নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে চার ভাগের প্রায় এক ভাগ রোগীর চুল পড়ে যায়। এক্ষেত্রে নারীরা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ। গবেষকরা চীনের উহানে দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণগুলো নিয়ে গবেষণা করেছেন। এক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এমন ১৬৫৫ জন রোগীর ওপর তারা গবেষণা চালান। তার মধ্যে দেখতে পান চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন ৩৫৯ জন। এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানচেটে। এতে আরো দেখা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে আরো যেসব লক্ষণ থেকে যায় তার মধ্যে রয়েছে অবসন্নতা, শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্ষিপ্ত হয়ে আসা, মাঘাঘোরা, শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা।
এই গবেষণাকর্মের লেখক বলেছেন, করোনা ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যগত সমস্যা এখনও ব্যাপকভাবে পরিষ্কার নয়। ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি থেকে ২৯ শে মে পর্যন্ত জিন য়িন-টান হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন এমন রোগীদের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষকরা এসব রোগীর ওপর ৬ মাস পর পর ফলোআপ করেছেন। এ সময়ে তাদেরকে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করা হয়েছে। শরীরে কি রকম লক্ষণ আছে এসব মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ মিনিট হাঁটার পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে দেখা হয় তারা শারীরিকবাবে কতটুকু সুস্থ। এ ছাড়া তাদের রক্তের পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, শতকরা ৬৩ ভাগ রোগী অবসন্নতা অথবা মাংসপেশীর দুর্বলতায় ভুগছেন। শতকরা ২৬ ভাগ রোগীর ঘুমে সমস্যা দেখা দিয়েছে। শতকরা ২৩ ভাগ রোগীর মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ বা হতাশা এবং শতকরা ২২ ভাগ রোগীর চুল পড়ে যাচ্ছে। পরীক্ষায় আরো দেখা গেছে, শতকরা ৭৬ ভাগ রোগী যাদের প্রথম পরীক্ষার ৬ মাসব পরে আবার পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এর মধ্যে একটি না একটি লক্ষণ আছেই। তবে এই হার নারীদের ক্ষেত্রে বেশি। করোনা ভাইরাসে খুব খারাপভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন রোগীদের মধ্যে মাংসপেশীর দুর্বলতা বা হতাশা বেশি দেখা গেছে। এ ছাড়া অনেক রোগীর ক্ষেত্রে পালমোনারি বা হৃদপিন্ডের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিন মাস ৫৩৮ জন করোনা রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, রোগীদের মধ্যে অবসন্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শারীরিক সক্ষমতা কমে আসছে। শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।