× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভৈরবে কবিরাজকে হত্যা শেষে লাশ ছয় টুকরো, কথিত প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যুদণ্ড

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৬ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চাঞ্চল্যকর কবিরাজ মো. নবী হোসেন (৪৫)কে হত্যার পর লাশ ছয় টুকরো করে গুম করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পরকীয়া প্রেমিকা সুমনা বেগম ওরফে শিলা (৩২) এবং তার কথিত প্রেমিক কাজী নজরুল ইসলাম (৩৯)কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দু’জনের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং জরিমানার টাকা আদায় করে নিহতের পরিবারকে প্রদানের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলার অপর দুই আসামি আশরাফুল হক রাসেল ও মো. শরীফ মিয়াকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় চার আসামির মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুমনা বেগম ওরফে শিলা জামিনে গিয়ে পলাতক ছিল এবং ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি কাজী নজরুল ইসলামসহ তিনজনকে জেলখানা থেকে কাঠগড়ায় আনা হয়। মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সুমনা বেগম ওরফে শিলা ও কাজী নজরুল ইসলাম দু’জনেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিজেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সুমনা বেগম ওরফে শিলা মৃত মোহন পাঠান ওরফে আজাদ পাঠানের মেয়ে এবং কাজী নজরুল ইসলাম মৃত কাজী মমিন মাস্টারের ছেলে। অন্যদিকে নিহত মো. নবী হোসেন জেলার ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর-উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত দেওয়ান ফকিরের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সুমনা বেগম ওরফে শিলা ভৈরবের চণ্ডিবেড় এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতো।
তার বাসায় কবিরাজ মো. নবী হোসেনের অবাধ আসা-যাওয়া ও তার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরবর্তীতে শিলা নিজ এলাকার কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। শিলা এবং নজরুলের সম্পর্কের বিষয়টি নবী হোসেন জানতে পারলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। একপর্যায়ে শিলা ও নজরুল দু’জনে মিলে মো. নবী হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ রকম পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালের ২১শে ডিসেম্বর রাতে স্ত্রীকে মেলায় যাওয়ার কথা বলে নবী হোসেন বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফিরেননি। তিনদিন পর ২৪শে ডিসেম্বর রাতে ভৈরব থানার পুলিশ ভৈরব বাজারের মেঘনা নদীর পাড়ে বাগানবাড়ি বেড়িবাঁধের কাছ থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় মো. নবী হোসেনের মুণ্ডু ও হাত-পা বিহীন অবস্থায় তার দেহ এবং পরে একটি ডোবা থেকে তার মাথা ও নাটাল এলাকার একটি কালভার্টের নিচ থেকে তার দুই হাত ও দুই পা উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ভৈরব থানার এস আই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে সন্দেহজনকভাবে সুমনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে এবং তার দেখানো মতে বাথরুম থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়। পরে সুমনা বেগম আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার সিআইডির ওপর ন্যস্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ২১শে জানুয়ারি সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নয়ন মিয়া মামলাটি তদন্ত শেষে মোট চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্য শুনানি শেষে গতকাল মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণার পর নিহত মো. নবী হোসেনের স্ত্রী বিলকিস বেগম রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আশরাফুল হক রাসেল ও মো. শরীফ মিয়াকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আপিল করবো।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি আবু সাঈদ ইমাম এবং আসামি পক্ষে এডভোকেট জহিরুল হক আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর