× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চসিক নির্বাচন / পুলিশের গণগ্রেপ্তারে নির্বাচনী গেম দেখছেন প্রার্থীরা

দেশ বিদেশ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
২৬ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

মাত্র একদিন বাকি চসিক নির্বাচনের। এরমধ্যে গণগ্রেপ্তার শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। যাতে নির্বাচনী গেম দেখছেন প্রার্থীরা। এরমধ্যে শুধু বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থী নয়, খোদ সরকার দলীয় সমর্থন না পাওয়া বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন। যারা সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে একের পর এক সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ ও হাতাশা ঝেড়েছেন। তবে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সোমবার সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করেন মহানগর দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের হয়রানি থেকে নারী ও শিশুরা পর্যন্ত বাদ যাচ্ছে না। রবিবার সন্ধ্যা থেকে  সোমবার ভোর রাত পর্যন্ত গণগ্রেপ্তারে পুলিশ বিএনপির ৬৯ নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে।
সাত দিন আগে থেকে অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ নির্বিচারে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এটা একটা নির্বাচনী গেম বলে মনে করছি আমি। তিনি বলেন, চিহ্নিত মাস্তান, সন্ত্রাসী আর ইয়াবা ব্যবসায়ীরা অকল্পনীয় সাজানো ঘটনায় আমাদের নেতাকর্মীদের নামে এ পর্যন্ত ৯টা মামলা করেছে। গত ১৯ তারিখে দায়ের করা প্রথম মামলায় এক হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। সেই থেকে গণগ্রেপ্তার শুরু হয়। তিনি বলেন, রোববার রাতে বাকলিয়া থানায় নেত্রী মুন্নি ও তার ১২ বছরের শিশুকে ধরে নিয়ে গেছে। নাগরিক ঐক্য পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিমকে রোববার রাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় চকবাজার থানা পুলিশ। সঙ্গে তার ছেলেকেও ধরে নিয়ে যায়। অথচ তার ছেলে রাজনীতির সঙ্গে স¤পৃক্ত নয়। তিনি বলেন, এর আগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে যে একজন সাব ইন্সপেক্টরকে ক্লোজ করা হয়েছে। তার নাম জামাল। আর যিনি ওসি আছেন তাকেও করা হবে। কিন্তু তা এখনো হয়নি। ডা. শাহাদাত বেেলন, পুলিশ আর মাস্তানরা মিলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে আমাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছে না। পুলিশ ঘরে ঘরে তল্লাশি করছে, আমাদের নেতা-কর্মীদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। বলা হচ্ছে ভোটকেন্দ্রে আপনারা যাবেন না। ভোটের পরদিন আপনারা আসবেন। এরমধ্যে আপনাদেরকে দেখলে গ্রেপ্তার করা হবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর রাখতে তারা যেন সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নির্বাচন কমিশনে ৪০ টির বেশি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিন্তু এসব অভিযোগের কোনো সুরাহা হয়নি। রিটার্নিং অফিসারকে আবেদন করেছি নির্বাচনী সময়ে যেন মিথ্যা মামলা দেয়া নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার না করে। সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়ে ৩৩নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী হাসান মুরাদ বিপ্লবও। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের পক্ষ নিয়ে কতিপয় পুলিশ সদস্য আমার কর্মী সমর্থকদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে। রবিবার রাতে সালাউদ্দিনের বাসায় হামলার অজুহাতে এই গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। সালাউদ্দিনের বাসায় হামলা একটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি। হাসান মুরাদ বলেন, কোন কথা নেই, বার্তা নেই, রবিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে হঠাৎ দেখি আমার বাসার সামনে দুই শতাধিক ছেলে মিছিল করছে সালাউদ্দিনের বাসায় হামলার প্রতিবাদে। কিন্তু ঘটনার সাথে সাথেই এত ছেলেপেলে আসলো কোথা থেকে। আমার মনে হচ্ছে কেউ এখানে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। কতিপয় অতি উৎসাহী পুলিশ নির্বাচনী গেম খেলছে। বিষয়টি সিরিয়াসলি তদন্ত করার দাবি জানাই আমি। একইভাবে বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অনুসারী নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ তুলেন ২৮নং পাঠানটুলি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী ও নির্বাচনী প্রচারণায় সংঘর্ষে বাবুল হত্যা মামলায় কারাবন্দি আবদুল কাদের ওরফে মাছ কাদেরের স্ত্রী নুসরাত জাহান।
তিনি বলেন, নির্বাচন থেকে সরাতে পরিকল্পিতভাবে বাবুলকে নির্বাচনী প্রচারণায় হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় আমার স্বামীকে আসামি করে জেলে রাখা হয়েছে। এরপরও আমার স্বামীর ব্যাডমিন্টন মার্কায় জনজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের পুলিশকে ব্যবহার করে আমার কর্মী-সমর্থকদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। যা নির্বাচনী গেম বলে মনে করছি। গণগ্রেপ্তারের এমন অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহিরুল ইসলাম, ৪ নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী নাছির উদ্দিন, জালালাবাদ ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী সাহেদুুল ইসলাম বাবু, পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের সওদাগরসহ অন্তত ২০টি বেশি ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। যেখানে বিএনপির সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনুসারীর পাশাপাশি বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীদেরও গ্র্রেপ্তার করছে পুলিশ। তবে পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার সালেহ তানভীর বলেন, আসামি গ্রেপ্তার পুলিশের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। তবে নির্বাচনে পরিবেশ যারা নষ্ট করতে পারে-এমন সন্দেহভাজনরা এই গ্রেপ্তার কার্যক্রমে যোগ হওয়ায় তা বেগবান হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এটা জরুরি। তবে কেউ যদি অযথা গ্রেপ্তার হয় সেটা অবশ্যই দেখা হবে। পুলিশ এখানে কোন নির্বাচনী গেম খেলছে না।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর