প্রথম দিন করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ইতিহাসের অংশ হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৬ জন। টিকা নেয়ার পর সবাই খুশি। টিকা গ্রহণের পর দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তারা জানিয়েছেন, ইতিহাসের অংশ হতে পারাটা ভাগ্যের। একই সঙ্গে প্রথম টিকা নেয়ায় অন্যরা নিতে উৎসাহী হবে।
একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক অরূপ রতন চৌধুরী ভ্যাকসিন নেয়ার পরে বলেন, আমার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। আমার অসুস্থতাও লাগছে না। আমি মনে করি ভ্যাকসিন আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। ইচ্ছা ছিল আমি প্রথমে ভ্যাকসিন নেবো।
যেহেতু আমি একজন ফ্রন্টলাইন সোলজার। ভ্যাকসিনটা আমার জন্য যেমন জরুরি তেমনি প্রত্যেকের জন্য জরুরি। যারা ভয় পাচ্ছেন তাদের বলবো- আমি নিয়েছি, আপনারাও নেন। আর করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নাই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, কোনো ধরনের ব্যথা পাননি বা খারাপও লাগছে না। সুযোগ পেলেই সবার ভ্যাকসিন নিয়ে নেয়া উচিত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা হিসেবে চেয়েছি, জনগণকে তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে। এখন দেশে ভ্যাকসিন এসেছে। মানুষের আশা, ভ্যাকসিন সবার সুরক্ষা দেবে। সবারই এই ভ্যাকসিন নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু নিজে না নিলে তো মানুষকে ভ্যাকসিন নেয়ার কথা বলতে পারবো না। তাই ভ্যাকসিন নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, সামান্য একটা বিষয়। ছোট্ট নিডল। কোনো ব্যথা হয়নি বরং ছোটবেলায় যেসব নিডল ব্যবহার হতো, এখনকার নিডল তো তার চেয়ে আরো অনেক আধুনিক। আমি আসলে কোনো ব্যথা পাইনি। যেকোনো ভ্যাকসিন নিলে অনেক সময় ভ্যাকসিন দেয়ার জায়গাটা একটু লালচে হয়ে যায়, বাচ্চাদের জ্বর হয়। এর অর্থ হলো ভ্যাকসিন কাজ করছে। বড়দের ক্ষেত্রেও ভ্যাকসিন নিলে বমি বমি ভাব বা জ্বর হতে পারে। কিন্তু ভ্যাকসিন নিলেই মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হবে- এমন ধারণা সঠিক নয়। আমার তো কোনোরকম খারাপ লাগছে না। তাই ৩০ মিনিটের আগেই বের হয়েছি।
কোনো ধরনের কোনো অসুবিধা হয়নি। যেমন ছিলাম, তেমন আছি, মাঝখানে শুধু টিকা নিয়েছি বলে মন্তব্য করেন সংবাদকর্মী মাসুদ রায়হান পলাশ। তিনি বলেন, প্রথমে দুই ঘণ্টার মতো ভ্যাকসিন দেয়ার স্থানে ব্যথা অনুভূত হচ্ছিল। এখন তাও নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো ধরনের অসুবিধার মুখেই পড়িনি।
প্রথম টিকা নেয়ার পর সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। এসময় গণভবন প্রান্তে যুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ‘জয় বাংলা’ বলে তাকে উৎসাহ দেন। পুলিশ সদস্য দিদারুল ইসলাম টিকা নেয়ার পর বলেন- নিজে নিয়েছি, যাতে অন্যরা উৎসাহ পায়। টিকা নেয়ায় ভালো লাগছে।