× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পর্ব-৬২ / আমরা দেখলাম আয়রনম্যান-২

এক্সক্লুসিভ

কাজল ঘোষ
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শুক্রবার

২০১৪ সালে গ্রীষ্মের এক সকালে বিছানায় থাকা আমার ফোনটি বাজতে থাকে। আমি ফোনটি তুললাম। ফোনের অন্যপ্রান্তে এরিক হোল্ডার। তিনি তখন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি আমাকে বললেন যে, আমার কাছে একটি প্রশ্ন আছে তার।

‘আমি খুব শিগরিরই দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছি, তুমি আগ্রহী কিনা?’
এটা এখনই অহেতুক বলা হবে। এ বিষয়ে অনেক কিছু ভাবার আছে। আমি কি যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল হতে চাই? একদা ববি কেনেডি যে দায়িত্বে ছিলেন আমি কি সেখানে যেতে চাইছি? অবশ্যই আমি তা চাই।
এটা সেই সুযোগ যার জন্য মানুষ দিনরাত স্বপ্ন দেখে এবং আইন নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে বক্তৃতা করে। এটা আমার জন্য শুধু এক মুহূর্তের বিষয় ছিল না। ঘটনাটি ঘটছে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়। তিনি বারাক ওবামা; আমার বন্ধু এবং আমার প্রেসিডেন্ট। যার নেতৃত্ব নিয়ে আমি মুগ্ধ এবং তাকে সমর্থন করতে পেরে আমি গর্বিত। তার ক্যাবিনেটে যোগ দেয়া হবে আমার জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।

যদিও আমি নিশ্চিত নই, সত্যিই তা আমি চাইছি কিনা। এরই মধ্যে হোল্ডার পদত্যাগ করে। তখনও সরকারের মেয়াদ দুই বছরের কিছুটা কম রয়েছে। একটা বাস্তব এজেন্ডা সৃষ্টি করার জন্য এই সুযোগকে কি আমি ব্যবহার করতে পারবো?

পরবর্তী সময়ে আমি এবং হোল্ডার কথা বলি। আমি তার সামনে ‘ব্যাক অন ট্র্যাক’ কর্মসূচির বিষয়টি উত্থাপন করি। স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার মতো পর্যাপ্ত বাজেট আইন মন্ত্রণালয়ে আছে কিনা সেটা আমি জানতে চাই। যদি সেটা থাকে তাহলে আমি এই দায়িত্ব নিতে আগ্রহী। প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি বাস্তবসম্মত সংস্কারে সক্ষম হতে চাই। হোল্ডার বিস্ময়ের সঙ্গে আমাকে জানালো যে, এমন উদ্যোগের জন্য বাজেটে তেমন অর্থ নেই এবং নতুন অর্থ পেতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন লাগবে। যা আমরা দুজনই জানতাম এটা হবে না।
এটা ছিল হৃদয় ভেঙে যাওয়ার মতো। কিন্তু তখনই আমি জানি এ কাজটা এমন নয় যাকে হালকাভাবে নেয়া যায়। যাদেরকে আমি জানতাম সেইসব আইনজীবীর প্রতিজনের মতোই একটি হলুদ প্যাডে প্রস্তাবনা এবং শর্তগুলো তালিকাভুক্ত করলাম। দল এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করলাম। উভয়দিকের সঙ্গে একমত হওয়ার জন্য আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালাম।

একদিন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আমাকে প্রস্তাব দেয় যে, পাওলো আলটোর কাছে উইন্ডি হিল ওপেন স্পেস প্রিজার্ভ-এ বেড়াতে যেতে চাই। সে চিন্তা করে যে, হিলটপের মতো খোলা জায়গায় বেড়াতে গেলে আমার মন সতেজ হবে এবং তার এই ভাবনাটি সঠিক ছিল। অফিস থেকে দূরে গিয়ে আমার ভেতরে যে চাপ ছিল দ্রুতই তা থেকে স্বস্তি পেলাম। প্রতিটি পদক্ষেপেই আমি পরিষ্কার হয়ে নিচ্ছিলাম যে, আমি কি চাই এবং কেন?

অনিবার্যভাবেই চাকরি ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েই গেছে। তা আমার প্রাপ্যও ছিল। কিন্তু আমি যখন আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম সে বেশকিছু যৌক্তিক প্রশ্ন উত্থাপন করলো। আমাকে প্রস্তাব দেয়ার বিষয়ে আমি এর কারণগুলো উপলব্ধি করতে লাগলাম। আমার এখন চাকরি আছে, তা আমার পছন্দের এবং এখানে আমার অনেক কিছু করারও আছে।

আমি ভাবতে থাকি, আমি যে কাজের নেতৃত্ব দেবো সেটা নিয়ে। প্রথমে একজন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি তা নিয়ে, তারপর অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ঘৃণাপ্রসূত অপরাধের পক্ষকে পরাজিত করার জন্য। এইসব অপরাধী ছিল সমকামী এবং দলবদ্ধ প্রতিরোধকারীদের বিরুদ্ধে। ২০০২ সালে সতের বছরের এক তরুণী গুয়েন আরাওজোকে ক্যালিফোর্নিয়ার নিওয়ার্কে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার খুনিদের মধ্যে দুজন যারা তার ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিল তারা আদালতে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেছিল যে, তাদের মনে হয়েছিল আরওজো একজন হিজরা। এটা ছিল খুবই হাস্যকর। আমি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি থাকার সময় প্রসিকিউটর এবং আইন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কনফারেন্সের আয়োজন করি। যেখানে আমার আইডিয়া ছিল অপরাধীরা কীভাবে নানারকম কুসংস্কারের কথা বলে বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এবং অ্যাটর্নি জেনারেল থাকার সময় ২০১৪ সালের গ্রীষ্মে রাজ্য গভর্নর এবং আইন কর্মকর্তাদের নিয়ে রাজ্যজুড়ে এ ধরনের ডিফেন্ডদের নিষিদ্ধ করতে সফল হই। আমি ভেবেছিলাম এটা আমার জন্য কতোটা অর্থবহ।

আমি ব্যুরো অব চিলড্রেন্স জাস্টিস নিয়ে নতুন কিছু উদ্যোগের কথা ভেবেছি। আমার স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল জিল বার্গকে দিয়ে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার কাজের পরিকল্পনাও করছিলাম। যা ক্যালিফোর্নিয়ার সকল শিশুকে সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করবে। সেখানে এমন আরো অনেকগুলো বিষয় ছিল যে, সকল বিষয় আমি দেখার জন্য আগ্রহী ছিলাম।

আমি একটি কাজের কথা চিন্তা করেছিলাম যে, স্টেট ক্রাইম ডাটা সকল নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করে দেবো। স্বচ্ছতা নিশ্চিতের এই উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিল স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যানিয়েল সুভোর এবং জাস্টিন এর্লিক। যাকে আমরা ডাকতাম ‘অপেন জাস্টিস’ বলে।

আমরা কথা বলছিলাম ব্যাক অন ট্যাক এবং স্কুলে ঝরে পড়া বন্ধের কর্মসূচি নিয়েও।
কিছু সংঘবদ্ধ হটকারী ছিল যারা শিক্ষার্থী, বয়স্ক মানুষ, বাড়িওয়ালা এবং গরিবদের কাছ থেকে সুবিধা পেতো। তারা যেসব মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতো তাদের পক্ষে কথা বলতো এবং পরামর্শ দেয়াকে আমি পছন্দ করতাম। আমার টিমের ল’ ইয়াররা ভালো করেই জানেন করপোরেট দুর্বৃত্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আমি কতোটা সিরিয়াস ছিলাম। তারা রসিকতা করে আমাকে বলতো ‘কামালা’ মানে এর মূল্য দিতে আর কতোটা কমা দিতে হবে।

এবং অবশ্যই এটি ‘ব্যাংক’। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আমার লড়াইটা এখনো চলছে। এখনো আমরা মামলা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমার পিছিয়ে পড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।
এরই মধ্যে আমাদের বেড়ানো শেষ হলো। আমার বন্ধু, আমি আমরা দুজনই জানি আমার সিদ্ধান্ত কি। এর কোনো শিরোনাম নেই বা একে কোনো সম্মানের মাত্রা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না। আমার কাছে কাজই সবকিছু এবং এটি যদি কাজে পরিণত হয় তাহলে তা আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিষয়। এখনো আমার কাজ শেষ হয়নি।
পরবর্তী সন্ধ্যায় আমি হোল্ডারকে ফোন করি তাকে জানাবার জন্য। এরপর আমি এবং ডগ বাচ্চাদের নিয়ে খাটের উপরে বসলাম। আমাদের সামনে বড় একটি পাত্রে পপকর্ণ। দ্বিতীয়বারের মতো আমরা দেখলাম আইরনম্যান-২।
কমালা হ্যারিসের অটোবায়োগ্রাফি
‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড’ বই থেকে


 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর