× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পাকুন্দিয়ায় সূর্যমুখীর হাসিতে কৃষকের চোখে স্বপ্ন

বাংলারজমিন

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) থেকে
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, রবিবার

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে কৃষি প্রণোদনার আওতায় সূর্যমুখীর চাষ করেছেন এখানকার কৃষকরা। জমিতে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। দেখে মনে হচ্ছে মাঠজুড়ে হাসছে সূর্যমুখী। পুরোদমে ফুল আসতে যদিও আরো কয়েকদিন লাগবে। তবে এরই মধ্যে সূর্যমুখীর হাসিতে স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৩০০ জন কৃষককে ৩০০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করার জন্য ৩০০ কেজি বীজ সহায়তা দেয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সূর্যমুখী চাষাবাদ সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
বিঘা প্রতি সূর্যমুখী জমি থেকে প্রায় ১০ মণ বীজ উৎপাদন হয়। সূর্যমুখীর বীজের বাজার মূল্য মণ প্রতি ২৫০০-৩০০০ টাকা। এটি চাষ করতে ১০০-১১০ দিন সময় লাগে। সরজমিনে উপজেলার আঙিয়াদী ব্লকের আদিত্যপাশা গ্রামে বিলভরা প্রেমনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একসঙ্গে আট বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুল ফুটে আছে। জমির তিনদিকে পানি। এমন পরিবেশে সূর্যমুখী ফুল দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়েছে। এখনো পুরোদমে ফুল আসেনি। কিন্তু এরই মধ্যে দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত। বিকাল হতেই আশেপাশেসহ দূর-দূরান্তের লোকজন ছুটে আসছেন। সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। স্মৃতিময় করে রাখতে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন। একেকটি সূর্যমুখী বাগান ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। সূর্যমুখী চাষিরা জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। দিন যাচ্ছে আর ফুলের সংখ্যা বাড়ছে। আকারো বড় হচ্ছে। শুরুতে কিছুটা চিন্তায় থাকলেও এখন বেশ উৎফুল্ল। দেখতেই যেন মন ভরে যায়। প্রতিদিনই বাড়ছে দর্শনার্থীদের সংখ্যা। বিড়ম্বনা হলেও তাদের বারণও করতে পারছি না। তবে যেন জমির ক্ষতি না হয় সেজন্য দর্শনার্থীদের সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে। চাষি রুক্কুন উদ্দিন বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোহাগ ভাইয়ের পরামর্শে প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ করেছি। বীজ বিনামূল্যে পেয়েছি। চাষাবাদে যে খরচ হয়েছে আর জমিতে যে পরিমাণ ফলন এসেছে তাতে আমরা এর বীজ বিক্রি করে লাভের আশা করছি। মিজানুর রহমান নামের অপর এক সূর্যমুখী চাষী বলেন, সূর্যমুখীর ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছি। পাশাপাশি এর বীজের ভালো কদর রয়েছে। যা বিক্রি করে আমরা আর্থিকভাবেও লাভবান হব। অন্যান্য কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
আঙিয়াদী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ বলেন, এ ব্লকে ৮৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। যে সমস্ত জমিতে রোপা আমন পরবর্তী পতিত রেখে পাট চাষ করা হতো, সেই পতিত জমিগুলোতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। এতে বাড়তি একটি ফসল পাওয়া যাবে। ৫, ১০, ১৫ বিঘা এভাবে ব্লক আকারে বাস্তবায়ন করেছি। যার কারণে দর্শনার্থীদের দ্বারা খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কৃষকরা যাতে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারে সেজন্য তাদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাসান আলামিন মানবজমিনকে বলেন, এ উপজেলায় প্রথমবারের মতো সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছি। অন্য কৃষকরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আগামীতে এ উপজেলায় এর আবাদ বাড়বে। তেল জাতীয় ফসলের আবাদ বৃদ্ধির মাধ্যমে সয়াবিন আমদানি কমে আসবে বলে মনে করছি।
 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর