× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একাই চালিয়ে গেছেন লড়াইটি

শেষের পাতা

কাজল ঘোষ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বৃহস্পতিবার

একেবারে অকস্মাৎ চলে গেলেন। বিশ্বাস হচ্ছিল না। কীভাবে সম্ভব? এটা হতেই পারে না। তিনি খুব একটা শারীরিক সমস্যায় ছিলেন তা-ও নয়। যতদূর জানি ক’দিন আগেই টিকা নিয়েছেন। টিকাদান কেন্দ্রে দেখা হওয়া রিপোর্টারদের সঙ্গে এর ভালো দিকগুলো নিয়ে কথাও বলেছেন। আর এখন তিনি অতীত।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খবরটি যখন পেলাম সেদিন সকালেও তিনি একটি ওয়েবিনারে অংশ নিয়েছেন।
কথা বলেছেন। কিন্তু ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ যখন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তখন আর এ নিয়ে নির্বাক, হতবাক হওয়া ছাড়া কিছু বলার নেই। সকল টেবিলে এটিই আলোচনা। কি এমন হলো তাকে এত দ্রুতই চলে যেতে হলো?   
তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। নানা ভাবেই। পরিচিতি পেয়েছিলেন গান্ধীবাদী মানুষ হিসেবে। তার জীবন দর্শনে ছিল সব সময়ই মহাত্মা গান্ধী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নীরবে কাজ করে গেছেন। সাংবাদিকতা পেশা থেকে কিছুটা দূরে সরলেও নিয়মিত কলাম লিখতেন। সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে টেলিভিশন বা সেমিনারে; রাজপথের মিছিলে সবসময় সাধারণ মানুষের কাতারে ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে টকশো প্রযোজক হিসেবে স্যারের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না এই আধুনিক সময়েও। কিন্তু সময়ের কোনো নড়চড় হয়নি। ঠিক সময়ে শ্বেত শুভ্র পোশাকে তিনি পৌঁছে যেতেন স্টুডিওতে। আর প্রতিটি ইস্যুতে যুক্তিগ্রাহ্য কথা বলতে কখনো আপস করতে দেখিনি।

সৈয়দ আবুল মকসুদ কে? তিনি কি করতেন? অনেক ফিরিস্তি দেয়া যাবে এই সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষটিকে নিয়ে। তিনি গবেষক। তিনি প্রাবন্ধিক। তিনি দেশসেরা কলাম লেখক। সব ছাপিয়ে তাকে নিয়ে যে প্রশ্নের উত্তর অনেককেই দিতে হতো, তিনি কেন কাফনের কাপড় পরেন?

টকশোতে আসতেন আর বেরিয়ে গেলে অনেকেই ফোন করতেন এই প্রশ্ন জানতে। অনেক আগেই তার নিজের জবানিতেই জেনে নিয়েছিলাম এর উত্তর। ইরাকে আমেরিকান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিনি একাই লড়াইটা করে যাচ্ছিলেন সেই ২০০৩ সাল থেকে। অনাহূত যুক্তিতে, অযৌক্তিকভাবে আমেরিকা ইরাকে হামলা চালিয়েছিল। অসংখ্য সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই নারী, শিশু হত্যার প্রতিবাদে গান্ধীবাদী এই মানুষটি প্রতিবাদ বেছে নিয়েছিলেন ‘অহিংস’। সাদা কাপড়ে জড়িয়েছিলেন নিজেকে। সেলাই ছাড়া এ পোশাকেই তিনি এরপর সকল আন্দোলন, সংগ্রামে ছুটেছেন। লড়াইটা একাই চালিয়ে গেছেন। এ যেন কবিগুরুর সেই গানের মতোই- ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ নাই আসে তবে একলা চলো রে...’।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর