× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পৌরসভা নির্বাচন / সৈয়দপুরে অবাঙালিরাই ফ্যাক্টর

বাংলারজমিন

দীপক আহমেদ ও এম এ করিম, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, শনিবার

রাত পোহালেই সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচন। চারিদিকে ভোটের নানামুখী গুঞ্জন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর। পাড়া-মহল্লার ওলিগলি থেকে চায়ের দোকান সর্বত্রই মুখর নির্বাচন ঘিরে। কোন প্রার্থীর জয় হবে, কাকে ভোট দিলে এ ঘিঞ্জি শহরের উন্নয়ন হবে- এমন সরব আলোচনা সবার মুখে মুখে। উঠান বৈঠকে মুখর শহরের পাড়া-মহল্লা। চলছে শেষ মুহূর্তের আকুতি-মিনতি-ভোট প্রার্থনা। কোন মুরুব্বিকে দিয়ে কোন এলাকা বাগে আনতে হবে তা নিয়ে চলছে শেষ সময়ের হিসাব-নিকাশ।
তবে নির্বাচনে বিএনপি অবস্থান ধরে রাখতে আর আওয়ামী লীগ পুনরুদ্ধারে মরিয়া। দিনরাত এক করে শেষ নির্বাচনী পরিকল্পনা নিয়ে এখন ব্যস্ত চির প্রতিদ্বন্দ্বী এ দু’টি দল।
তফসিল ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র আখতার হোসেন বাদল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার সহধর্মিনী রাফিয়া আখতার জাহান বেবীকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এদিকে, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কয়েকবারের মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন অপ্রত্যাশিতভাবে এডভোকেট ওবায়দুর রহমানকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাসপাতালের বিছানা থেকেই নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে নামেন আমজাদ হোসেন। হালে পানি না পেয়ে বিএনপি প্রার্থী ওবায়দুর রহমান আগেভাগেই নির্বাচন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান আমজাদ হোসেন সরকার। স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচন। শুরু হয় সৈয়দপুরের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ। সামান্য সময়ের ব্যবধানে সৈয়দপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনের দুই প্রাণ পুরুষের চির প্রস্থান নেতৃত্বশূন্য করে সৈয়দপুরকে। শুরু হয় রাজনৈতিক টানা পোড়েন, নানা হিসাব-নিকাশ। ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাতে শুরু করে সৈয়দপুরের রাজনীতি। শুরু হয় দল বদলের খেলাও। জানাজায় লাখো মানুষের ভালবাসায় সিক্ত আমজাদ হোসেনকে বিএনপি মনোনয়ন না দিলেও পরিবর্তিত পেক্ষাপটে তার ভাই রশিদুল ইসলামকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়ে ধানের শীষের জোয়ার ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তবে পৌরসভার হারানো মসনদ পুনরুদ্ধারে মরিয়া আওয়ামী লীগও। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে বহুধা বিভক্ত গ্রুপগুলো ভেদাভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে আদাজল খেয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। বসে নেই বিএনপিও। তারাও নানা কলাকৌশলে ব্যস্ত।
নির্বাচনী ময়দানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান বলেন, ভৌগলিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সৈয়দপুরের উন্নয়নে এলাকার মানুষ বিশেষ করে অবাঙালিরা এবার একাট্টা নৌকার পালে। ‘আধা রুটি খায়েঙ্গে, পাকিস্তান যায়েঙ্গে’ এ স্লোগান বুকে লালন করা অবাঙালিরা বরাবরই স্থানীয় সেল্টারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। এবারের নির্বাচনেও নিয়ামকের ভূমিকায় অবাঙালি ভোটাররা। প্রায় ৯৪ হাজার ভোটারের অর্ধেকেরও বেশি দখলে থাকায় তাদের কাছে টানতে মরিয়া সব দলই। নির্বাচনে লাঙ্গল নিয়ে সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক, হাতপাখা নিয়ে হাফেজ নূরুল হুদা এবং মোবাইল ফোন মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল আউয়াল ভোটের ময়দানে থাকলেও স্থানীয় নির্বাচন বোদ্ধাদের মতে লড়াই হবে নৌকা আর ধানের শীষের। তবে এখন দেখার বিষয় ভোটে অবাঙালিরা কোন পালে ভিড়ে।
এদিকে, বিএনপি’র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক শেখ বাবলুকে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছে স্থানীয় বিএনপি। গতকাল সকালে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। এতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট এস এম ওবায়দুর রহমান ও মেয়র প্রার্থী রশিদুল হক সরকার। বক্তারা বলেন, ভোর রাতে শহরের নয়াটোলা শ্বশুড়বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে বিএনপি’র ওই নেতাকে। তার নামে স্থানীয় থানায় বা আদালতে কোনো মামলা নেই। আসন্ন ২৮শে ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে নষ্ট ও ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই প্রশাসনকে ব্যবহার করছে আওয়ামী লীগ নেতারা। শহরের নৌকা মার্কার পথসভায় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়েছে।

 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর