অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বীমা খাত হচ্ছে অর্থনীতির আয়না। এ খাতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের সবাইকে বীমার আওতায় আনতে কোম্পানিগুলাকে প্রিমিয়াম কমাতে হবে। মানুষের সক্ষমতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বীমা দিবস’- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বীমা কোম্পানিগুলোর প্রতি এ আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিবসটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে বীমা খাত অনেক এগিয়েছে। কিন্তু এ খাতে যে পরিমাণ সম্পদ ও সক্ষমতা রয়েছে, সেভাবে এগোতে পারেনি। বিমাপণ্য বাড়াতে হবে।
স্বাস্থ্য খাতের পাশাপাশি যেসব খাতে এখনও বীমার কার্যক্রম শুরু হয়নি সেখানে কাজ করতে হবে। আমরা সরকারি সব সম্পদ বীমার আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
‘উন্নত দেশের সব জীবন ও সম্পদের ইন্স্যুরেন্স হয়, আমাদের দেশে সেটা নেই’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম অনেক বেশি। প্রিমিয়াম কমাতে হবে। এজন্য নিজেরা বসে যৌক্তিক প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবেন। যাতে আমরা সবাইকে জীবন বীমার আওতায় আনতে পারি।’
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে মেরিন ইন্স্যুরেন্স (নৌ-বিমা) ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে ফায়ার ইন্স্যুরেন্স (অগ্নি-বীমা) আরো গতিশীল করতে হবে। লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে অনেক দূর নিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে ১২ লাখ বীমা পরিবার রয়েছে। এ খাতে আস্থা বাড়াতে আমরা কাজ করছি।
‘এ খাতের প্রথম ও প্রধান সমস্যা হচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) স্থায়ী জনবল নেই। বর্তমানে যারা কাজ করছেন তাদের স্থায়ী করে জনবল বৃদ্ধি করতে হবে। তৃতীয়পক্ষ বীমা আইন বাতিল করায় এখন বীমা ছাড়াই গাড়ি রাস্তায় চলছে। গাড়িগুলোকে বীমার আওতায় আনারও আহ্বান জানান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, গত ১০ বছরে বীমা খাতের প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১২৬.৬০ শতাংশ। বীমা দাবি পরিশোধের হার বেড়েছে ৫৩ শতাংশ আর গ্রাহক বেড়েছে ৫১ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে ৫০ হাজার শিক্ষার্থীকে বীমা সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে চার শিক্ষার্থীর হাতে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’র সনদ তুলে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন- আফিয়া ফাহমিদা প্রভাতি, রাইয়ান মোস্তফা রাহাত, ইশরাত জাহান ইকমা ও কাওছার হাসান ভূঁইয়া। শিক্ষার্থীদের হাতে অর্থমন্ত্রী বীমা সনদ তুলে দেন।