দিয়ে তৈরি ইট সারিবদ্ধভাবে পড়ে আছে।
ইটভাটার শ্রমিক আবদুল মালেক বলেন, আমাদের দিন যাচ্ছে খুব খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে। মালিক ভাটা চালু করতে পারছে না। আমরা এ ছাড়া আর কোনো কাজ করতে পারি না। আমাদেরও মজুরি দিতে পারছে না মালিক। পরিবার নিয়ে আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। আমাদের বিষয়টা সরকারের দেখা উচিত।
মেসার্স মুকুল ইটভাটার মালিক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান খান মুকুল বলেন, মওসুমের অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। ইটভাটাটি চালু করতে না পারায় আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছি না। উচ্চ আদালত থেকে ভাটা চালু করার জন্য বলেছে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ভাটা চালু করতে চাইলে বাধা দেয়।
পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম বলেন, ইটভাটা চালুর জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। ছাড়পত্র না থাকায় ইটভাটাটি চালু করতে বাধা দেয়া হয়েছে। ওই ভাটার পক্ষ থেকে আবেদন করায় আদালত পরিবেশ অধিদপ্তরকে বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।