পাকিস্তানে ধর্মীয় উগ্রবাদের কারণে দেশটিতে জঙ্গী হামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও ব্যাপকহারে অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটি ধর্মীয় উগ্রবাদে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পীস স্টাডিজের নির্বাহি পরিচালক মোহাম্মদ আমির রানা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় এ লিখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দেশকে একজোট করতে সাধারন মানুষের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস আরো শক্তিশালী করার উদ্যেগ নিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। তবে এ পদক্ষেপের উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। সবার মধ্যে অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়ছে এবং জঙ্গীবাদের ক্রমবর্ধমান পুনরুত্থানের পথ খোলে যাচ্ছে। আমির আরো বলেন, ‘দূর্ভাগ্যবশত উন্নত নৈতিকতা এবং ন্যায়পরায়নতার পরিবর্তে সংঘর্ষ, অসহিষ্ণুতা এবং ঘৃনা ছড়িয়ে পড়ছে। ধার্মিকতা এখন পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নির্ধারন শুরু করেছে।’ সম্প্রতি পাকিস্তান জঙ্গী হামলা খুব বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।
গত সপ্তাহেই একসঙ্গে ভ্রমনরত চারটি কারিগরী স্কুলের ইনস্ট্রাকটরকে একটি সীমান্ত অঞ্চলে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই চারজনই নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। এছাড়া নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাইকেও টুইটারে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়াও বিগত কয়েক সপ্তাহে জঙ্গী আস্তানায় আক্রমনের সময় কমপক্ষে একডজন সামরিক ও আধাসামরিক ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড কোঅপারেশনের নিরাপত্তা বিষয়ক বিশ্লেষক এবং গবেষক আসফান্দেয়ার মির বলেন, বিচ্ছিন্ন জঙ্গীবাদের পুনরুত্থান পাকিস্তানের জন্য খুব বিপদজনক খবর। তেহরিক-ই-তালেবানে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গীদলের একত্র হওয়া দলটিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সাধারন নির্বাচনের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসেন ক্রিকেট স্টার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান। অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতায় আরোহনের ক্ষেত্রে কট্টরপন্থী ধর্মীয় দলগুলোর সহযোগিতা পেয়েছেন। এসব দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তেহরিক-ই-লাব্বাইক। দলটির একক এজেন্ডা হচ্ছে দেশের অতি বিতর্কিত ব্লাসফেমি আইনের প্রয়োগ ও প্রচার। ইসলামের অবমাননাকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়াই এই আইনের লক্ষ্য। প্রায়সময়ই শিয়া মুসলিমদের মতো সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হয়।
সূত্র: এপি নিউজ