ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি অবস্থায় মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর কারণ জানতে প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, কী কারণে কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু হলো তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই জানা যাবে।
শুক্রবার চট্টগ্রামের ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকায় নবনির্মিত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃত্যু কীভাবে হলো, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- প্রথম কথা হলো, যে লেখকের কথা বললেন, মুশতাক আহমেদ। তিনি আগেও দুই-একবার তার লেখনীতে আইনশৃঙ্খলা কিংবা অন্যের বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছিলেন। সেজন্য অনেকেই মামলা করেছিলেন। সমপ্রতি ২০২০ সালে যে মামলাটি হয়েছিল সেই মামলার জন্য তিনি কাশিমপুর জেলখানায় অন্তরীণ ছিলেন। হঠাৎ করেই আমাদের আইজি প্রিজন থেকে আমি যে সংবাদটা পেয়েছি, তিনি হঠাৎ করে অসুস্থ বোধ করলে কারাগারে যে হাসপাতাল আছে সেখানে চিকিৎসা সেবা পান। তারপরে অবস্থা আরেকটু খারাপের দিকে গেলে গাজীপুর তাজউদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সব মৃত্যুর বিষয়েই এনকোয়ারি হয়। একটা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলুন বা স্বাভাবিক মৃত্যু বলুন। নানা প্রশ্ন আসে। যে কোনো মৃত্যুর ঘটনায় কারাগারে হোক বা এক্সিডেন্ট হোক, একটা পোস্টমর্টেম হয়। পোস্টমর্টেমের পর সঠিকভাবে আমরা বলতে পারবো কেন এই মৃত্যুটা হয়েছে। এনকোয়ারি কমিটি প্রয়োজন বোধে করবো। কালকে তো হলো, নিশ্চয় এটার ব্যবস্থা আমরা করতে পারবো।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় বিচারের মুখে থাকা মুশতাক আহমেদ কারাবন্দি অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান। বাংলাদেশে কুমির চাষের অন্যতম উদ্যোক্তা মুশতাকের হাত দিয়েই কুমির রপ্তানি শুরু হয়। এ বিষয়ে একটি বইও লিখেছেন তিনি। মুশতাক অনলাইনে লেখালেখিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন। সেটি কেন্দ্র করেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পড়েন তিনি। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে গত বছরের ৬ই মে র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। তার সঙ্গে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ‘সরকারবিরোধী প্রচার ও গুজব ছড়ানোর’- অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করা হয়।
এই মামলায় রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠন দিদারুল ভূঁইয়া এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে পরে এ দু’জন জামিনে মুক্তি পান। মুশতাক ও কিশোরের পক্ষে বেশ কয়েকবার জামিনের আবেদন হলেও তা আদালতে নামঞ্জুর হয়।