জমে উঠেছে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীরা প্রতিদিনই ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ব্যানার-লিফলেটে ছেয়ে গেছে গোটা এলাকা। মাইকিং চলছে অলিতে গলিতে। তবে সরকারদলীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেয়াসহ রয়েছে নানা অভিযোগ। ভোটারগণ বলছেন, সৎ ও যোগ্য এবং যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে, এমন প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চান তারা। যোগ্য ও পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে তারা চাচ্ছেন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।
নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মো. লুৎফর রহমান অংশগ্রহণ করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
এতে বাধা বিঘ্নের সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তার দাবি কোনোভাবেই নির্বাচনের মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না। যেদিকেই বের হন সেখানেই বাধার মুখে পড়ছেন। কর্মীরা মাঠে বের হলে আরো বেশি বেকায়দায় পড়ছেন। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। মাইক আটকে দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। তিনি মনে করেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ হলে আবারো বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। এই নির্বাচনে নানা অভিযোগ তুলে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা রয়েছেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ফরিদ আহমেদ মৃধার। তিনি বলছেন, প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে তাকে। ধানের শীষের প্রচার মাইক আটকে দেয়া হচ্ছে। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। হুমকি দেয়া হচ্ছে কর্মীদের। তবে সারা দেশে নির্বাচনী আবহ ও জয়ের ধারায় অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এসএম রবিন হোসেন। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে দাবি করে তিনি বলেছেন, এই এলাকায় সবসময়ই সুষ্ঠু ভোট হয়ে থাকে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে নৌকার প্রার্থীকেই বিজয়ী করবেন কালীগঞ্জের ভোটাররা। এদিকে মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী এবং নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে কালীগঞ্জ পৌর নির্বাচন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নানা অভিযোগ রয়েছে। প্রায়ই ছোটখাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। প্রত্যেক দিনই পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীরা পথসভা, উঠান বৈঠক ও গণসংযোগ করছেন। পৌর এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারপত্র বিতরণের পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের ভোট দিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান দলীয় নেতাকর্মীরা। প্রচারণায় সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন। সাধারণ পৌরবাসীর আশা, এবারের বিজয়ী প্রার্থীরা দায়িত্ব নিয়ে কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেবে। পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হবে।
১৫.২০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কালীগঞ্জ পৌরসভার লোকসংখ্যা ৫৪৯২৭ জন এবং ভোটার সংখ্যা ৩৬৬৪০ জন। নির্বাচনে ৪ জন মেয়র, ১০ জন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার জন্য ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।